মঙ্গলবার, ৮ নভেম্বর, ২০১৬ ০০:০০ টা

ট্রাম্প-হিলারির জয়ে আশার কিছু নেই

--------এ কে মোমেন

রুহুল আমিন রাসেল

ট্রাম্প-হিলারির জয়ে আশার কিছু নেই

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের এবারের নির্বাচনে ডোনাল্ড ট্রাম্প ও হিলারি ক্লিনটন যিনিই জয়ী হোন না কেন, তাতে তৃতীয় বিশ্বের মুসলিম দেশগুলোর জন্য আশার কিছু নেই বলে মনে করেন নিউইয়র্কে জাতিসংঘ সদর দফতরে বাংলাদেশের সাবেক স্থায়ী প্রতিনিধি ড. এ কে মোমেন। তার মতে, নির্বাচিত হলে হিলারি প্রতিরক্ষা ও টুইস্ট লবি দ্বারা যথেষ্ট প্রভাবিত হবেন। সুতরাং মুসলিম দেশগুলোর খুশি হওয়ার খুব কারণ নেই। আর ট্রাম্প এলে মুসলিমদের তো আনন্দ-উল্লাস করার কোনো কারণই নেই। এবার ট্রাম্প যে বিভাজন তৈরি করেছেন, তা অনেক দিন থাকবে। এতে অনেকেই ভুক্তভোগী হবেন। আমেরিকার সমাজটাকে তিনি ছারখার করে দিয়েছেন। বাংলাদেশ প্রতিদিনকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে সাবেক এই কূটনীতিক মার্কিন নির্বাচন থেকে শিক্ষণীয় বিভিন্ন দিক তুলে ধরে বলেন, ‘মার্কিন নির্বাচনে অর্থের খেলা হলেও সেখানে ক্যাম্পিংয়ে কত টাকা আয় হলো, তা জানাতে হয় প্রতি তিন মাস অন্তর। এমনকি কোথা থেকে চাঁদা পাওয়া গেছে তাও বলতে হয়। আবার সেখানে নির্বাচন ঘিরে এত তর্ক-বিতর্কের পরও সমর্থকরা কেউ মারামারি করে না। এটা আমাদের দেশে নেই। আরেকটা শিক্ষণীয় দিক হলো, সেখানে নির্বাচনে ব্যালেট বাক্স লুট করা কোনো দল সমর্থন করে না। যদিও এটা আমাদের দেশে হরহামেশাই হয়।’ মার্কিন নির্বাচনের বিভিন্ন পদ্ধতি তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘সেখানে সিনেট, কংগ্রেস ও রাষ্ট্রপতি পদের জন্য নির্বাচন হয়। জ্যেষ্ঠ নাগরিকদের ভোট গ্রহণের জন্য তাদের বাসা থেকে গাড়িতে করে ভোটকেন্দ্রে নিয়ে আসেন স্বেচ্ছাসেবকরা। নির্বাচনের দিন অফিস খোলা থাকে না। ভোট গ্রহণ ইলেকটোরাল ও ম্যানুয়াল দুটি পদ্ধতিতেই হয়। আমাদের দেশের মতো ভোটের দিন সেখানে উৎসবমুখর পরিবেশ দেখা যায় না। এমনকি তরুণরা ভোট দিতেও চান না। সেখানে জোর করে ভোট দেওয়ানো হয় না। এর প্রমাণ মিলবে গত নির্বাচনে মাত্র ৩২ শতাংশ ভোটার ভোট দিয়েছেন। অনেকে ভোট নিবন্ধনই করেননি। সেখানে নির্ধারিত তারিখের আগে ভোটার হওয়ার জন্য নিবন্ধন না করলে ভোট দেওয়া যায় না।’ জাতিসংঘে বাংলাদেশের সাবেক এই স্থায়ী প্রতিনিধি বলেন, ‘ট্রাম্পের কথা অনুযায়ী, তিনি নির্বাচিত হলে আমেরিকায় দুর্ভোগ বয়ে আনবেন। ট্রাম্প বলেছেন, আমেরিকার যারা অভিবাসী তাদের বের করে দেওয়া হবে। ট্রাম্প বলেছেন, মার্কিনিদের সৌদিসহ কোনো মুসলিম দেশে যেতে দেবেন না। তার কথায় বোঝা যায়, আমেরিকাসহ পুরো বিশ্বের মানুষের জীবন অতিষ্ঠ করে দেবেন ট্রাম্প। সেই জন্য একটা শঙ্কা আছে। তিনি এগুলো বারবার বলছেন, কিন্তু কতটুকু ট্রাম্প করতে পারবেন, এতে সন্দেহ আছে। ট্রাম্পের বিপরীতে আছেন হিলারি। তিনি অভিজ্ঞ লোক। বিশ্ব সম্পর্কে তার জ্ঞান আছে। বিশ্বের স্থিতিশীলতা রক্ষায় হিলারি চেষ্টা করবেন বলে আমি বিশ্বাস করি। যদিও হিলারি প্রতিরক্ষা ও টুইস্ট লবি দ্বারা যথেষ্ট প্রভাবিত হবেন। সুতরাং মুসলিম দেশগুলোর খুশি হওয়ার খুব কারণ নেই। আর ট্রাম্প এলে মুসলিমদের তো আনন্দ-উল্লাস করার কোনো কারণই নেই। সবচেয়ে দুঃখের বিষয়, আমেরিকায় ৮ নভেম্বর নির্বাচন শেষ হয়ে যায়। কিন্তু এবার ট্রাম্প যে বিভাজন তৈরি করেছেন, তা অনেক দিন থাকবে। এতে অনেকেই ভুক্তভোগী হবেন। আমেরিকার সমাজটাকে তিনি ছারখার করে দিয়েছেন।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর