থমকে গেছে সাবেক এসপি বাবুল আক্তারের স্ত্রী মাহমুদা খানম মিতু হত্যা মামলার গতি। হত্যাকাণ্ডের আজ পাঁচ মাস পূর্ণ হলেও এখনো কিনারা হয়নি পুলিশি খাতায় পলাতক খুনের জন্য ভাড়া করা কিলার কামরুল ইসলাম ওরফে মুছা সিকদারের ‘অন্তর্ধান’ রহস্যের। পুলিশ প্রকাশ করতে পারেনি আলোচিত এ খুনের ‘আসল নির্দেশদাতা ও পরিকল্পনাকারীর’ নাম। পুলিশের দাবি, মুছাকে গ্রেফতার করা গেলেও উন্মোচিত হবে এ হত্যার রহস্যজট। তাই মুছাকে ধরিয়ে দিতে পাঁচ লাখ টাকা পুরস্কারও ঘোষণা করেছে চট্টগ্রাম মহানগর পুলিশ (সিএমপি)। তবে পুলিশের এমন ঘোষণাকে ‘নতুন নাটক’ আখ্যায়িত করে মুছাকে জনসমক্ষে আনার দাবি জানিয়েছেন তার স্ত্রী পান্না আকতার। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও গোয়েন্দা পুলিশের সহকারী কমিশনার মো. কামরুজ্জামান বলেন, ‘মামলায় নতুন কোনো অগ্রগতি নেই। তদন্ত চলছে। সময়মতো সবকিছু উপস্থাপন করা হবে।’ তদন্ত-সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, মিতু খুনের পরপরই হত্যাকারীদের গ্রেফতার করতে দেশব্যাপী অভিযান শুরু করে পুলিশ। এক মাসের মধ্যেই এ খুনের সরাসরি অংশগ্রহণকারী এবং অস্ত্র সরবরাহকারীসহ সাতজনকে গ্রেফতার করা হয়। এ ছাড়া পুলিশের সঙ্গে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ নিহত হয়েছেন খুনে সরাসরি অংশগ্রহণকারী রাশেদ ও নবী। দেশ তোলপাড় করা এ হত্যার সর্বশেষ সাফল্য আসে চার মাস আগে। ১ জুলাই গোয়েন্দা পুলিশের চালানো ওই অভিযানে নগরী থেকে শাহজাহান ও রাঙ্গুনিয়া থেকে মুছার ভাই সাইদুল আলম সিকদার ওরফে সাকু মাইজ্যাকে গ্রেফতার করে পুলিশ। এরপর এ খুনের আসামি গ্রেফতার কিংবা মামলার অগ্রগতি নিয়ে আর কোনো সাফল্য দেখাতে পারেনি পুলিশ। এমনকি গত পাঁচ মাসে উদ্ঘাটন করতে পারেনি মিতু হত্যার আসল কারণ। চিহ্নিত করতে পারেনি আসল নির্দেশদাতা ও পরিকল্পনাকারী কে। যদিও পুলিশের দাবি, এখনো কিলিং মিশনে অংশগ্রহণ করা মুছা ও কালুকে গ্রেফতারের জন্য অভিযান চালানো হচ্ছে। পুলিশের পুরস্কার ঘোষণাকে নাটক আখ্যা দিয়ে মুছা সিকদারের স্ত্রী পান্না আকতারের দাবি, ২২ জুন মুছাকে আটক করে নিয়ে যায় সাদা পোশাকের পুলিশ। এর পর থেকে তার কোনো খোঁজ নেই। তারা কোনো পক্ষকে রক্ষা করতে এই নতুন নাটক শুরু করেছে।’ প্রসঙ্গত, ৫ জুন নগরীর জিইসির মোড় এলাকায় ছেলেকে স্কুলবাসে তুলে দিতে যাওয়ার পথে দুর্বৃত্তদের হাতে খুন হন সাবেক এসপি বাবুল আক্তারের স্ত্রী মাহমুদা খানম মিতু। এ ঘটনার পর বাবুল আক্তার বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামাদের আসামি করে মামলা করেন। পুলিশ এ পর্যন্ত অভিযান চালিয়ে সাতজনকে গ্রেফতার করে। এ ছাড়া ৫ জুলাই পুলিশের কথিত বন্দুকযুদ্ধে নিহত হন রাশেদ ও নবী। কিলিং মিশনে অংশ নেওয়া মুছা ও কালু এখনো পুলিশি খাতায় ‘পলাতক’।