সোমবার, ৯ মে, ২০১৬ ০০:০০ টা
বগুড়ায় গ্রেনেড বিস্ফোরণ

নিহত ফারদিন ছিলেন চট্টগ্রাম জেএমবির সামরিক প্রধান

নিজস্ব প্রতিবেদক, বগুড়া

বগুড়ার শেরপুরে একটি বাড়িতে গত ৩ এপ্রিল গ্রেনেড বিস্ফোরণে নিহত আরেকজনের পরিচয় পাওয়া গেছে। তিনি চট্টগ্রাম অঞ্চলের জেএমবি সামরিক শাখার প্রধান রাইসুল ইসলাম খান ফারদিন। তার আসল বাড়ি ময়মনসিংহে এবং পড়তেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিজ্ঞান বিভাগে।

গতকাল বগুড়ার পুলিশ সুপার মো. আসাদুজ্জামান তার কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানিয়েছেন। তিনি জানান, পুলিশ ফারদিনের স্ত্রী মাসুমা খাতুনকে গ্রেফতারের মধ্য দিয়ে বিস্তারিত পরিচয় জেনেছে। তিনি আরও জানান, গত ৩ এপ্রিল শেরপুরের গাড়ীদহে গ্রেনেড বিস্ফোরণে ২ যুবক নিহত হয়। এ ঘটনার পর পরই পুলিশ তাত্ক্ষণিক সিরাজগঞ্জের জামুয়া গ্রামের আবু বক্কর সিদ্দিকের ছেলে তরিকুল ইসলাম জুয়েলের পরিচয় উদ্ধার করে। অপর জঙ্গির পরিচয় জানা যাচ্ছিল না। এরই ধারাবাহিকতায় গত শনিবার রাতে গোয়েন্দা পুলিশের অভিযানে নিহত ওই অজ্ঞাত পরিচয় জঙ্গির শ্বশুরবাড়ির সন্ধান পাওয়া যায়। সে অনুযায়ী পুলিশ শাজাহানপুর উপজেলার কামারপাড়া গ্রামে আবদুল বাকী প্রামাণিকের বাড়িতে অভিযান চালিয়ে তার মেয়ে মাসুমা খাতুনকে (২৫) গ্রেফতার করে। তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করে নিশ্চিত হওয়া যায়, নিহত অজ্ঞাত ব্যক্তি তার স্বামী এবং তার নাম রাইসুল ইসলাম খান ফারদিন। পুলিশ জানিয়েছে, নিহত জঙ্গির পারিবারিক নাম রাইসুল ইসলাম খান রাসেল হলেও তিনি বিভিন্ন নামে পরিচিত ছিলেন। ফারদিন, নোমান, সজল নাম ধারণ করলেও তিনি ফারদিন নামে জেএমবির কার্যক্রম পরিচালনা করেছেন। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনাকালীন সময়ে তিনি জেএমবির সঙ্গে সম্পৃক্ত হন। তিনি চট্টগ্রাম অঞ্চলের জেএমবির সামরিক শাখার প্রধান ছিলেন। জেএমবির সূত্র ধরেই শাজাহানপুর উপজেলার কামারপাড়া গ্রামে আবদুল বাকী প্রামাণিকের ছেলে মোস্তাফিজার রহমান মোস্তাক ওরফে শাকিল ওরফে বোমা শাকিল ওরফে নজরুল ইসলামের সঙ্গে তার পরিচয় ঘটে। পরবর্তীতে ২০১২ সালে জঙ্গি ফারদিন অপর জেএমবি সদস্য মোস্তাফিজারের ছোট বোন মাসুমাকে বিয়ে করেন। পুলিশ সুপার জানান, ফারদিনের স্ত্রীর বড় ভাই মুজাহিদও জেএমবির সক্রিয় সদস্য। নিহত ফারদিনের স্ত্রী মাসুমা খাতুনও জেএমবির সঙ্গে জড়িত। ফারদিন এবং তার শ্বশুরবাড়ির সবাই নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠন জেএমবির সঙ্গে সক্রিয়। তিনি জানান, চট্টগ্রামে আলোচিত ন্যাংটা ফকির হত্যা ও হিন্দু ব্যবসায়ীকে গ্রেনেড নিক্ষেপ করে টাকা ছিনতাইয়ের হোতা ছিলেন এই ফারদিন।

 উল্লেখ্য, গত ৩ এপ্রিল রাত ৯টায় বগুড়ার শেরপুর উপজেলার গাড়ীদহ ইউনিয়নের জুয়ানপুর কুটিরভিটা গ্রামের মাহবুবুর রহমানের একতলা বাড়িতে গ্রেনেড বিস্ফোরণে ২ যুবক নিহত হয়। এ ঘটনায় পুলিশ পরের দিন ওই বাড়িতে অভিযান চালিয়ে ২০টি গ্রেনেড, বোমা ও ককটেল তৈরির সরঞ্জামাদি, ৪টি বিদেশি পিস্তল, ৬টি ম্যাগাজিন, মোটরসাইকেল, ব্যাংকে টাকা জমা দেওয়ার রসিদ উদ্ধার করে। মাহবুবুর রহমানের মালিকানাধীন এই বাড়ি প্রায় ৫-৬ মাস আগে নওগাঁর সিএনজিচালক জনৈক মিজানুর রহমান ভাড়া নিয়ে বসবাস করছিলেন। ওই বাড়িতেই দুই জঙ্গি পরিবারসহ বসবাস করছিল।

সর্বশেষ খবর