কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া কলেজের ছাত্রী ও নাট্যকর্মী সোহাগী জাহান তনু (২১) হত্যা মামলায় তার চাচা-চাচিসহ চারজনকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে সিআইডি। গতকাল দুপুরে সিআইডি কুমিল্লা কার্যালয়ে তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। যাদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে তারা হচ্ছেন চাচা আলাল হোসেন, চাচি সাজেদা বেগম, মুরাদনগর উপজেলার কোদালকাটা গ্রামের ইউপি সদস্য নজরুল ইসলাম ও তনুকে উত্ত্যক্তে অভিযুক্ত সেনানিবাস এলাকার বাসিন্দা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী পিয়ারের বন্ধু জিদনি। এদিকে সিআইডি ঢাকার বিশেষ পুলিশ সুপার তনু হত্যা মামলার তদন্ত সহায়ক কমিটির প্রধান আবদুল কাহ্হার আকন্দ গতকাল সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমরা অনেককে জিজ্ঞাসাবাদ করেছি। তথ্যগুলো যাচাই-বাছাই করছি। আশা করছি এ নিয়ে দ্রুত একটা সমাধানে আসতে পারব। ফলাফল পেলে বিস্তারিত জানানো হবে।’ তনুর পরিবারকে কেন বারবার জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে, এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘তনুর পরিবার ক্ষতিগ্রস্ত পরিবার। তদন্তে তথ্যের জন্য তাদের সঙ্গে বারবার কথা বলছি।’ সিআইডির কুমিল্লা অঞ্চলের বিশেষ পুলিশ সুপার ড. নাজমুল করিম খান সেনানিবাসের ভিতর হত্যার স্থানকে ইঙ্গিত করে বলেন, সেখানে ৫০ কেজি ওজনের একটি ডিনামাইট রাখা যত সহজ, একটি ৫০ কেজি ওজনের লাশ ফেলা তত সহজ নয়। কেউ খুন করে লাশ নিশ্চয় থানার ভিতর ফেলে আসবে না। তদন্তে সব পক্ষের সহযোগিতা পাচ্ছেন বলে তিনি দাবি করেন। মঙ্গলবার প্রথম ময়নাতদন্তকারী চিকিৎসক শারমিন সুলতানাকে কী জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে, জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘তনুর ময়নাতদন্তের সময় তিনি কী কী দেখতে পেয়েছেন তা জানতে চেয়েছি।’ জিজ্ঞাসাবাদের বিষয়ে তনুর চাচা আলাল হোসেন বলেন, ‘কীভাবে তনু মরল তা জানতে চেয়েছেন। আমরা গ্রামের বাড়িতে থেকে এটা কীভাবে বলব! আরও বলেছেন, কথা চেপে রাখেন কেন, যা জানেন সব বলেন।’ উল্লেখ্য, ২০ মার্চ রাত সাড়ে ১০টার দিকে কুমিল্লা সেনানিবাসের বাসার কাছ থেকে তনুর মরদেহ উদ্ধার করেন তার বাবা ইয়ার হোসেন। পরদিন কুমিল্লা কোতোয়ালি মডেল থানায় কোনো আসামির নাম উল্লেখ না করে তিনি একটি হত্যা মামলা করেন। একই দিন দুপুরে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে তনুর মরদেহের প্রথম ময়নাতদন্ত হয়। প্রথম ময়নাতদন্তে ধর্ষণের আলামত এবং মৃত্যুর সুনির্দিষ্ট কারণ পাওয়া যায়নি বলে জানিয়েছিলেন চিকিৎসকরা। দ্বিতীয় ময়নাতদন্তের জন্য ৩০ মার্চ তনুর লাশ কবর থেকে তোলা হয়।