শনিবার, ৭ মে, ২০১৬ ০০:০০ টা

ক্লুই পাচ্ছে না পুলিশ

নিজস্ব প্রতিবেদক, রাজশাহী

ক্লুই পাচ্ছে না পুলিশ

রাজশাহী মহানগরীর অভিজাত আবাসিক হোটেল নাইস ইন্টারন্যাশনালে দুই বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী খুনের ঘটনায় কোনো অগ্রগতি নেই। ময়নাতদন্তের রিপোর্টে কিশোরী সুমাইয়া সুলতানাকে হত্যা করা হয়েছে বলে উল্লেখ করা হয়। আর মিজানুর রহমানের ময়নাতদন্তের রিপোর্ট এখনো পুলিশ হাতে পায়নি। ফলে এ হত্যাকাণ্ডের তেমন অগ্রগতি নেই বলে জানিয়েছেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা বোয়ালিয়া মডেল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) সেলিম বাদশা।

রাজশাহী মহানগর পুলিশের মুখপাত্র সহকারী পুলিশ কমিশনার ইফতে খায়ের আলম জানান, হোটেল নাইস থেকে উদ্ধার হওয়া সুমাইয়া সুলতানা ও মিজানুর রহমানের লাশের ডিএনএ পরীক্ষার জন্য ভিসেরা ও অন্যান্য আলামত ঢাকায় সিআইডিতে পাঠানো হয়েছে। ওই দুই প্রতিবেদন পেলে তারা পরবর্তী পদক্ষেপ নেবেন। এ ছাড়া পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) ঘটনার ছায়া তদন্ত করছে। সিআইডি চাইলে মামলার তদন্তভার তারা দেবেন বলেও জানান তিনি। এদিকে, আলোচিত ওই তরুণ-তরুণী খুনের ঘটনায় বেশকিছু প্রশ্ন সামনে এসেছে। ওই হোটেলে তারা কেন এসেছিলেন, তাদের সঙ্গে কাদের সাক্ষাৎ হয়েছিল, তারা কোথায় কোথায় গিয়েছিলেন এসব প্রশ্নের উত্তর মেলেনি। ঘটনার পর জোড়া লাশ উদ্ধার হওয়া হোটেল নাইস ইন্টারন্যাশনালের ৩০৩ নম্বর কামরায় গিয়ে দেখা গেছে, যে সিলিং ফ্যান থেকে মিজানুরের ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করা হয়, তা মেঝে থেকে অন্তত ১২ ফুট উপরে। ওই কামরায় তেমন উঁচু টেবিলও ছিল না। ফলে প্রতিবন্ধী ওই যুবকের পক্ষে ওই ফ্যানের সঙ্গে ওড়না বেঁধে আত্মহত্যা করা প্রায় অসম্ভব। উদ্ধার হওয়া ওই কামরার আলামত ওই বক্তব্যকেই প্রমাণ করে। ওই কামরার দরজা ভেঙে লাশ উদ্ধারের বিষয়টি নিয়েও সৃষ্টি হয়েছে রহস্য। ভেতর থেকে দেওয়া অটোলক যে কেউ বাইরে থেকে লাগিয়ে দিতে পারেন। হয়তো এমনটিই ঘটেছে এ ক্ষেত্রে। এ ছাড়া ওই কামরায় আছে গোপন দরজা। যা দিয়ে অনায়াসেই যাওয়া-আসা করা যায়। শুধু ওই কক্ষই নয়, এমন চোরা দরজা আছে ওই হোটেলের আরও ১০টি কামরায়। সব মিলিয়ে ঘটনাটিকে পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড বলে ধরে নিচ্ছেন সংশ্লিষ্টরা। হোটেলের ওই কক্ষের চোরা দরজার কথা স্বীকার করেছেন হোটেল মালিক হাসান কবীর। তিনি বলেন, এসি রক্ষণাবেক্ষণের জন্য তারা এসব দরজা রেখেছেন। ওই রুম ছাড়াও আরও পাঁচটি রুমে এমন দরজা আছে। তবে এসব দরজার চাবি অত্যন্ত নিরাপদে রক্ষিত থাকে। তা কোনোভাবেই বেহাত হওয়ার সুযোগ নেই। উল্লেখ্য, গত ২২ এপ্রিল খুন হন বগুড়া শহরের উপশহর এলাকার বাসিন্দা আবদুল করিমের মেয়ে সুমাইয়া নাসরিন (২১)। তিনি পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের প্রথমবর্ষের ছাত্রী ছিলেন এবং সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়া উপজেলার পাঠানপাড়া গ্রামের উমেদ আলীর ছেলে মিজানুর রহমান (২৩)। তিনি ছিলেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামের ইতিহাস বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর