শনিবার, ৫ নভেম্বর, ২০১৬ ০০:০০ টা

বিএনপির সমাবেশের বিকল্প স্থান নয়াপল্টন

সরকারের স্বরূপ উন্মোচিত হয়েছে : মির্জা ফখরুল

নিজস্ব প্রতিবেদক

রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সমাবেশের অনুমতি না পাওয়ায় ‘বিকল্প স্থান’ হিসেবে নয়াপল্টনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনের সড়ককেই বেছে নিচ্ছে বিএনপি। ৭ নভেম্বর ‘জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস’ উপলক্ষে এ সমাবেশ করবে দলটি। গতকাল সন্ধ্যায় দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবীর রিজভী বাংলাদেশ প্রতিদিনকে জানান, ‘বিকল্প হিসেবে ৮ নভেম্বর নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে সমাবেশের জন্য অনুমতি চাওয়া হয়েছে। কিন্তু পুলিশের অনুমতি এখনো পাইনি।’ এর আগে সকালে দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘আমরা অবশ্যই বিকল্প জায়গা চাইব। আশা করছি, সেখানে আমরা সমাবেশ করার অনুমতি পাব।’

জানা গেছে, প্রথমে ৭ ও ৮ নভেম্বর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সমাবেশ করার অনুমতি চেয়ে ঢাকা মহানগর পুলিশের কাছে আবেদন করেছিল বিএনপি। কিন্তু জানানো হয়, সোহরাওয়ার্দীতে সমাবেশের অনুমতি দেওয়া হবে না। ঢাকা মহানগর পুলিশের উপকমিশনার (মিডিয়া) মাসুদুর রহমান জানান, ‘একই স্থানে একাধিক  রাজনৈতিক দল সমাবেশ ডাকায় নিরাপত্তাজনিত কারণে কাউকে ৭ ও ৮ নভেম্বর সমাবেশ করতে দেওয়া হবে না।’ পুলিশের এ সিদ্ধান্তের সমালোচনায় মির্জা ফখরুল বলেন, ‘এর মাধ্যমে প্রমাণিত হলো সরকার গণতন্ত্রে বিশ্বাস করে না। ভিন্নমতে বিশ্বাস করে না। তাদের স্বরূপ আবার উন্মোচিত হয়েছে। একটি একদলীয় সরকার ব্যবস্থা যে তারা প্রবর্তন করতে চাচ্ছে, তারই প্রতিফলন আমরা এখানে দেখতে পাচ্ছি। অজুহাত দেখিয়ে অতীতেও তারা (সরকার) সমাবেশ বন্ধ করেছে, এবারও করল।’ জাতীয়তাবাদী স্বেচ্ছাসেবক দলের নবগঠিত কমিটির সভাপতি শফিউল বারী বাবু ও সাধারণ সম্পাদক আবদুল কাদের ভূঁইয়া জুয়েলকে নিয়ে গতকাল দুপুরে শেরেবাংলা নগরে প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের কবরে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। এ সময় তিনি সাংবাদিকদের সঙ্গে সমাবেশের স্থান নিয়ে কথা বলেন। ২৭ অক্টোবর বাবু ও জুয়েলের নেতৃত্বে স্বেচ্ছাসেবক দলের আংশিক কমিটি ঘোষণা করে বিএনপি। বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী, যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, সাংগঠনিক সম্পাদক ফজলুল হক মিলন, স্বেচ্ছাসেবক বিষয়ক সম্পাদক মীর সরফত আলী সপু, নবগঠিত কমিটির সিনিয়র সহসভাপতি মোস্তাফিজুর রহমান, সহসভাপতি গোলাম সারোয়ার, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সাইফুল ইসলাম ফিরোজ ও সাদরাজ্জামান, সাংগঠনিক সম্পাদক ইয়াসীন আলী এ সময় উপস্থিত ছিলেন। ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগরে হিন্দু সম্প্রদায়ের মন্দির ও বাড়ি-ঘরে হামলার ঘটনা প্রসঙ্গে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘দেশে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্ট করতে পরিকল্পিতভাবে ওই ঘটনা ঘটানো হয়েছে। 

একটি মহল, যারা দেশে সমস্যা তৈরি করতে চায়, জনগণের যে মূল দাবি—গণতন্ত্র, তা থেকে দৃষ্টি সরিয়ে দিতে চায়, তারা এ ধরনের হীন কার্যকলাপে জড়িত।’ নাসিরনগরের ঘটনায় প্রশাসনের গাফিলতি ছিল বলেও বিএনপি মহাসচিব অভিযোগ করেন। ‘যে ব্যবস্থা নেওয়া উচিত ছিল, তারা নেয়নি।’দেশে ‘গণতন্ত্র না থাকার কারণেই’ বার বার এমন ঘটনা ঘটছে মন্তব?্য করেন মির্জা ফখরুল। ‘সরকার যেহেতু একদলীয় শাসন ব্যবস্থার দিকে এগিয়ে চলেছে এবং জনগণের অধিকার কেড়ে নিচ্ছে, সে ক্ষেত্রে এ ধরনের অবস্থা স্বাভাবিক। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটছে। মানুষের সমস্যা সমাধান না করে তারা (সরকার) রাজনৈতিকভাবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে ব্যবহার করছে। যার ফলে এ ধরনের ঘটনাগুলো ঘটছে।’

সর্বশেষ খবর