বৃহস্পতিবার, ২১ এপ্রিল, ২০১৬ ০০:০০ টা

ঝিনাইদহে অপহূত কলেজছাত্রের লাশ

ঝিনাইদহ প্রতিনিধি

ঝিনাইদহে অপহূত কলেজছাত্রের লাশ

ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলা থেকে পুলিশ পরিচয়ে তুলে নিয়ে যাওয়ার পর এবার কলেজছাত্র সোহানুর রহমান সোহানের গুলিবিদ্ধ লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। নিহত সোহানুর কালীগঞ্জের ঈশ্বরা গ্রামের মহাসিন আলীর ছেলে ও স্থানীয় শহিদ নূর আলী কলেজের প্রথম বর্ষের ছাত্র। নিখোঁজের ১২ দিন পর গতকাল সকালে চুয়াডাঙ্গার সদর উপজেলার বুলকিয়া চন্দতলা মাঠে সোহানুরের গুলিবিদ্ধ লাশ পাওয়া যায়। সকাল ৭টার দিকে কৃষকরা মাঠে কাজ করতে যাওয়ার সময় রাস্তার পাশে যুবকের গুলিবিদ্ধ লাশ দেখতে পেয়ে পুলিশকে খবর দেন। পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠায়। সোহানুরের খালাতো ভাই আবদুল্লাহ আল মামুন লাশ শনাক্ত করেন। এর আগে ১০ এপ্রিল বিকাল ৫টার দিকে ঈশ্বরা জামতলা নামক স্থানে তার মায়ের জন্য অপেক্ষা করছিলেন সোহানুর। এ সময় নিজেদের ডিবি পুলিশ পরিচয় দিয়ে চারজন লোক ইজিবাইকে করে জোরপূর্বক তাকে তুলে নিয়ে যায় বলে তার পরিবারের অভিযোগ। সোহানুরের মা পারভীনা বেগম জানান, তার ছেলে কোনো রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিলেন না। তিনি পড়াশোনা করতেন। এসএসসি পরীক্ষায় জিপিএ-৪.৩১ পেয়েছেন সোহান। এরপর কালীগঞ্জ শহরের শহিদ নূর আলী কলেজে ভর্তি হয়েছিলেন। পারভীনা বেগম জানান, সোহানুরের বাবা ঢাকায় থাকেন। তার দুই ছেলে এক মেয়ে। সোহানুরের সন্ধান দাবিতে ১৭ এপ্রিল ঝিনাইদহ প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলনও করে তার পরিবার। সংবাদ সম্মেলনে সোহানুরের বাবা বলেছিলেন, ‘আমার ছেলে কোনো রাজনীতি করে না। ছেলের সন্ধানে রাজনৈতিক নেতা ও প্রশাসনের দ্বারস্থ হয়ে আমি ক্লান্ত। সবাই আমাকে খালি হাতে ফিরিয়ে দিয়েছে। সোহানের মা অসুস্থ। ছেলের শোকে আরও অসুস্থ হয়ে পড়েছে।’ এদিকে কালীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আনোয়ার হোসেন জানান, ‘সোহানুর নিখোঁজ হওয়ার পর থেকেই পরিবারটির পক্ষে সহায়তা চাওয়া হয়েছে। আমরা বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে দেখেছি।’ এ নিয়ে গত এক মাসে কালীগঞ্জের বিভিন্ন গ্রাম থেকে গোয়েন্দা পুলিশ পরিচয়ে তিনজন কলেজছাত্রকে তুলে নিয়ে যাওয়ার পর সবারই গুলিবিদ্ধ লাশ পাওয়া গেছে। এর আগে ১৮ মার্চ দুপুরে চাপালী গ্রামের নূর ইসলামের ছেলে যশোর এমএম কলেজের অনার্সের ছাত্র আবুজার গিফারীকে (২২) ডিবি পুলিশ পরিচয়ে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়। এরপর ২৪ মার্চ বিকালে একই উপজেলার বাকুলিয়া গ্রামের রুহুল আমিনের ছেলে ঝিনাইদহ সরকারি কেসি কলেজের অনার্সের ছাত্র শামীম হোসেনকে (২০) তুলে নিয়ে যাওয়া হয়। এরপর ১২ এপ্রিল দুজনেরই গুলিবিদ্ধ লাশ পাওয়া যায়। চুয়াডাঙ্গা সদর থানার ওসি সাইফুল ইসলাম ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, সোহানুর হত্যার কোনো কারণ জানা যায়নি। ধারণা করা হচ্ছে, পূর্বশত্রুতার জের ধরে এ ঘটনা ঘটতে থাকতে পারে। তবে সঠিক তদন্তের পর প্রকৃত ঘটনা জানা যাবে।

সর্বশেষ খবর