সোমবার, ৯ মে, ২০১৬ ০০:০০ টা

নাচে গানে রবীন্দ্রজয়ন্তী

সাংস্কৃতিক প্রতিবেদক

নাচে গানে রবীন্দ্রজয়ন্তী

দিনাজপুর শিল্পকলা একাডেমি চত্বরে ক্ষুদে শিল্পীদের নৃত্য —বাংলাদেশ প্রতিদিন

বাংলা সাহিত্যের মহীরুহ রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। গানে, কবিতায়, প্রবন্ধে, ছোটগল্পে তিনি বাঙালিকে অনুপ্রাণিত করেছেন। তিনি মানুষের জয়গান গেয়েছেন আজীবন। গতকাল ছিল তার ১৫৫তম জন্মবার্ষিকী। আলোচনা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, সম্মাননা প্রদান, চলচ্চিত্র প্রদর্শনী, সিডির প্রকাশসহ বর্ণাঢ্য নানা আয়োজনে বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন উদযাপন করেছে দিনটি।

ছায়ানট : এ উপলক্ষে ‘শুভ কর্মপথে ধর নির্ভয় গান’ আহ্বানে ছায়ানটে গতকাল শেষ করা হয়েছে দুদিনের রবীন্দ্রউৎসব। ‘বিপুল তরঙ্গ রে, সব গগন উদ্?বেলিয়া মগন করি অতীত অনাগত আলোকে-উজ্জ্বল জীবনে-চঞ্চল একি আনন্দ তরঙ্গ’ নৃত্যগীতের মধ্য দিয়ে শুরু হয় সমাপনী আয়োজন। শেষ দিনের বিশেষ আকর্ষণ ছিল ‘আমার রবীন্দ্রনাথ’ অধ্যাপক আনিসুজ্জামানের কথার সঙ্গে তার প্রিয় গানের উপস্থাপনা। অনুষ্ঠানে একক সংগীত পরিবেশন করেন এ টি এম জাহাঙ্গীর, ইলোরা আহমেদ শুক্লা, মহিউজ্জামান চৌধুরী, লাইসা আহমদ লিসা, সত্যম কুমার দেবনাথ, সুতপা সাহা, সেমন্তী মঞ্জরী, সেঁজুতি বড়ুয়া, অভয়া দত্ত, ইশরাত জাহান বীথি, কাঞ্চন মোস্তফা, খন্দকার খায়রুজ্জামান কাইয়ুম, চঞ্চল বড়াল, দীপ্তি দাশ, পার্থ প্রতিম রায়, মমি মঞ্জরী চৌধুরী, মো. সিফায়েত উল্লাহ মুকুল, মৃত্তিকা সহিতা, ঝুমা খন্দকার, ঝুমুর আহমেদ, শুক্লা পাল সেতু, শিমু দে এবং সৈকত মুখার্জি। ৬টি সম্মেলক গানের সঙ্গে নৃত্য পরিবেশন করে ছায়ানটের নির্বাচিত শিল্পীরা। এতে অতিথি দল হিসেবে ২টি সম্মেলক গান পরিবেশন করে জাতীয় রবীন্দ্রসংগীত সম্মিলন পরিষদের ঢাকা মহানগর শাখা। অনুষ্ঠানে রবীন্দ্রনাথের রচনা থেকে পাঠ ও আবৃত্তি করেন জহিরুল হক খান এবং সুমনা বিশ্বাস।

