চাঁদপুরে স্কুলছাত্রী সাথী আক্তারের আত্মহননের ঘটনায় বাগাদী গনি উচ্চবিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক আলাউদ্দিন মজুমদারকে আটক করেছে পুলিশ। সাথী সদর উপজেলায় অবস্থিত ওই বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণির ছাত্রী ছিল।
এদিকে ঘটনা তদন্তে গতকাল বেলা ১১টায় জেলা প্রশাসক আবদুস সবুর মণ্ডল, পুলিশ সুপার সামছুন্নাহার, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা উদয়ন দেওয়ান, জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার সফিউদ্দিন ও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওয়ালী উল্লাহ বিদ্যালয়সংলগ্ন শেখ বাড়ীতে ওই স্কুলছাত্রীর পরিবার ও বিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষিকাদের সঙ্গে কথা বলেন। চাঁদপুর সদর থানার ওসি ওয়ালী উল্লাহ ওলি জানান, ফরিদগঞ্জ থেকে আলাউদ্দিনকে আটক করা হয়। জেলা প্রশাসক শিক্ষা অফিসারকে বিদ্যালয়ের কাগজপত্র, শিক্ষকদের উপস্থিতি, পরীক্ষার ফিসহ কোথায় দুর্বলতা আছে তা খতিয়ে দেখার দায়িত্ব দেন। শিক্ষকসহ স্থানীয় বিভিন্ন জনের কাছ থেকে এ বিষয়ে কথাবার্তা শোনেন। এ ঘটনায় সাথীর বাবা দেলোয়ার হোসেন দেলু শেখ গতকাল চাঁদপুর মডেল থানায় মামলা করেন। মামলায় আসামি করা হয়েছে বাগাদী গনি উচ্চবিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক আলাউদ্দিন, সহকারী শিক্ষক জাহাঙ্গীর, জাকির হোসেন ও ফাতেমা বেগমকে। সাথীর মা চায়না বেগম বলেন, ‘বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা জেএসসির মডেল টেস্ট পরীক্ষার ফি বাবদ প্রত্যেক শিক্ষার্থীর কাছে ২৮০ টাকা করে আদায় করেন। রবিবার সাথী স্কুলে গিয়ে সহকারী শিক্ষক ফাতেমা বেগমের কাছে ২০০ টাকা দেয়। ৮০ টাকা কম দেওয়ায় সাথীকে তারা বিদ্যালয়ের বাইরে রোদে দাঁড় করিয়ে রাখেন। পরদিন সোমবার পরীক্ষা দেওয়ার জন্য স্কুলে গেলে শিক্ষকরা তাকে বের করে দেন। সাথী বাড়িতে এসে টাকার জন্য কান্নাকাটি করে। আমি টাকা জোগাড় করতে গেলে সাথী অপমানে রাগে ক্ষোভে ঘরের আড়ার সঙ্গে ফাঁস নিয়ে আত্মহত্যা করে।’ সাথীর বাবা দেলু শেখ বলেন, ‘আমি ওই শিক্ষকদের শাস্তি চাই।’ এদিকে সাথীর আত্মহত্যার খবর ছড়িয়ে পড়লে সোমবার বিকালে এলাকাবাসী অভিযুক্ত শিক্ষকদের বিচার দাবিতে বিদ্যালয়ে ভাঙচুর চালায়। বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ছুটি নিয়ে হজে যাওয়ায় ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মো. আলাউদ্দিন, সহকারী শিক্ষক ফাতেমা বেগম ও শংকরের সঙ্গে এ বিষয়ে কথা বলতে চাইলেও তাদের পাওয়া যায়নি। এলাকাবাসীর মারমুখী অবস্থান দেখে তারা গা ঢাকা দিয়েছেন।