বৃহস্পতিবার, ১২ মে, ২০১৬ ০০:০০ টা
জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার

সেরা সম্মাননা ফেরদৌস মৌসুমী মিমের

নিজস্ব প্রতিবেদক

সেরা সম্মাননা ফেরদৌস মৌসুমী মিমের

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছ থেকে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার গ্রহণ করছেন মৌসুমী, ফেরদৌস ও মিম —বাংলাদেশ প্রতিদিন

জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার-২০১৪ এর পুরস্কার বিতরণ হয়ে গেল গতকাল। এতে শ্রেষ্ঠ অভিনেতার মুকুট মাথায় উঠেছে নায়ক ফেরদৌস আহমেদের। শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রী যৌথভাবে চিত্রনায়িকা মৌসুমী ও বিদ্যা সিনহা মিম। আর আজীবন সম্মাননা লাভ করেন অভিনেতা সৈয়দ হাসান ইমাম এবং অভিনেত্রী রানী সরকার। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গতকাল বিকালে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে এই শ্রেষ্ঠদের হাতে সম্মাননা তুলে দেন।

পুরস্কার হিসেবে ১৮ ক্যারেট সোনার তৈরি ১৫ গ্রাম ওজনের ট্রফি, নগদ অর্থের চেক এবং সার্টিফিকেট প্রদান করা হয়।

তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনুর সভাপতিত্বে পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন তথ্য মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির চেয়ারম্যান এ কে এম রহমতউল্লাহ এমপি এবং তথ্য সচিব মর্তুজা আহমেদ। অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, আকাশ-সংস্কৃতির যুগে আমরা পরিবর্তনশীল বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলতে চাই। আমরা সব দিক থেকে এগিয়ে যাচ্ছি। চলচ্চিত্রেও পিছিয়ে থাকতে চাই না। দেশেই আন্তর্জাতিক মানের চলচ্চিত্র নির্মাণ করা সম্ভব। আমাদের নির্মাতারা এখন ভালো মানের চলচ্চিত্র তৈরি করছেন। এটা আরও এগিয়ে নিতে হবে। প্রধানমন্ত্রী চলচ্চিত্র নির্মাতাদের উদ্দেশ্য করে আরও বলেন, ভালো চলচ্চিত্র সমাজ গঠনে ভূমিকা রাখতে পারে। আপনারা চলচ্চিত্রের মাধ্যমে সমাজ গঠনের বার্তা দিন। চলচ্চিত্রে বিনোদনের পাশাপাশি সমাজ সংস্কারের বিষয়ও থাকতে হবে, যা সমাজের খারাপ দিকটাও দমন করবে। তিনি বলেন, আমি সময় পেলে বাংলা সিনেমা দেখি। দেশে থাকতে কাজের চাপে দেখা না হলেও বিদেশ ভ্রমণের সময় বিমানে বসে বাংলা সিনেমা দেখা হয়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, নির্মাতাদের ডিজিটাল চলচ্চিত্র নির্মাণের প্রতি জোর দিতে হবে। আর নতুন নতুন প্রযুক্তির ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে। দেশে সিনেমা হলগুলোকেও আধুনিকায়ন করতে হবে। চলচ্চিত্রের উন্নয়নের ক্ষেত্রে শুধু সরকারি পদক্ষেপই যথেষ্ট নয়। আমি আশা করি বেসরকারি পর্যায় থেকেও এই শিল্পের উন্নয়নে উদ্যোগ নেওয়া হবে। তিনি বলেন, ব্যবসা পরিবর্তনের জন্য অনেক হল মালিক তাদের সিনেমা হল ভেঙে ফেলছেন। অথচ এটিকে আরও আধুনিক করলে ব্যবসা ও সুস্থ সামাজিক বিনোদনের সুযোগ তৈরি করা যায়, যা সামাজিক দায়বদ্ধতার অংশও বটে। চলচ্চিত্র শিল্পের উন্নয়নে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের বিভিন্ন উদ্যোগ তুলে ধরেন তার কন্যা শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, যুক্তফ্রন্ট সরকারের শিল্প, বাণিজ্য, শ্রম, দুর্নীতি দমন এবং পল্লী সহায়তাবিষয়ক মন্ত্রী থাকার সময় ১৯৫৭ সালের ৩ এপ্রিল তদানীন্তন প্রাদেশিক আইন পরিষদে পূর্ব পাকিস্তান চলচ্চিত্র উন্নয়ন সংস্থা বিল উত্থাপন করেন জাতির পিতা। আর স্বাধীনতার পর এফডিসি, সেন্সর বোর্ড, ডিএফপি, গণযোগাযোগ অধিদফতর ও বিটিভি পুনর্গঠন করেন তিনি।

জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার-২০১৪, যারা সম্মাননা পেলেন : আজীবন সম্মাননা পান বিশিষ্ট অভিনেতা সৈয়দ হাসান ইমাম ও অভিনেত্রী রানী সরকার। সেরা অভিনেতা ফেরদৌস (এক কাপ চা), সেরা অভিনেত্রী যৌথভাবে মৌসুমী (তারকাঁটা) ও বিদ্যা সিনহা মিম (জোনাকির আলো)। সেরা পার্শ্ব অভিনেতা ড. এজাজুল ইসলাম (তারকাঁটা), সেরা পার্শ্ব অভিনেত্রী চিত্রলেখা গুহ (৭১ এর মা জননী), সেরা খলনায়ক তারিক আনাম খান (দেশা দ্য লিডার), সেরা কৌতুক অভিনেতা মিশা সওদাগর (অল্প অল্প প্রেমের গল্প), সেরা গায়িকা যৌথভাবে রুনা লায়লা (প্রিয় তুমি সখা হও) ও মমতাজ (নেকাব্বরের মহাপ্রয়াণ)। সেরা গায়ক জেমস (দেশা দ্য লিডার), সেরা ছবির পুরস্কার পায় মাসুদ পথিক পরিচালিত ‘নেকাব্বরের মহাপ্রয়াণ’।

সেরা পরিচালক, কাহিনী ও সংলাপকারের পুরস্কার পান ‘মেঘমল্লার’ ছবির জন্য জাহিদুর রহমান অঞ্জন। সেরা চিত্রগ্রাহক মোহাম্মদ হোসেন জেমী (বৈষম্য)। সেরা সংগীত পরিচালক সাইম রানা (নেকাব্বরের মহাপ্রয়াণ), সেরা গীতিকার মাসুদ পথিক (নেকাব্বরের মহাপ্রয়াণ), সেরা সুরকার বেলাল খান (নেকাব্বরের মহাপ্রয়াণ), সেরা রূপসজ্জাকর আবদুর রহমান (নেকাব্বরের মহাপ্রয়াণ), সেরা চিত্রনাট্যকার সৈকত নাসির (দেশা দ্য লিডার), সেরা চিত্র সম্পাদক তৌহিদ হোসেন চৌধুরী (দেশা দ্য লিডার), সেরা শিশুশিল্পী আবির হোসেন বৈষম্য, সেরা শিল্পনির্দেশক মারুফ সামুরাই (তারকাঁটা), সেরা শব্দগ্রাহক রতন পাল (মেঘমল্লার), শিশুশিল্পী বিশেষ শাখায় মারজান হোসাইন জারা (মেঘমল্লার), সেরা পোশাক ও সাজসজ্জা কনকচাঁপা চাকমা (জোনাকির আলো)। চলচ্চিত্রের বিভিন্ন শাখায় মোট ২৬ ক্যাটাগরিতে দেওয়া হচ্ছে এবারের জাতীয় পুরস্কার। শ্রেষ্ঠ স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র নির্বাচিত হয়েছে ‘গাড়িওয়ালা’।

সর্বশেষ খবর