বৃহস্পতিবার, ২১ এপ্রিল, ২০১৬ ০০:০০ টা

চুরির দায়ে গ্রিলে বেঁধে অমানুষিক নির্যাতন

নওগাঁ প্রতিনিধি

নওগাঁর সাপাহারে ক্ষুধা নিবারণের জন্য মাত্র ২০ টাকা মূল্যের এক টুকরো কাঠ চুরি করার দায়ে হূদয় (১২) নামে এক শিশুকে অমানুষিক নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে।

জানা গেছে, জেলার সদর উপজেলার চণ্ডীপুর বোডঘর গ্রামের দরিদ্র আনার আলীর ছেলে শিশুশ্রমিক হূদয় সাপাহার উপজেলার হাসপাতাল রোডের নওগাঁ ফার্নিচারে দীর্ঘদিন ধরে কাজ করে আসছে। কিন্তু মালিক বেতন-ভাতা দেন না। ঘটনার দিন মঙ্গলবার সকালে ক্ষুধার জ্বালা সহ্য করতে না পেরে ওই দোকান থেকে ছোট এক টুকরো কাঠ নিয়ে পাশের হোটেলে তা মাত্র ২০ টাকায় বিক্রি করে খাবার কিনে খায় হূদয়। ঘটনাটি জানতে পেরে ফার্নিচার মালিক মাসুদ শিশু হূদয়কে শাসনের নামে কয়েক দফায় নির্যাতন করেন। এতেও তিনি ক্ষান্ত না হয়ে ঘটনাটি বাজারের নৈশপ্রহরী আনারুল ইসলামকে জানান। এদিকে ওই দিন রাত সাড়ে ১০টার দিকে স্থানীয় লাবণী সুপার মার্কেটের ভিতর আনারুল শিশুটিকে ধরে আটক রাখেন। পরে নৈশপ্রহরীদের সাধারণ সম্পাদক আবদুল হাকিম স্বর্ণকারের উপস্থিতিতে ওই শিশুর হাত পিঠমোড়া করে পেছনে দরজার গ্রিলের সঙ্গে বেঁধে অন্ধকারে অমানুষিক নির্যাতন চালানো হয়। এ সময় মার্কেটের ভিতর থেকে ভেসে আসা শিশুটির আর্তচিত্কার শুনে বাজারের লোকজন জড়ো হন। কিন্তু লাবণী সুপার মার্কেটের সব গেটে তালা দেওয়া থাকায় তারা ভিতরে প্রবেশ করতে পারেননি। একপর্যায়ে নির্যাতন শেষে অসুস্থ অবস্থায় শিশুটিকে ছেড়ে দেওয়া হয়। স্থানীয় লোকজন গুরুতর অবস্থায় শিশুটিকে সাপাহার হাসপাতালে ভর্তি করেন। শিশুটি এখন সাপাহার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে। এ বিষয়ে নৈশপ্রহরীর সাধারণ সম্পাদক আবদুল হাকিম স্বর্ণকারের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি ঘটনার সত্যতা স্বীকার করেন। তবে সাপাহার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রেজাউল ইসলাম ঘটনাটির বিষয়ে অবগত নন বলে সাংবাদিকদের জানান। অন্যদিকে সাপাহার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মুহাম্মদ মুনীরুজ্জামান ভূঞা গতকাল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন শিশু হূদয়কে দেখতে যান।

সর্বশেষ খবর