রবিবার, ১০ এপ্রিল, ২০১৬ ০০:০০ টা
রিজার্ভ হ্যাক

অগ্রগতি নেই অর্থ উদ্ধারে

আলী রিয়াজ

রিজার্ভ হ্যাক হওয়া অর্থ উদ্ধারে কোনো অগ্রগতি নেই। বাংলাদেশ ব্যাংক ও পুলিশ কর্মকর্তারা ফিলিপাইন গেলেও পাচার হওয়া অর্থ উদ্ধারে এখনো কিছু করতে পারেননি। আংশিক উদ্ধার হওয়া অর্থও ফেরত আনার বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। ফিলিপাইনের অ্যান্টি মানি লন্ডারিং কাউন্সিল (এএমএলসি) বাংলাদেশকে অর্থ ফেরতের জন্য আদালতের অনুমোদন চেয়েছে। তবে আদালত কোনো সিদ্ধান্ত দেননি। বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃপক্ষ বলছে, যে প্রক্রিয়ায় অর্থ গেছে সে প্রক্রিয়ায় আসবে। কিন্তু ব্যাংকিং চ্যানেলের বাইরে চলে যাওয়া অর্থ ফের বাংলাদেশ ব্যাংকের আন্তর্জাতিক কোনো প্রতিষ্ঠানের অ্যাকাউন্টে কী হিসেবে জমা করা হবে সেটি নিয়ে আইনগত সংকট রয়েছে। বাংলাদেশ চাইছে যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল ব্যাংকের অ্যাকাউন্টে পুনরায় অর্থ জমা দিক ফিলিপাইন। জানা গেছে, রিজার্ভ হ্যাকের অর্থ উদ্ধারে ব্যাংকিং সহযোগিতা দিতে বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তারা গত সপ্তাহে ফিলিপাইন যান। সেখানে গিয়ে দেশটির সিনেট কমিটির শুনানিতেও অংশ নেন তারা। বাংলাদেশের প্রতিনিধি পর্যবেক্ষক হিসেবেই মূলত শুনানিতে তারা অংশ নিয়েছেন। ওই শুনানিতে হ্যাকিংয়ের সঙ্গে জড়িত কিম অং প্রায় ১০ মিলিয়ন ডলার ফেরত দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেন। তিনি এক মাসের মধ্যে অর্থ ফেরতে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। ওই অর্থ উদ্ধার করার পর সব মিলিয়ে পাওয়া যাবে ১২ মিলিয়ন ডলার। আরও ২২ মিলিয়ন ডলার উদ্ধারের আশা করা হচ্ছে। তবে এর বাইরে ৪৭ মিলিয়ন ডলার অর্থ উদ্ধারে কোনো পদক্ষেপ এখনো দেখা যায়নি। ফিলিপাইন কর্তৃপক্ষ এখন পর্যন্ত হংকংয়ে পাচার হওয়া অর্থের বিষয়ে কোনো অগ্রগতি দেখাতে পারেনি। এদিকে আইনগত জটিলতার কারণে আংশিক উদ্ধার হওয়া অর্থ পায়নি বাংলাদেশ। ফিলিপাইনের এএমএলসি আদালতের অনুমতি চাইলেও এখনো তা পাওয়া যায়নি। ফলে হ্যাক হওয়া অর্থ উদ্ধারের বিষয়ে বাংলাদেশ কিছুই করতে পারছে না। এখন উদ্ধার হওয়া বা ফেরত পাওয়া পুরো বিষয়টি নির্ভর করছে ফিলিপাইন কর্মকর্তাদের ওপর।  কীভাবে রিজার্ভ হ্যাক হয়েছে এবং বাংলাদেশের কেউ জড়িত কি না তা গুরুত্ব দিয়ে তদন্ত করছে বাংলাদেশে গঠিত কমিটি। সিআইডির প্রতিনিধিরাও ফিলিপাইনে গিয়ে সে দেশের তদন্ত কমিটির সঙ্গে কথা বলেছেন। তবে তারাও অর্থ উদ্ধারের বিষয়ে কিছু করতে পারেননি। এদিকে বাংলাদেশ কর্তৃপক্ষ চাইছে, যেভাবে অর্থ গেছে সেভাবেই ফেরত আনতে। ফিলিপাইন কর্তৃপক্ষ ফেডারেল ব্যাংকে থাকা বাংলাদেশ ব্যাংকের অ্যাকাউন্টে জমা দিক। জানতে চাইলে বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক শুভঙ্কর সাহা বলেন, ‘ফিলিপাইন কেন্দ্রীয় ব্যাংক আমাদের সহযোগিতা করছে। তাদের সঙ্গে সমঝোতাও আছে। চুরি হওয়া অর্থের আংশিক উদ্ধার করা হয়েছে। ফিলিপাইন এএমএলসি কর্তৃপক্ষ বাকি অর্থ উদ্ধার করার চেষ্টা করছে।’ তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ এই অর্থ কীভাবে পাবে তা নিশ্চিত নই। তবে যেভাবে অর্থ গেছে সেভাবেই আসবে। বাংলাদেশের ব্যাংক অ্যাকাউন্টে জমা দিলেও আমরা পেয়ে যাব। বিষয়টির সিদ্ধান্ত নেবে ফিলিপাইন কর্তৃপক্ষ।’

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর