সোমবার, ২১ মার্চ, ২০১৬ ০০:০০ টা

দুই বাস চাপা দিয়ে মারল প্রাইভেটকারের তিন আরোহীকে

নিজস্ব প্রতিবেদক

দুই বাস চাপা দিয়ে মারল প্রাইভেটকারের তিন আরোহীকে

রাজধানীর খিলক্ষেতে প্রাইভেটকারকে চাপা দিয়ে রাস্তার পাশে উল্টে পড়ে বেপরোয়া গতির যাত্রীবাহী এই বাসটি —বাংলাদেশ প্রতিদিন

রাজধানীর খিলক্ষেতে সড়ক দুর্ঘটনায় একই পরিবারের তিনজনের মর্মান্তিক মৃত্যু হয়েছে। বেপরোয়া গতির দুটি বাসের চাপায় মারা যান প্রাইভেটকারের এই তিন আরোহী। নিহতরা হলেন— দেলোয়ার হোসেন (৬৮), মোছা. মিলন ইসলাম (৪৫) ও লাভলী আক্তার (২৭)। প্রাইভেটকারটির চালক গুরুতর আহত সবুর মিয়াকে কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। গতকাল বিকাল ৪টার দিকে খিলক্ষেত বাসস্ট্যান্ডের কাছে এ দুর্ঘটনা ঘটে। নিহত দেলোয়ার হোসেন ও মিলন ইসলাম ভাইবোন। নিহত লাভলীর মা হলেন মিলন ইসলাম। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ময়মনসিংহ থেকে ছেড়ে আসা এনা পরিবহনের যাত্রীবাহী বাসটি (ঢাকা মেট্রো-ব-১৪-৫৯৪২) বেপরোয়া গতিতে ওভারটেক করতে গিয়ে প্রাইভেটকারটিকে (ঢাকা মেট্রো-গ-১৪-৯৮০৭) চাপা দেয়। এ সময় প্রাইভেটকারটির বাম পাশে থাকা মোহাম্মদপুরের শিয়া মসজিদ মোড় থেকে আবদুল্লাহপুর রুটে চলাচল করা তেঁতুলিয়া পরিবহনের বাসটিও (ঢাকা মেট্রো-ব-১১-৮২৩৯) ওই কারটিকে চাপা দেয়। একপর্যায়ে বিকট শব্দে দুটি বাসের চাপায় দুমড়ে-মুচড়ে যায় প্রাইভেটকারটি। তবুও ঘাতক বাসগুলোর চালকরা বাসগুলোকে থামানোর চেষ্টা করেননি। ঘটনাস্থলের পাশেই কর্তব্যরত পুলিশ এসে বাস দুটিকে জব্দ করে থানায় নিয়ে যায়। তবে এর আগেই বাস চালক এবং হেলপার-সুপারভাইজাররা পালিয়ে যান। আশপাশের লোকজন ঘটনাস্থলে ছুটে গিয়ে গুরুতর অবস্থায় চারজনকে উদ্ধার করে কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তিনজনকে মৃত ঘোষণা করেন। আশঙ্কাজনক অবস্থায় প্রাইভেটকার চালক সবুর মিয়াকে আইসিইউতে রেখে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী বাদাম বিক্রেতা মতি মিয়া বলেন, ‘এমন দৃশ্য আমি আমার জীবনে দেখিনি। প্রাইভেটকার থাইক্যা মানুষরা চিল্লাইয়াও দুইট্যা বাসরে থামাইত্যা পারে নাই। বাস থাইম্যা গেলে এমন ঘটনা ঘটত না।’ ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা যায়, দুমড়ে-মুচড়ে পড়ে আছে ওই প্রাইভেটকারটি। কারটির ভিতর ও পিচ ঢালা পথে লেগে আছে ছোপ ছোপ রক্ত। অনেক প্রত্যক্ষদর্শী বাকরুদ্ধ হয়ে পড়েছেন। নিহত দেলোয়ার হোসেনের ছেলে ফরহাদ হোসেন বলেন, তার বাবা ওপেন হার্ট সার্জারির পর জয়দেবপুরে তার ফুফু নিহত মিলন ইসলামের বাসায় উঠেছিলেন। গতকাল বিকাল ৫টায় শ্যামলীর পপুলার ডায়াগনস্টিক সেন্টারে তার চিকিৎসকের অ্যাপয়েন্টমেন্ট ছিল। ওই উদ্দেশেই তারা শ্যামলীতে যাচ্ছিলেন। ঢাকা মহানগর পুলিশের ক্যান্টনমেন্ট জোনের জ্যেষ্ঠ সহকারী পুলিশ কমিশনার কুদরত-ই-খুদা বলেন, এনা পরিবহনের বাসগুলো বেপরোয়া গতিতে চলাচল করে এমন অনেক অভিযোগ রয়েছে। বেপরোয়া গতিতে চলাচলের জন্যই এমন ঘটনা ঘটেছে। তবে বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

সর্বশেষ খবর