হযরত শাহজালাল (রহ.) আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের নিরাপত্তা উন্নয়নে দুই বছরের জন্য নিয়োগ পেল যুক্তরাজ্যের রেডলাইন এভিয়েশন সিকিউরিটি লিমিটেড। গতকাল সচিবালয়ে সরকারি ক্রয়-সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠকে ব্রিটিশ এই কোম্পানিকে সরাসরি ক্রয় পদ্ধতিতে পরামর্শক প্রতিষ্ঠান হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়। এর আগে নিয়োগ প্রস্তাবটি অর্থনৈতিক বিষয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি অনুমোদন দেয়। আজ কোম্পানির সঙ্গে চুক্তি স্বাক্ষরের পরই তাদের কার্যক্রম শুরু হওয়ার কথা রয়েছে। ব্রিটিশ এই কোম্পানিকে দুই বছরের জন্য পরিশোধ করতে হবে ৭৩ কোটি ২৫ লাখ ৭৯ হাজার টাকা। ঢাকা থেকে যুক্তরাজ্যে কার্গো ফ্লাইট সরাসরি নিষিদ্ধের পর ওই দেশের প্রস্তাবের পরিপ্রেক্ষিতেই ব্রিটিশ কোম্পানি রেডলাইন এভিয়েশন সিকিউরিটি লিমিটেডকে এ কাজ দেওয়া হলো। ব্রিটিশ কোম্পানির এই নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্নের পর বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ সাংবাদিকদের বলেন, ‘সোমবার (আজ) থেকেই তাদের কার্যক্রম শুরু হবে। অনেক লোক এখানে কাজ করবে। ৩৯ জন তাদের দেশ থেকে আসবে। আর এর মধ্য দিয়ে শাহজালাল বিমানবন্দরের কার্গো সংকট কেটে যাবে বলেও আশা করা যায়।’ তিনি বলেন, ‘যে সংকট দেখা দিয়েছিল তা নিরসন হলো। আমরা মনে করি, শিগগিরই বিধিনিষেধ প্রত্যাহার হবে এবং রপ্তানি আবার আমরা শুরু করতে পারব।’ নিরাপত্তাব্যবস্থা নিয়ে অসন্তোষ নিয়ে ৮ মার্চ ঢাকা থেকে সরাসরি কার্গো ফ্লাইট চলাচল বন্ধ করে দেয় যুক্তরাজ্য। বাণিজ্যিক ক্ষতির মুখে পড়ে এ সমস্যা সমাধানে উদ্যোগী হয় সরকার। এরপর যুক্তরাজ্যের পরামর্শ নিয়ে নিরাপত্তাব্যবস্থার উন্নয়নের সিদ্ধান্ত হয়। নিরাপত্তাব্যবস্থার উন্নয়নে এই নিয়োগ প্রক্রিয়া দ্রুত সম্পন্ন করতে গতকাল অর্থনৈতিক বিষয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি ও সরকারি ক্রয়-সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠক ডাকা হয়। সাধারণত প্রতি সপ্তাহের বুধবার এ সভা হলেও এবার রবিবার তড়িঘড়ি এই মন্ত্রিসভা কমিটির সভা করল সরকার। এ বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘তড়িঘড়ি সভা করতে আইনে কোনো বাধা নেই।’ জানা গেছে, শাহজালালের নিরাপত্তা উন্নয়নে ব্রিটিশ কোম্পানির নিয়োগ প্রস্তাবটি প্রথমে অর্থনৈতিক বিষয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি অনুমোদন দেয়। পরে সরকারি ক্রয়-সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি তা চূড়ান্ত অনুমোদন করে। অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত উভয় কমিটির সভাপতি হলেও গতকালের বৈঠকে তিনি উপস্থিত ছিলেন না। অর্থমন্ত্রীর অনুপস্থিতিতে শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমুর এসব সভায় সভাপতিত্ব করার কথা থাকলেও তিনিও এদিন ছিলেন না। তাই বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ এই মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন।মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠকের আগে সকালে সরাসরি কার্গোতে পণ্য পরিবহনে যুক্তরাজ্য আরোপিত অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারে গঠিত স্টিয়ারিং কমিটির দ্বিতীয় সভা হয় বিমান পরিবহন মন্ত্রণালয়ে। এতে মন্ত্রী রাশেদ খান মেনন সভাপতিত্ব করেন। ওই বৈঠকের পর তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ‘রেডলাইন এভিয়েশন সিকিউরিটিকে আমরা আমাদের কনসালটেন্সি ও সেবা দেওয়ার জন্য নিয়োগ করতে যাচ্ছি।’ বিমানবন্দরের পুরো নিরাপত্তা তারা দেখবে কি না—জানতে চাইলে মেনন বলেন, ‘না, না, না। সিকিউরিটি দেখবে আমাদের লোকজন। তারা সুপারভাইজরির কাজ করবে। কনসালটেন্সি দেবে, জনবল ট্রেইন করবে।’
