বুধবার, ১৮ মে, ২০১৬ ০০:০০ টা
বিলাতের হালচাল শেষ

উজ্জ্বল বাংলাদেশি কমিউনিটি, উজ্জ্বল বাংলাদেশ

আ স ম মাসুম, যুক্তরাজ্য

দিনে দিনে মূলধারার ব্রিটিশ কমিউনিটিতে উজ্জ্বলতর হচ্ছে বাংলাদেশিদের অবস্থান। সেই তালিকায় সর্বশেষ সংযোজন ক্যামডেন কাউন্সিলের মেয়র হিসেবে অভিষিক্ত নাদিয়া শাহ। প্রথম বাংলাদেশি নারী হিসেবে এমন সম্মানজনক পদে অভিষিক্ত হলেন সিলেটের মেয়ে নাদিয়া। আরেক নাদিয়া ব্রিটিশ বেইক অব চ্যাম্পিয়ন হয়েছেন এ বছরের শুরুতে। ব্রিটিশ রানী এলিজাবেথের জন্মদিনের কেক বানিয়ে ব্রিটিশ-বাংলাদেশিদের মুখ উজ্জ্বল করেছেন তিনি।

বাংলাদেশের মুখ উজ্জ্বল করার এ তালিকা এখন শুধু দীর্ঘতরই হচ্ছে। সাফল্যের পালকে যুক্ত হচ্ছে একটি একটি করে নাম। এর আগে গত বছর জাতীয় নির্বাচনে তিনজন ব্রিটিশ-বাংলাদেশি     মেয়ে ব্রিটিশ পার্লামেন্টে নির্বাচিত হন সংসদ সদস্য হিসেবে। রুশনারা আলী ২০১০ সালে ইতিহাস সৃষ্টি করে প্রথম বাংলাদেশি হিসেবে ব্রিটিশ পার্লামেন্টে প্রবেশ করেন। ২০১৫ সালে রুশনারা আলী ছাড়াও বঙ্গবন্ধুর নাতনি টিউলিপ সিদ্দিক ও রুপা হক ব্রিটিশ পার্লামেন্টে যোগ দেন। এরা প্রত্যেকেই এখন গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করছেন।

শুধু রাজনীতি নয়, ব্রিটিশ মূলধারার খেলাধুলা, মিডিয়া ও সংস্কৃতিতে রয়েছে আমাদের শক্তিশালী প্রতিনিধিত্ব। সম্প্রতি রেসলিংয়ে ওয়ার্ল্ড টাইটেল চ্যাম্পিয়ন হওয়া রুখসানাও বাংলাদেশি। স্পেশাল অলিম্পিকে ব্রিটিশ বাস্কেটবল টিমের সদস্য ছিলেন বুলবুল। ব্রিটেনের বিখ্যাত বলিউড ডান্স কোম্পানি বলিফ্ল্যাক্সের প্রতিষ্ঠাতা নাজ চৌধুরী বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত। গট টু ডান্স প্রতিযোগিতার ফাইনালিস্ট ছিলেন তিনি। অলিম্পিক ২০১২-এর জমকালো উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের কথা মনে আছে তো! এর পুরো কোরিওগ্রাফি করেছিলেন বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত আকরাম খান। বিবিসি প্রেজেন্টার লিসা গাজী, আইটিভি প্রেজেন্টার তাসনিম লুসিয়া খান, স্কাই নিউজের পলিটিক্যাল এডিটর ফয়সাল আহমেদ, বিবিসি প্রেজেন্টার কনি হক, বিবিসি এশিয়ান নেটওয়ার্ক প্রেজেন্টার নাদিয়া আলী— সবাই গর্ব বোধ করেন বাংলাদেশি হিসেবে। ফরেন অফিসের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বেও রয়েছেন বাংলাদেশিরা। আনোয়ার চৌধুরী বর্তমানে পেরুর হাইকমিশনার হিসেবে আছেন। শাহ আবদুল করিমের ভক্ত হিসেবে বিশেষ পরিচিতি পেয়েছেন আনোয়ার চৌধুরী। ফিলিপাইনের রাষ্ট্রদূত আসিফ আহমেদের কক্ষে গেলে দেখা যায় রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ছবি টাঙানো, মৃদু শব্দে বাজছে শ্রীকান্ত আচার্য্যের গান! প্রথম বাংলাদেশি হিসেবে সিনিয়র জজ হয়ে নাম উজ্জ্বল করেছেন সপনারা খাতুন। ব্রিটিশ ব্যবসায়ী উদ্যোক্তা হিসেবে আবকো ব্র্যান্ডের প্রতিষ্ঠাতা ইকবাল আহমদ ওবিই, ইউরো ফুডের প্রতিষ্ঠাতা সেলিম আহমদ এমবিইর নাম অগ্রগণ্য। এভাবে যদি বিভিন্ন সেক্টরের তালিকা করা হয় তা শুধু দীর্ঘই হবে। শতবর্ষ আগে জাহাজের শ্রমিক হিসেবে এখানে নোঙর ফেলা বাংলাদেশিদের বংশধররা এখন এ দেশেরই প্রতিনিধিত্ব করছেন। এখন জিসিইসি বা ‘এ’ লেভেলের রেজাল্ট বের হলে অন্তত দুই শতাধিক ব্রিটিশ বাংলাদেশি ছেলেমেয়ে ১০টির বেশি ‘এ’ স্টার নিয়ে পাস করে।

সর্বশেষ খবর