শনিবার, ৬ আগস্ট, ২০১৬ ০০:০০ টা

আজ ২২ শ্রাবণ

মোস্তফা মতিহার

আজ ২২ শ্রাবণ

আজ বাইশে শ্রাবণ। কবিগুরুর ৭৬তম প্রয়াণ দিবস। বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ১৩৪৮ সালের ২২ শ্রাবণ কলকাতার জোড়াসাঁকোর ঠাকুরবাড়িতে শ্রাবণের বাদলঝরা দিনে ইহলোক ত্যাগ করেন। মানুষের মুক্তিই ছিল রবিঠাকুরের দর্শন। মানবতাবাদী এই কবি বিশ্বাস করতেন বিশ্বমানবতায়। জীবনের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত সেই দর্শন অন্বেষণ করেছেন। তার কবিতা, গান, সাহিত্যের অন্যান্য বিভিন্ন শাখার লেখনী মানুষকে আজও সেই অন্বেষণের পথে, তার অন্বিষ্ট উপলব্ধির পথে আকর্ষণ করে। রবীন্দ্রনাথ আমাদের মন-মানসিকতা গঠনের, চেতনার উন্মেষের প্রধান অবলম্বন। রবীন্দ্রনাথের কাছ থেকেই আমরা পেয়েছি আমাদের জাতীয় সংগীত। রবীন্দ্রনাথের কবিতা ও গান বাঙালি তথা বাংলাদেশিদের যাপিত জীবনের সঙ্গে অবিচ্ছেদ্যভাবে জড়িয়ে আছে। তিনি ছিলেন একাধারে কবি, নাট্যকার, কথাশিল্গী, চিত্রশিল্গী, গীতিকার, সুরকার, সংগীত পরিচালক, ছোটগল্পকার ও ভাষাবিদ। বাংলা সাহিত্য-সংস্কৃতির এমন দিক নেই যা নিয়ে তিনি লেখালেখি করেননি। জীবনের শেষ পর্যায়ে তিনি চিত্রকর হিসেবেও খ্যাতি অর্জন করেন। রবিঠাকুরই বাংলা সাহিত্যকে বিশ্বের দরবারে বিশেষ মর্যাদায় অধিষ্ঠিত করেছেন। প্রথম এশীয় হিসেবে ১৯১৩ সালে ‘গীতাঞ্জলি’ কাব্যগ্রন্থের জন্য তিনি সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার লাভ করেন। রবীন্দ্রনাথ অবশ্য জন্ম-মৃত্যুর মাঝে তফাত দেখেছেন খুব সামান্যই। সৃষ্টিই যে এই নশ্বর জীবনকে অবিনশ্বরতা দেয়, সে কথা দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করতেন বলেই তিনি অমন দৃঢ়তায় বলতে পেরেছেন, ‘মৃত্যু দিয়ে যে প্রাণের/মূল্য দিতে হয়/সে প্রাণ অমৃতলোকে/মৃত্যুকে করে জয়।’ বিভিন্ন সামাজিক, সাংস্কৃতিক সংগঠন আজ নানা আয়োজনে কবিগুরুর প্রয়াণ দিবস পালন করবে। কথামালা, কবির কবিতা আবৃত্তি ও গান পরিবেশন এবং গীতিনৃত্যনাট্য ইত্যাদি দিয়ে সাজানো থাকবে রবিঠাকুরের প্রয়াণ দিবসের কর্মসূচি। বাংলা একাডেমি, শিল্পকলা একাডেমি ও ছায়ানট এ উপলক্ষে নানা কর্মসূচি হাতে নিয়েছে। এ ছাড়া বিটিভিসহ বিভিন্ন স্যাটেলাইট চ্যানেল ও বেতারেও সম্প্রচার করা হবে বিশ্বকবির প্রয়াণ দিবসের নানা অনুষ্ঠান। উল্লেখ্য, ১২৬৮ সালের ২৫ বৈশাখ (১৮৬১ সালের ৮ মে) কলকাতার জোড়াসাঁকোর ঠাকুরবাড়িতে জন্মগ্রহণ করেন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর।

সর্বশেষ খবর