সোমবার, ২১ মার্চ, ২০১৬ ০০:০০ টা

ক্ষমতাসীনরা ব্যস্ত প্রশাসন ম্যানেজে

বরিশাল

রাহাত খান, বরিশাল

আনুষ্ঠানিকভাবে নির্বাচনী প্রচারের শেষ দিন অর্থাৎ গতকাল অনেকটা খোশ মেজাজে ছিলেন ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের প্রার্থীরা। ভোটারদের মন গলানোর চেয়ে স্থানীয় প্রশাসন ও পুলিশের সঙ্গে সমঝোতায় ব্যস্ত ছিলেন তারা। পক্ষান্তরে আওয়ামী লীগ বিদ্রোহী, স্বতন্ত্র, জাতীয় পার্টি ও বিএনপির চেয়ারম্যান প্রার্থীরা শেষ দিনটি পার করেছেন গণসংযোগ করে। তবে পুলিশের একপেষে আচরণে ক্ষুব্ধ সরকারবিরোধী প্রার্থীরা। তাদের বক্তব্য, সুষ্ঠু ভোট হলে যোগ্য প্রার্থীকে  চেয়ারম্যান নির্বাচিত করতে পারবেন জনগণ। এজন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে নিরপেক্ষভাবে দায়িত্ব পালনের দাবি জানিয়েছেন তারা। বরিশাল নগরীর উপকণ্ঠ রায়পাশা-কড়াপুর ইউনিয়ন। গতকাল বেলা ১১টায় এই ইউনিয়নের পপুলার বাজারে গিয়ে দেখা যায় বিএনপির প্রার্থী মো. নুরুল আমীনকে। হাতে প্লাস্টিকের ধানের শীষ নিয়ে রুক্ষ মেজাজে কয়েকজন কর্মীসহ চায়ের দোকানের সামনে দাঁড়িয়ে আছেন। পাশেই বিমান বন্দর থানার তিনজন টহল পুলিশ। নির্বাচনী পরিবেশ কেমন জানতে চাইলে নুরুল আমীন বলেন, ‘দ্যাখেন ভাই, পুলিশ আমাকে ও আমার কর্মীদের দোকানে চা খেতে দিচ্ছে না। বলছে, বাসায় গিয়ে গৃহকর্ত্রীর হাতের চা খেতে।’ এলাকায় ধানের শীষের পোস্টার নেই কেন-এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, সব জায়গায় পোস্টার ছিল। কিন্তু রাতের আঁধারে সব পোস্টার ছিড়ে ফেলা হয়েছে তার ভোটারদের ভয় দেখানোর জন্য। চেয়ারম্যান প্রার্থীকে দোকানে চা খেতে বাঁধা দেওয়ার কারণ জানতে চাইলে ওই স্থানে দায়িত্বরত বিমানবন্দর থানার এএসআই জসিম জানান, পাঁচজনের অধিক একসঙ্গে চলাচল এবং নির্বাচনী প্রচারণা চালাতে পারবে না। বোঝেন-ই তো উপরের চাপ আছে। এর বেশি কিছু বলতে চাননি তিনি। বেলা সাড়ে ১১টায় ওই ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের চেয়ারম্যান প্রার্থী হাবিবুর রহমান খোকনের মুঠোফোনে রিং দিলে তার কর্মী পরিচয়ে একজন অপরপ্রান্ত থেকে বলেন, খোকন ভাই বাসায় গোসল করছেন। গোসলের পর কোথায় যাবেন, তার কর্মসূচি কি জানতে চাইলে ওই ব্যক্তি বলেন, ভাই প্রশাসনের সঙ্গে দেখা করবেন। বিকালে ফের রিং দিলে খোকন বলেন, সকালে তার ইউনিয়নের উত্তরাঞ্চলে গণসংযোগ চালিয়েছেন। বিকালে করেছেন অফিশিয়াল কাজ। এই ইউনিয়নে জাতীয় পার্টির প্রার্থী মোস্তফা কামাল এবং ইসলামী আন্দোলনের প্রার্থী মো. সাগর মিয়া কর্মী সমর্থকদের নিয়ে শেষ বারের মতো ভোট প্রার্থনা করেছেন। তারা দুজনই আশা করছেন সুষ্ঠু ভোটের। এই ইউনিয়নের অনেক ভোটারের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, সবাই সুষ্ঠু ভোটের জন্য মুখিয়ে আছেন। তবে কেন্দ্রে হানাহানি কিংবা ব্যালট কেড়ে নেওয়ার মতো ঘটনা ঘটলে কেন্দ্রে না যাওয়ার কথা বলেছেন তারা। বরিশালের সিনিয়র জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা আবদুল হালিম খান বলেন, গতকাল বিকালে পুলিশ লাইনসে পুলিশ-আনসার ডেপ্লয়েড বিফ্রিং ছিল। এতে প্রশাসন, নির্বাচন কমিশন, পুলিশ, বিজিবি, র‌্যাব এবং কোস্টগার্ডের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। বিফ্রিংয়ে নির্বাচন কমিশনের পক্ষে তিনি বলেছেন, প্রশাসনকে কাজ করতে হবে নিরপেক্ষভাবে। এর ব্যত্যয় হলে নির্বাচন কমিশনের শাস্তিমূলক ব্যবস্থার মুখোমুখি হতে হবে।

সর্বশেষ খবর