রংপুর মহানগরের তাজহাট মোড় এলাকায় সাত কোটি টাকা মূল্যের সরকারি জমিসহ বাড়ি দখলের পর তা ভেঙে মার্কেট এবং পেছনে মাদকের আখড়া গড়ে তুলেছেন এক আওয়ামী লীগ নেতা। ওই জমি উদ্ধারের দাবিতে গতকাল শত শত মানুষ বিক্ষোভ মিছিল শেষে জেলা প্রশাসকের কাছে স্মারকলিপি দিয়েছে।
জেলা প্রশাসনের রাজস্ব শাখা (আরএম) সূত্র জানায়, নগরীর মাহিগঞ্জ ভূমি অফিসের অধীন তাজহাট মোড়ে সরকারি বাড়িসহ ৩৯ শতাংশ জমির বাজার মূল্য সাত কোটি টাকা। বাড়িসহ জমিটি গত বছর ১৭ জুন রায়হান আলী বকসী, শামীমা সুলতানা, কামরুন লায়লা, আরিফুল হক লিটন ও শাহাদাত হোসেনকে এক বছরের জন্য ইজারা দেয় জেলা প্রশাসন। অতিরিক্ত জেলা প্রশাসকের (রাজস্ব) দফতর সাত দিনের মধ্যে ইজারাদারদের জমি বুঝিয়ে দেওয়ার জন্য মাহিগঞ্জ ভূমি অফিসকে লিখিত নির্দেশ দেয়। কিন্তু ২২ জুন বাড়িসহ জমিটি দখল করে বঙ্গবন্ধু ও জাতীয় চার নেতা পরিষদ রংপুর মহানগর কমিটির সাইনবোর্ড টাঙানো হয়। এ নিয়ে গত বছর ৭ জুলাই বাংলাদেশ প্রতিদিনে ‘সরকারি বাড়ি দখল করে বঙ্গবন্ধু পরিষদের অফিস’ শিরোনামে সংবাদ প্রকাশের পর সাইনবোর্ডটি সরিয়ে ফেলা হয়। তবে অভিযোগ উঠেছে, সিটি করপোরেশনের ২৭ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সদস্য পরিচয় দিয়ে নুরুল হক মিলন বাড়িটি দখল করেন। এরপর তিনি পুরনো বাড়িটি ভেঙে ফেলেন। এক লাখ টাকা মূল্যের পাঁচটি আম ও নারিকেল গাছ কেটে সেখানে মার্কেট নির্মাণ করা হয়। সিটি করপোরেশনের ২৮ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর ও আওয়ামী লীগ জাতীয় পরিষদের সদস্য ইদ্রিস আলী বলেন, ‘সরকারি জমিসহ বাড়ি দখলের পর তা ভেঙে মার্কেট এবং পেছনে মাদকের আখড়া গড়ে তোলা হয়েছে। বিষয়টি পুলিশকে একাধিকবার বলার পরও মাদকের আখড়া বন্ধ হয়নি।’ নুরুল হক মিলন নিজেকে ২৭ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ নেতা পরিচয় দিলেও ওই কমিটির সাধারণ সম্পাদক নাসিম আহমেদ সনু বলেন, ‘মিলনের সঙ্গে আওয়ামী লীগের কোনো সংশ্লিষ্টতা নেই।’ এ বিষয়ে জানতে নুরুল হক মিলনের মোবাইল ফোনে একাধিকবার রিং করা হলে তা বন্ধ পাওয়া যায়। রংপুরের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মোস্তাইন বিল্লাহ বলেন, ‘জায়গাটি সরকারের। একাধিকবার চিঠি দেওয়ার পর দখল না ছাড়ায় দখলকারীর বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে। তিনি আবার পাল্টা মামলা করেছেন। মামলা নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে। তবে মাদকের আখড়া গড়ে তোলা হলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’