সোমবার, ১১ এপ্রিল, ২০১৬ ০০:০০ টা

দাবদাহে পুড়ছে দেশ

নিজস্ব প্রতিবেদক

দাবদাহে পুড়ছে দেশ

গরমে অতিষ্ঠ দেশ। একটু প্রশান্তির খোঁজে আইসক্রিমে চুমুক মিরপুর চিড়িয়াখানার বানরের —রোহেত রাজীব

প্রচণ্ড দাবদাহে পুড়ছে দেশ। প্রতিদিনই বাড়ছে খরতাপ। বিশেষ করে গত কয়েকদিন ধরে রাজশাহী, পাবনা, বগুড়া, দিনাজপুর, ফরিদপুর ও গোপালগঞ্জ অঞ্চলসহ খুলনা বিভাগে মৃদু থেকে মাঝারি ধরনের তাপপ্রবাহ বইছে। গতকাল চুয়াডাঙায় দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আর ঢাকায় ছিল ৩৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আবহাওয়াবিদরা বলছেন, বাতাসে জলীয়বাষ্পের পরিমাণ বেড়ে যাওয়ায় বেড়েছে সূর্যের তাপ। আগামী কয়েকদিনে এই তাপমাত্রা আরও বাড়তে পারে। এর মধ্যে বৃষ্টির সম্ভাবনাও দেখছেন না তারা। রাজধানীতে গতকাল প্রচণ্ড গরমে রাস্তাঘাটে হাপিত্যাশ করতে দেখা যায় মানুষকে। গরমে একটুতেই ক্লান্ত হয়ে পড়ছেন সবাই। ব্যাহত হচ্ছে স্বাভাবিক জীবনযাত্রা। তারপরও প্রখর রোদ উপেক্ষা করে চলাচল করছেন পথচারীরা। অস্বাভাবিক গরমে পরিবহনগুলোর ভেতরের তপ্ত পরিবেশে অস্থির হয়ে উঠছেন যাত্রীরা। গতকালও দেখা গেছে প্রখর দাবদাহে বুড়িগঙ্গার ময়লা পানিতে গোসল করছে শিশুরা। ঢাকার বাইরেও খাঁ খাঁ করছে দেশের মাঠ-প্রান্তর। খাল-বিল, নদী-নালা ও জলাশয় পানিশূন্য হয়ে পড়ছে। ঘরে-বাইরে সবখানেই বিরাজ করে অস্বস্তিকর পরিস্থিতি। পশু-পাখিরাও একটু শীতলতার জন্য এদিক-সেদিক পানির খোঁজ করছে। গরম বাড়ার সঙ্গে প্রতিদিনই বাড়ছে হিটস্ট্রোক, ডায়রিয়া, নিউমোনিয়া, সর্দি-কাশিসহ নানা মৌসুমি জ্বরে আক্রান্তের সংখ্যা। আবহাওয়া অফিস সূত্রে জানা যায়, গত কয়েক বছরের তুলনায় এবার এ সময়ে তাপমাত্রা বেশি। গত বছর ১৯ এপ্রিল সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল রাজশাহীতে ৩৬ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আর এবার রাঙামাটিতে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৩৯ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। গত বছর এ সময় ঢাকার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৩৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এবার ৩৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। চলতি এপ্রিল মাসের দীর্ঘমেয়াদি পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, এ মাসে বঙ্গোপসাগরে এক থেকে দুটি নিম্নচাপ সৃষ্টি হতে পারে। এর মধ্যে একটি ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিতে পারে। চলতি মাসে দেশে নদ-নদীর প্রবাহ স্বাভাবিক থাকবে। তবে দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলে পাহাড়ি ঢলের কারণে আকস্মিক বন্যা হতে পারে। দেশের উত্তর ও উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে একটি তীব্র তাপপ্রবাহ (৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের বেশি) এবং অন্যত্র এক থেকে দুটি মৃদু (৩৬ থেকে ৩৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস) বা মাঝারি (৩৮ এর চেয়ে বেশি ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস) তাপপ্রবাহ বয়ে যেতে পারে। প্রচণ্ড গরমে গতকাল রাস্তাঘাটেও মানুষকে হাপিত্যাশ করতে দেখা যায়। এদিকে বৈশাখের এই দাবদাহে জর্জরিত মানুষের কাছে বেড়েছে ঠাণ্ডা পানীয়ের চাহিদা। ফলে রাস্তার পাশে ফুটপাথে বিক্রি করা লেবুর শরবত, কাটা ফলমূল খাচ্ছেন মানুষ। রাজধানীর মোড়ে মোড়ে দেখা যাচ্ছে এসব শরবতের দোকান। তবে খোলা এসব খাবার খেয়ে ডায়রিয়াসহ নানা রোগেও আক্রান্ত হচ্ছেন অনেকে। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গরমের সঙ্গে সঙ্গে রাজধানীসহ সারা দেশে শুরু হচ্ছে বিদ্যুতের লোডশেডিং। রাজধানীর মিরপুর, লালমাটিয়া, মালিবাগসহ কয়েকটি এলাকায় দিনে-রাতে চার থেকে পাঁচবার লোডশেডিং হয়েছে।   

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর