বৃহস্পতিবার, ১৯ মে, ২০১৬ ০০:০০ টা

তারাপুর বাগানের কাগজপত্র রাগীব আলীর, দখল পঙ্কজের!

শাহ্ দিদার আলম নবেল, সিলেট

তারাপুর বাগানের কাগজপত্র রাগীব আলীর, দখল পঙ্কজের!

দেবোত্তর সম্পত্তিতে গড়ে ওঠা সিলেটের তারাপুর চা বাগানের দখল বুঝে পেলেও এখনো কোনো কাগজপত্র পাননি ওই সম্পত্তির সেবায়েত পঙ্কজ কুমার গুপ্ত। আদালতের নির্দেশে জেলা প্রশাসন পঙ্কজকে বাগানের দখল বুঝিয়ে দিলেও গতকাল বুধবার পর্যন্ত বাগানের কাগজপত্র বুঝিয়ে দেননি রাগীব আলী। উচ্চ আদালতের আপিল বিভাগের এক রায়ের পরিপ্রেক্ষিতে গত রবিবার সিলেটের বহুল আলোচিত তারাপুর চা বাগানটি শিল্পপতি রাগীব আলীর দখল থেকে মুক্ত করে শ্রীশ্রীরাধাকৃষ্ণ দেবোত্তর সম্পত্তির সেবায়েত পঙ্কজ কুমার গুপ্তের কাছে হস্তান্তর করা হয়। ওইদিন থেকে চা বাগান পরিচালনার দায়িত্ব পান পঙ্কজ গুপ্ত। দু-এক দিনের মধ্যে দেবোত্তর সম্পত্তি ও বাগানের সব কাগজপত্র বুঝিয়ে দেওয়ার কথা থাকলেও গতকাল বুধবার পর্যন্ত তিনি তা দেননি। রাগীব আলীর দখলে সব কাগজপত্র থাকায় বাগান পরিচালনা নিয়ে বেকায়দায় পড়েছেন পঙ্কজ। পঙ্কজ জানান, গতকাল বুধবার সব কাগজপত্র রাগীব আলী বুঝিয়ে দেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু তিনি দেননি। এ ছাড়া বাগানের বাংলোটিও এখনো ছেড়ে দেননি রাগীব আলী। বাগানের বাংলোতে এখনো রাগীব আলীর মেডিকেল কলেজের ইন্টার্ন চিকিৎসকরা বসবাস করছেন। বাগানটি এখনো তিনি দখলে রেখেছেন। বাগানের সব হিসাবপত্র তাকে বুঝিয়ে দেওয়ার কথা থাকলেও রাগীব আলী তা না করে উল্টো বাগানের কারখানার যন্ত্রপাতি খুলে নিয়ে গেছেন। এতে বাগানের চা ফ্যাক্টরিটি চালু করা যাচ্ছে না। ফলে বাগান ও ফ্যাক্টরি সচল রাখতে সমস্যায় পড়েছেন পঙ্কজ গুপ্ত। টিলাঘেরা ৪২২ দশমিক ৯৬ একর জায়গা নিয়ে গড়ে ওঠা তারাপুর বাগানের পুরোটাই দেবোত্তর সম্পত্তি। ১৯১৫ সালে ওই বাগানের তৎকালীন মালিক বৈকুণ্ঠ গুপ্ত শ্রীশ্রীরাধাকৃষ্ণ জিউ আখড়ার নামে বাগানটি দান করেন। অভিযোগ ওঠে, জালিয়াতির মাধ্যমে ১৯৯০ সালের ১২ ফেব্রুয়ারি নিজের ছেলে আবদুল হাইয়ের নামে বাগানটি ৯৯ বছরের জন্য লিজ নেন রাগীব আলী। এরপর সেখানে নিজের ও স্ত্রীর নামে গড়ে তোলেন মেডিকেল কলেজ, হাসপাতাল ও নার্সিং ইনস্টিটিউট। প্লট আকারে ৩৫৭ পরিবারের কাছে বিক্রি করেন দেবোত্তর সম্পত্তির একাংশ। ওইসব প্লটে গড়ে ওঠে বহুতল ভবনসহ স্থাপনা। এ নিয়ে আদালতে দায়েরকৃত মামলার পরিপ্রেক্ষিতে সম্প্রতি হাইকোর্টের আপিল বিভাগ বাগানটি রাগীব আলীর কাছ থেকে দখলমুক্ত করে সেবায়েত পঙ্কজ কুমারের কাছে হস্তান্তর ও সব স্থাপনা ছয় মাসের মধ্যে সরিয়ে সেখানে চা বাগান সৃজনের নির্দেশ দেন।

সর্বশেষ খবর