শিল্পকলা একাডেমি : জন্মজয়ন্তীতে ‘রাজপুত্তুর’ ও ‘মাধো’ নামের দুটি শিশুতোষ স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র প্রদর্শন ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করে শিল্পকলা একাডেমি। সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের অর্থায়নে চলচ্চিত্র দুটি নির্মিত হয়েছে শিল্পকলা একাডেমির প্রযোজনায়। গতকাল সন্ধ্যায় একাডেমির চিত্রশালা মিলনায়তনে প্রদর্শনীর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন সংস্কৃতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন সংস্কৃতিসচিব আক্তারী মমতাজ, বিশিষ্ট রবীন্দ্র গবেষক আহমদ রফিক ও বিশিষ্ট চলচ্চিত্র নির্মাতা মোরশেদুল ইসলাম। একই সময়ে একাডেমির জাতীয় নাট্যশালা মিলনায়তনে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে সমবেত নৃত্য পরিবেশন করে সৃষ্টি কালচারাল সেন্টার, নৃত্যালোক, সুকন্যা নৃত্যাঙ্গন, দিব্য সাংস্কৃতিক সংগঠন, উত্তরণ। এতে একক সংগীত পরিবেশন করেন ফাহিম হোসেন চৌধুরী, আজিজুর রহমান তুহিন, মহাদেব ঘোষ, মিতা হক, রোকাইয়া হাসিনা, জলি রহমান, নার্গিস চৌধুরী, হিমাদ্রী শেখর, সুষ্মিতা আহমেদ বর্ণা, মহিউদ্দিন চৌধুরী ময়না। রবীন্দ্রসংগীত শিল্পী সংস্থা : গতকাল শেষ হয়েছে বাংলাদেশ রবীন্দ্রসংগীত শিল্পী সংস্থার পাঁচদিনের রবীন্দ্রসংগীত উৎসব। সংস্থার শিল্পীদের সমবেত কণ্ঠে ‘হে নূতন দেখা দিক আর-বার’ ও ‘ঐ মহামানব আসে’ এই দুটি গানে পরিবেশনার মধ্য দিয়েই শুরু হয় সমাপনী আয়োজন। এ দিন রবীন্দ্রসংগীতে বিশেষ অবদান রাখার স্বীকৃতিস্বরূপ রবীন্দ্রসংগীত শিল্পী পাপিয়া সারোয়ারকে বিশেষ সম্মাননা প্রদান করা হয়। চ্যানেল আই-এবি ব্যাংক : রবীন্দ্রমেলা, সম্মাননা প্রদান ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ১৫৫তম জন্মজয়ন্তী উদযাপন করেছে চ্যানেল আই। মেলার পৃষ্ঠপোষক ছিল এবি-ব্যাংক। ক্যামব্রিয়ান স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণে নৃত্য পরিবেশনের মাধ্যমে বিকালে শুরু হয় এই আয়োজন। সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত মেলা সরাসরি সম্প্রচার করা হয়। উদীচী শিল্পীগোষ্ঠী : কথায়, গানে ও কবিতায় বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের জন্মবার্ষিকী উদযাপন করেছে বাংলাদেশ উদীচী শিল্পীগোষ্ঠী। গতকাল সন্ধ্যায় সংগঠনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করে উদীচী ঢাকা মহানগর সংসদ। অনুষ্ঠানের শুরুতে “আনন্দলোকে মঙ্গলালোকে বিরাজ সত্য সুন্দর” গানটি পরিবেশন করেন শিল্পীরা। কুষ্টিয়া : ‘হে নতুন, দেখা দিক আর বার জন্মের প্রথম শুভক্ষণ, তোমার প্রকাশ হোক, কুহেলিকা করি উদ্ঘাটন সূর্য্যের মতো’- কবিগুরুর এই গানটি পরিবেশনের মধ্য দিয়ে গতকাল সকাল ১০টায় কুষ্টিয়ার শিলাইদহ কুঠিবাড়ীতে তিন দিনের অনুষ্ঠানমালা শুরু হয়েছে। কুষ্টিয়া জেলা শিল্পকলা একাডেমি ও রবীন্দ্রসংগীত সম্মিলন পরিষদের শিল্পীরা অনুষ্ঠানে সূচনা সংগীত পরিবেশন করেন। আলোচনা অনুষ্ঠান শেষে বিভিন্ন স্থান থেকে আসা শিল্পীরা রবীন্দ্র সুরের মূর্ছনায় মাতিয়ে তোলেন কুঠিবাড়ী চত্বর। তিন দিনের এই রবীন্দ্রউৎসবকে ঘিরে ভক্ত-দর্শনার্থীদের ভিড়ে মুখরিত হয়ে উঠেছে কুঠিবাড়ী প্রাঙ্গণ।

সর্বশেষ খবর