মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নতুন সরকার (ট্রাম্প প্রশাসন) দায়িত্বভার নিলে বাংলাদেশের জিএসপি সুবিধা পুনর্বহাল হবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ। একই আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন বাংলাদেশে নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত মার্শা স্টিফেনস ব্লুম বার্নিকাট।
গতকাল দুপুরে সচিবালয়ে অনুষ্ঠিত এক বৈঠকে বাণিজ্যমন্ত্রী ও মার্কিন রাষ্ট্রদূত জিএসপি ইস্যুতে এ আশাবাদ ব্যক্ত করেন। এ সময় বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, ‘শ্রমিকদের অধিকার, নিরাপত্তাসহ বিভিন্ন বিষয়ে ইউএসটিআরের (মার্কিন বাণিজ্য দফতর) দেওয়া শর্ত বাংলাদেশ সফলভাবে পূরণ করলেও শুধু রাজনৈতিক কারণেই বাংলাদেশকে দেওয়া সামান্য পরিমাণের জিএসপি সুবিধা স্থগিত করা হয়েছে। এখন বাংলাদেশকে দেওয়া জিএসপির স্থগিতাদেশ প্রত্যাহার না করার কোনো কারণ নেই। নির্বাচিত সরকার ক্ষমতা গ্রহণের পর জিএসপি সুবিধা পুনর্বহাল করবে বলে আমরা আশা করছি।’ যুক্তরাষ্ট্রে সরকার পরিবর্তন হলেও নীতির পরিবর্তন হবে না—এমনটা উল্লেখ করে বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, যদিও নতুন সরকার এলে সেই সরকারের নীতি কেমন হবে এ নিয়ে চাপ থাকে, কিন্তু আমরা আশা করি যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আগের তুলনায় ব্যবসা-বাণিজ্য ভালো হবে। বাংলাদেশ এখন প্রতিবছর দুই বিলিয়ন ডলার মূল্যের পণ্য রপ্তানি করে। এর পরিমাণ আরও বাড়বে বলেও আশা প্রকাশ করেন বাণিজ্যমন্ত্রী। বৈঠক শেষে বাণিজ্যমন্ত্রীর এ বক্তব্যের বিষয়ে জানতে চাইলে মার্কিন রাষ্ট্রদূত সাংবাদিকদের বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে বাংলাদেশি পণ্যে জিএসপি সুবিধা বন্ধ রাজনৈতিক উদ্দেশ্য ছিল না। তবে কী কারণে এটি বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে তা খুঁজে বের করা হচ্ছে। এ বিষয়ে বার্নিকাট বলেন, যদিও এ সুবিধা পেলে বাংলাদেশ খুব বেশি লাভবান হবে তা নয়, তবে এটি সম্মানজনক।
টিকফার বৈঠক নতুন বছর : বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বিষয়ক চুক্তি টিকফা নিয়ে চলতি বছর ডিসেম্বরে দুই দেশের বৈঠক হওয়ার কথা থাকলেও সেটি পিছিয়ে নতুন বছরের মার্চ কিংবা এপ্রিলে হতে পারে বলে জানিয়েছেন মার্কিন রাষ্ট্রদূত। তিনি বলেন, এই সময় যুক্তরাষ্ট্রে নতুন সরকার দায়িত্ব গ্রহণে ব্যস্ত থাকবে। এ ছাড়া যুক্তরাষ্ট্রে বাণিজ্য প্রতিনিধি (ইউএসটিআর) মন্ত্রী পদমর্যাদার। প্রেসিডেন্ট পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে ইউএসটিআরেরও পরির্বতন হয়। নতুন ইউএসটিআর নির্বাচিত হওয়ার পর মার্চ/এপ্রিলের দিকে দুই দেশের মধ্যে টিকফা নিয়ে বৈঠক হবে। বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, ‘যে চেতনা নিয়ে গঠিত হয়েছিল সে চেতনায় টিকফা এগিয়ে যাবে। মার্কিন রাষ্ট্রদূতকে আমরা জানিয়েছি, বাংলাদেশে শ্রমিকদের অধিকার শতভাগ সুরক্ষিত, যা বাংলাদেশের সংবিধানে সংযুক্ত।’ মন্ত্রী নির্বাচিত মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে স্বাগত জানিয়ে বলেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে নির্বাচিত নতুন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ১০০ দিনের কর্মসূচির আওতায় প্রথমেই টিপিপি (ট্রান্স প্যাসিফিক পার্টনারশিপ) চুক্তি বাতিল করার ঘোষণা দিয়েছেন। টিপিপি বাতিল হলে বাংলাদেশ ব্যবসায়িকভাবে লাভবান হবে।