শনিবার, ১৯ মার্চ, ২০১৬ ০০:০০ টা
কৃষি সংবাদ

তামাকের দখলে পাহাড়ের ফসলি জমি

ফাতেমা জান্নাত মুমু, রাঙামাটি

তামাকের দখলে পাহাড়ের ফসলি জমি

রাঙামাটির প্রত্যন্ত পাহাড়ি অঞ্চলের বেশির ভাগ ফসলি জমি এখন তামাকের দখলে। তামাক চাষের কারণে মারাত্মক হুমকির মুখে পড়েছে কৃষি জমি। একটা সময় বাঘাইছড়ি উপজেলায় যেসব জমিতে শীতের সবজি, ধান, তরমুজ, আলু, গম ও ভুট্টার আবাদ হতো, সেখানে এখন তামাক গাছে ভরপুর। মাঠজুড়ে এখন শুধু তামাক গাছের সবুজের অরণ্য। ক্রমান্বয়ে বিলীন হচ্ছে সবজি চাষ। সংরক্ষিত বনাঞ্চলের ভেতর, নদীর পাড় ও খালি ফসলি জমি এখন তামাকের আগ্রাসনে। তামাক চাষ গ্রাস করে নিচ্ছে কৃষকের খাদ্য ব্যাংক। রাঙামাটির বাঘাইছড়ি উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অফিসের তথ্য সূত্র জানায়, বর্তমানে বাঘাইছড়ি উপজেলায় ১৯০ একর জমিনে তামাক চাষ হয়েছে। বিশেষ করে বাঘাইছড়ি উপজেলার চারটি ইউনিয়ন— রূপকারি, পৌরসভা, ম্যারিশা ও বাঘাইছড়িতে বেশি তামাক চাষ বেড়েছে। এ ছাড়া উপজেলা সদর, মাস্টারপাড়া, মাদ্রাসাপাড়া, বটতলী, উলুছড়ি, লাল্যাঘোনা ছড়া, তুলাবান, শিলকাটা ছড়া, ঢেবাছড়ি, দুরছড়ি, খেদারমারা, পাবলাখালী, মগবান, করেঙ্গাতলী, বাঘাইহাট, শিজক, কচুছড়ি, মোরঘোনাছড়া, সারোয়াতলী মহিষপয্যা, খাগড়াছড়ি, আমতলী ও মাহিল্যা এলাকার অধিকাংশ কৃষক পুরোদমে তামাক চাষ শুরু করেছে। পাহাড়ি জমিতে ক্ষতিকারক তামাক চাষ বেড়ে যাওয়ায় আগের তুলনায় দশগুণ খাদ্য শস্য উত্পাদন কমেছে। তাই খাদ্য সংকট প্রকট হয়ে উঠছে।

স্থানীয় তামাক চাষি রহম উল্লাহ জানান, প্রতি বছর বিভিন্ন কোম্পানি কৃষকদের বেশি টাকার প্রলোভন দেখিয়ে তামাক চাষে আগ্রহী করে তুলেছে। তামাক চাষের জন্য চাষিদের অর্থ, বীজ, সার ও কীটনাশক সরবরাহ করে এসব কোম্পানি। তা ছাড়া তামাক কিনে নেওয়ার নিশ্চয়তা দেওয়ায় অধিক লাভের কারণে নিষিদ্ধ তামাক চাষের দিকে ঝুঁকছে হাজার হাজার কৃষক।

বাঘাইছড়ি উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আল ইমরান জানান, বাঘাইছড়ি উপজেলায় আশঙ্কাজনকভাবে তামাক চাষ হচ্ছে। সামনে আরও বাড়তে পারে। যার ফলে সবজি চাষ কমে আসছে। বেশি লাভের আশায় কৃষকরা তামাক চাষে আগ্রহ প্রকাশ করছে। তবে কৃষকদের তামাক চাষে নিরুৎসাহিত করার জন্য কৃষি বিভাগ কাজ করে যাচ্ছে। তামাক চাষের কারণে মাটির উর্বরা শক্তি যেমন হ্রাস পাচ্ছে, তেমনি বিপর্যয়ের মুখে পড়ছে পরিবেশও।

সর্বশেষ খবর