বোরো ধান কাটা মাড়াইয়ের ভরা মৌসুমে শ্রমিক সংকট স্বাভাবিক। এই বাস্তবতার বিকল্প কম্বাইন্ড হার্ভেস্টর মেশিন। দিনাজপুরে এখন এই মেশিনটিই কৃষকের ভরসা হয়ে উঠেছে। এটি তৈরি করেছেন ফুলবাড়ী উপজেলার দক্ষিণ বাসুদেবপুরের পল্লী চিকিৎসক আনোয়ার হোসেন।
বিভিন্ন অঞ্চল ঘুরে জানা গেছে, এখন বোরো ধান কাটা মাড়াইয়ের মৌসুম চলছে। এই ধান সময়মতো ঘরে তুলতে না পারলে ঝড় বৃষ্টিসহ প্রাকৃতিক দুর্যোগের মুখে পড়তে পারে। ফলে ঘরে তোলার কাজে ব্যস্ত চাষিরা। কিন্তু দেখা দিয়েছে মজুর সংকট। এক একর জমির ধান কাটা মাড়াই করতে মজুরি খরচ হয় ১০ হাজার টাকা। তাতেও মজুর মিলছে না। এ অবস্থায় ডা. আনোয়ারের কম্বাইন্ড হার্ভেস্টর মেশিনে সব সমস্যা দূর করেছে। এই মেশিনে ধান কাটা মাড়াইয়ে খরচ মাত্র ৫ হাজার টাকা। যেখানে মজুরি দিয়ে এক একর জমির ধান কাটা মাড়াই করতে সময় লাগে সারা দিন। সেখানে কম্বাইন্ড হার্ভেস্টর মেশিন দিয়ে একদিনেই প্রায় ৫ একর জমির ধান কাটা মাড়াই করা যায়। ফুলবাড়ীর দক্ষিণ বাসুদেবপুরের কৃষক জাকির হায়দার বলেন, এক একর জমিতে ধান কাটা মাড়াই করতে শ্রমিকের খরচ ১০ হাজার টাকা। তাও শ্রমিক পাওয়া যাচ্ছে না। সেখানে হার্ভেস্টর মেশিন দিয়ে ধান কাটা মাড়াই ও ধোলাই করতে খরচ হচ্ছে মাত্র ৫ হাজার টাকা। হার্ভেস্টর মেশিনের প্রস্তুতকারক জাতীয় পুরস্কারপ্রাপ্ত কৃষক ডা. আনোয়ার বলেন, কম্বাইন্ড হার্ভেস্টর মেশিন দিয়ে একই সঙ্গে ধান কাটা, মাড়াই ও বস্তাবন্দি করে কৃষকের বাড়িতে বহন করা হয়। এই ৩টি কাজ হয় একই সঙ্গে। তাই স্বল্প সময়ে কম খরচে কৃষক তাদের উৎপাদিত ফসল ঘরে তুলতে পারছেন। এই মেশিনের চাহিদা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। তিনি আরও জানান, একটি মেশিনের উৎপাদন খরচ ১০ লাখ টাকা। তার কাছে এখন মাত্র ৩টি মেশিন আছে। কিন্তু উপজেলায় প্রায় শতাধিক মেশিনের চাহিদা রয়েছে। অর্থের অভাবে তা তৈরি করতে পারছেন না। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা এটিএম হামিম আশরাফ বলেন, কৃষিক্ষেত্রে যান্ত্রিকীকরণের অগ্রযাত্রায় ডা. আনোয়ারের তৈরি কম্বাইন্ড হার্ভেস্টর মেশিন আমাদের জন্য মাইলফলক।