বৃহস্পতিবার, ২১ এপ্রিল, ২০১৬ ০০:০০ টা

নওগাঁর ছয় নদী ধু-ধু বালুচর

বাবুল আখতার রানা, নওগাঁ

নওগাঁর ছয় নদী ধু-ধু বালুচর

নওগাঁর ছয় নদ-নদী এখন পানিশূন্য ধু-ধু বালুচর। নদ-নদীর এ দশায় মারাত্মক প্রভাব পড়ছে কৃষি, মত্স্য, বৃক্ষরাজিসহ সাধারণ মানুষের নিত্যদিনের গৃহস্থালি কাজকর্মে। এ করুণ অবস্থায় এলাকাবাসী দারুণভাবে হতাশাগ্রস্ত।

জেলার এ ছয়টি নদ-নদী হলো বদলগাছী-নওগাঁ সদর-রানীনগর উপজেলার ওপর দিয়ে প্রবাহিত ছোট যমুনা, পত্নীতলা-মহাদেবপুর-মান্দা-আত্রাই উপজেলার ওপর দিয়ে প্রবাহিত আত্রাই, সাপাহার-পোরশা উপজেলার ওপর দিয়ে প্রবাহিত আত্রাই, সাপাহার-পোরশা উপজেলার ওপর দিয়ে প্রবাহিত পুনর্ভবা, নিয়ামতপুর-মান্দা উপজেলার ওপর দিয়ে প্রবাহিত শিব, নওগাঁ সদর-রানীনগর উপজেলার ওপর দিয়ে প্রবাহিত তুলসীগঙ্গা এবং রানীনগর-আত্রাই উপজেলার ওপর দিয়ে প্রবাহিত নাগর। পানির বদলে বালুবোঝাই এসব নদ-নদীর কোথাও কোথাও অবশ্য এক চিলতে করে পানির দেখা এখনো মেলে। ভবিষ্যতে হয়তো এটুকুও দেখা যাবে না। নদ-নদীগুলোর এ অবস্থা সম্পর্কে নওগাঁ সরকারি ডিগ্রি কলেজের ভূগোল বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক শরিফুল ইসলাম বলেন, একসময় এ নদ-নদীগুলোয় খরা মৌসুমেই পালতোলা নৌকা চলত, স্রোত প্রবাহিত হতো। প্রচুর মাছ পাওয়া যেত। নদ-নদীর পানি দিয়েই দুই পাশের হাজার হাজার একর জমিতে চাষাবাদ করা হতো। বাংলাদেশের অধিকাংশ নদ-নদীর মতো এ নদ-নদীগুলোও ভারতের ভিতর দিয়ে প্রবাহিত। ফলে ভারতের বিভিন্ন জায়গায় নদ-নদীর মধ্যে বাঁধ দিয়ে পানির গতি রোধ করা হয়েছে। তাই খরার সময় নদ-নদীগুলো মরা খালে পরিণত হয়। এ কারণে নদ-নদীর বুকের অনেক জায়গায় বিভিন্ন সবজিসহ ফসল চাষাবাদ হচ্ছে। নওগাঁ নদী রক্ষা কমিটির সভাপতি হাসান জামান সিদ্দিকী বলেন, প্রতিবেশী দেশের পানি আগ্রাসনের ফলেই একসময়ের খরস্রোতা নদ-নদীগুলোর এ দশা। একসময় এভাবেই হয়তো মানচিত্র থেকে হারিয়ে যাবে সব নদ-নদী। জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপপরিচালক সত্যব্রত সাহা বলেন, নদ-নদীগুলোয় সার্বক্ষণিকভাবে পানি সংরক্ষণের ব্যবস্থা করলে দুই পাশের হাজার হাজার হেক্টর জমিতে অল্প খরচে বোরো ধান চাষ এবং রবিশস্যসহ বিভিন্ন জাতের শাক-সবজির চাষাবাদ করা সম্ভব হতো। এতে কৃষক লাভবান হতেন। নওগাঁ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আনোয়ার হোসেন বলেন, পুনর্ভবা নদী সীমান্তসংলগ্ন হওয়ায় ভারত এ নদী পুনঃখননে নানাবিধ প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করতে পারে। তবে জয়েন্ট রিভার কমিশনের বৈঠকের পর জরুরি ভিত্তিতে যমুনা নদী খননের সময় জেলার সবচেয়ে বড় আত্রাই নদীও খনন করা হবে।

সর্বশেষ খবর