শনিবার, ৬ আগস্ট, ২০১৬ ০০:০০ টা

‘আমাদের বাড়ি নিয়ে যান’ প্রধানমন্ত্রীকে ৩৮ শিশুর চিঠি

মাজেদ রহমান, জয়পুরহাট

মা-বাবার কাছে ফিরে আসার আকুল আর্তি জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে চিঠি দিয়েছে পশ্চিমবঙ্গের দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার বালুঘাটের শুভায়ন হোমসের ৩৮ বাংলাদেশি শিশু-কিশোর। ১ আগস্ট এক  চিঠিতে তারা বলে, ‘আমাদের  বাড়ি নিয়ে যান’। এ ছাড়া  মালদা হোমসে ২০ বাংলাদেশি তরুণীর একই আর্তি দেশে ফিরে আসার।

 বিভিন্ন সময় বেড়াতে গিয়ে কিংবা কাজের সন্ধানে, আবার কেউ পাচার হয়ে ভারতীয় পুলিশ ও বিএসএফের হাতে ধরা পড়ে এই শুভায়ন হোমসে আটক রয়েছে শিশুরা। এদের সবার জুভেনাইল কোর্টে বিচার হয়ে গেছে দেড়-দুই বছর আগে। বিনা অপরাধে হোমে আটক থাকতে থাকতে হাঁপিয়ে উঠেছে শিশুরা। পশ্চিমবঙ্গের সমাজকল্যাণ দফতর পরিচালিত শুভায়ন হোমসের সুপার দাওয়া দর্জি শেরপা জানান, ‘হোমের এই বাংলাদেশি শিশু-কিশোরদের বাড়ি ফেরাতে তাদের পরিচয় ও ঠিকানা দিয়ে বছরখানেক আগে কলকাতায় বাংলাদেশি উপহাইকমিশন এবং সংশ্লিষ্ট সব বিভাগে পরপর চিঠি পাঠানোর পরও কোনো সাড়া মিলছে না।’ এ ছাড়া হোমস থেকে প্রতি মাসে সংশ্লিষ্ট টাস্কফোর্সকেও নিয়মিত রিপোর্ট পাঠানো হয় বলে তিনি বাংলাদেশ প্রতিদিনকে জানান। দক্ষিণ দিনাজপুর জেলায় মানব পাচার ও শিশু অধিকার রক্ষা নিয়ে কাজ করে এমন একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা সোসাইটি ফর পার্টিসিপেটরি অ্যাকশন অ্যান্ড রিফ্লেকশন বা এসপিএআরের জেলা কোঅর্ডিনেটর সুরজ দাশ জানান, বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় আটকদের নাগরিকত্ব সুনিশ্চিত করার পরই দেশে ফেরত পাঠানো হয় তাদের। জেল বা হোমস কর্তৃপক্ষ সাজার মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়া বাংলাদেশি নাগরিকদের তালিকা পশ্চিমবঙ্গ সরকারের মাধ্যমে কলকাতায় বাংলাদেশ উপহাইকমিশনে পাঠায়। সেখান থেকে তা যায় ঢাকায় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে। তারা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে পাঠায় সেই ফাইল। তারপর পুলিশ বাংলাদেশে খোঁজ নিয়ে নিশ্চিত করে যে ভারতে আটক ওই ব্যক্তিরা সত্যিই বাংলাদেশের নাগরিক কিনা। সেই তথ্য আবারও একই পথে ফেরত আসে কলকাতায়। চূড়ান্ত সরকারি অনুমোদন পাওয়ার পরে সংশ্লিষ্ট কারাগার বা হোমসে আটক থাকা বাংলাদেশি নাগরিকদের পুলিশ আর বিএসএফের মাধ্যমে বিজিবির হাতে তুলে দেওয়া হয়। তিনি অভিযোগ করেন, ‘আমাদের এখান থেকে ফাইলগুলো দ্রুতই চলে যায়। সমস্যাটা হয় ওপারে বাংলাদেশে। দীর্ঘদিন সেখানকার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে রিপোর্ট পড়ে থাকে। এদিকে মালদা মহিলা আবাসেও ২০ বাংলাদেশি কিশোরী আটক রয়েছে বলে জানান সুরজ দাস। আটক শিশু-কিশোরদের বেশির ভাগই দিনাজপুর জেলার। এ ছাড়া কুমিল্লা, ঢাকা, কক্সবাজার, বান্দরবান, পাবনা, রাজশাহী, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, ঠাকুরগাঁও, কুড়িগ্রাম, খুলনা, যশোর, জয়পুরহাটের শিশুরা রয়েছে এ হোমসে।

সর্বশেষ খবর