ছাত্র আন্দোলনের মুখে যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (যবিপ্রবি) বন্ধ ঘোষণা করেছে কর্তৃপক্ষ। একই সঙ্গে গতকাল সন্ধ্যার মধ্যে ছাত্রদের এবং আজ বুধবার সকাল ৯টার মধ্যে ছাত্রীদের হল ত্যাগের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এ ঘটনায় পুলিশ ক্যাম্পাসে অভিযান চালিয়ে ২৭ শিক্ষার্থীকে আটক করেছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঁচ শিক্ষার্থী বহিষ্কারের সুপারিশ বাতিলের দাবিতে ১৭ দিন ধরে ক্যাম্পাসে আন্দোলন করছে শিক্ষার্থীরা। এরই অংশ হিসেবে গতকাল সকালে শিক্ষার্থীরা প্রশাসনিক ভবনে তালা লাগিয়ে দেন। এতে উপাচার্য প্রফেসর ড. আবদুস সাত্তারসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা অবরুদ্ধ হয়ে পড়েন। একপর্যায়ে কর্তৃপক্ষ পুলিশের সহায়তা চাইলে বেলা আড়াইটার দিকে যশোর কোতোয়ালি থানা পুলিশের একটি টিম এসে অভিযান চালিয়ে ২৭ শিক্ষার্থীকে আটক করে। এ সময় অন্য শিক্ষার্থীরা ঘটনাস্থল ত্যাগ করলে কর্তৃপক্ষ জরুরি সভায় মিলিত হন। জনসংযোগ বিভাগের সহকারী পরিচালক হায়াতুজ্জামান মুকুল জানান, ২৬ মে থেকে ১০ জুন পর্যন্ত গ্রীষ্মকালীন ছুটি নির্ধারিত ছিল। কিন্তু উদ্ভূত পরিস্থিতিতে ছুটি এগিয়ে এনে ২৭ এপ্রিল থেকে ১১ মে পর্যন্ত নির্ধারণ করা হয়েছে। একই সঙ্গে গতকাল সন্ধ্যা ৬টার মধ্যে ছাত্রদেরকে শহীদ মসিয়ুর রহমান হল এবং আজ বুধবার সকাল ৯টার মধ্যে ছাত্রীদেরকে শেখ হাসিনা হল ত্যাগের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। যশোর কোতোয়ালি থানার ওসি ইলিয়াস হোসেন বলেন, ২৭ শিক্ষার্থীকে থানায় রাখা হয়েছে। কর্তৃপক্ষ মামলা করলে এসব শিক্ষার্থীদের আটক দেখানো হবে। যবিপ্রবি উপাচার্য প্রফেসর ড. আবদুস সাত্তার বলেন, আজকের (গতকালের) ঘটনা তদন্ত করে দেখার জন্য পাঁচ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি করা হয়েছে। তদন্ত কমিটির সুপারিশ পাওয়ার পর পদক্ষেপ নেওয়া হবে। শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনিয়র নিরাপত্তা প্রহরী বদিউজ্জামান বাদলের ভাই শরিফুল ইসলাম প্রায়ই ছাত্রীদের উত্ত্যক্ত করে। এ ঘটনায় গত ১০ ডিসেম্বর ছাত্রদের সঙ্গে নিরাপত্তা প্রহরী বাদলের কথা কাটাকাটির একপর্যায়ে মারামারির ঘটনা ঘটে এবং বাদল আহত হন। এ ব্যাপারে গঠিত তদন্ত কমিটি তাদের রিপোর্টে ছাত্র নাসিরউদ্দিনকে স্থায়ী বহিষ্কার, অন্য চার ছাত্রকে বিভিন্ন মেয়াদে বহিষ্কার এবং প্রহরী বাদলকে চাকরিচ্যুত করার সুপারিশ করে। ছাত্রদের বহিষ্কারের সুপারিশ বাতিলের দাবিতে ১০ এপ্রিল থেকে ক্লাস ও পরীক্ষা বর্জন করে আন্দোলন শুরু করে শিক্ষার্থীরা।
