বৃহস্পতিবার, ২৯ ডিসেম্বর, ২০১৬ ০০:০০ টা

পর্যটকে মুখরিত রাঙামাটি

রাঙামাটি প্রতিনিধি

পর্যটকে মুখরিত রাঙামাটি

শীত মৌসুম শুরু হতে না হতেই পর্যটকদের পদচারণায় মুখরিত হয়ে উঠেছে রাঙামাটি। অবকাশ কাটাতে প্রতিদিন অগণিত পর্যটক আসছেন নৈসর্গিক এ পাহাড়ি জনপদে। পর্যটকদের সরব উপস্থিতি রাঙামাটি যেন উৎসবের নগরীতে পরিণত হয়েছে। শহরজুড়ে পর্যটকদের ভিড়। রাঙামাটির নৈসর্গিক আবেশ আর দর্শনীয় স্থান ও নিদর্শনগুলো পর্যটকদের আকর্ষণ করে সহজেই। এসব আকর্ষণীয় স্পট দেখতে প্রতি বছর শীত মৌসুমে পর্যটকরা এসে ভিড় জমান। জানা যায়, এবারও মৌসুমের শুরুতেই অসংখ্য পর্যটকের আনাগোনা বেড়েছে। রাঙামাটি বেড়াতে আসা পর্যটকদের ভিড়ে সবকটি আবাসিক হোটেল, মোটেল, সরকারি রেস্ট হাউসে লোকজনের ভিড়। কোথাও রুম খালি নেই। লেগে রয়েছে অগ্রিম বুকিংও। বর্তমানে রাঙামাটিতে পর্যটকদের আগমন বেড়েছে বহুগুণ। সাপ্তাহিক ছুটির দিনসহ ইংরেজি নববর্ষকে সামনে রেখে পিকনিক পার্টির আগমনও লক্ষণীয়। তবে পর্যটন কমপ্লেক্সে বেড়াতে এসে অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন অনেক পর্যটক। রাঙামাটি পর্যটন কমপ্লেক্সের ব্যবস্থাপক আলোক বিকাশ চাকমা জানান, চলতি মৌসুমে ৪ থেকে ৫ হাজার পর্যটকের আগমন ঘটেছে। বর্তমানে সবকটি রুম বুকিং রয়েছে। লেগে আছে অগ্রিম বুকিং। পর্যটন বিভাগটি রাঙামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদের একটি বিভাগ। পরিষদের উদ্যোগে পর্যটন উন্নয়নের একটি প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে। এটি বাস্তবায়ন হলে আশা করি পর্যটকদের সব অভিযোগ মুছে যাবে। পর্যটকদের অভিযোগ, রাঙামাটি পর্যটন মোটেলে রাজস্ব আয় বাড়লেও পর্যটকদের জন্য তেমন কোনো সুবিধা বাড়ছে না। পর্যাপ্ত সুবিধার অভাবে বেড়াতে এসে মনোক্ষুণ্ন করে ফিরে যাচ্ছেন বহু পর্যটক। অথচ শীত মৌসুমের শুরুতেই পর্যটন মোটেলে রাজস্ব আয় আগের সব রেকর্ড ছাড়িয়ে গেছে। পরিবার-পরিজন নিয়ে আনন্দ উপভোগ করতে আসা এসব লোক ছুটে যাচ্ছে পর্যটন কমপ্লেক্সের ঝুলন্ত ব্রিজে। কিন্তু ব্রিজ ছাড়া দেখার ও উপভোগ করার মতো তেমন কোনো সুবিধা পর্যটন মোটেলে নেই। শিশুদের জন্য প্রয়োজনীয় দোলনা ও বসার জন্য টুল, ছাতা কিছুই নেই। গাড়ি পার্কিংয়ের জন্য ৩০ টাকা নিলেও আলাদা কোনো সুবিধা বাড়ানো হয়নি। অথচ প্রবেশমূল্য ১০ টাকা থেকে বাড়ানো হয়েছে ২০ টাকা। কর্তৃপক্ষের অবহেলার কারণে নিরাপত্তারও বিঘ্ন ঘটছে। অনেক সময় কিছু মাস্তান এসে পর্যটকদের নাজেহাল করে। অটোরিকশাওয়ালারা জিম্মি করে আদায় করছে ২-৩ গুণ বেশি ভাড়া। বোটওয়ালারা নিচ্ছে ইচ্ছামতো ভাড়া। তারা পর্যটনের কোনো নিয়মনীতির তোয়াক্কাই করে না। এসব ক্ষেত্রে যোগসাজশের অভিযোগ উঠেছে কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে। যে কারণে গচ্চা যেতে বসেছে সরকারের অনেক রাজস্ব। পর্যটন মোটেলে একটি মাত্র হস্তশিল্প দোকান থাকায় একচ্ছত্র ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে। রাঙামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদ মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা এসএম জাকির হোসেন চৌধুরী জানান, রাঙামাটি পর্যটন কমপ্লেক্সের নিয়ন্ত্রণ জেলা পরিষদ পেয়েছে। তাই পর্যটন বিস্তারের দায়িত্ব জেলা পরিষদের। এ জন্য স্থানীয় আবাসিক হোটেল, রেস্টুরেন্ট, বোট মালিকদের নিয়ে নীতিমালা প্রণয়নের পরিকল্পনা রয়েছে। এ নীতিমালা বাস্তবায়ন হলে পর্যটন সেক্টরে ব্যাপক উন্নয়ন হবে। বাড়বে পর্যটকদের সুবিধা। এ ছাড়া পর্যটকদের জন্য ট্যুরিস্ট পুলিশের নিরাপত্তা বিষয়ে বিশেষ নজরদারি বাড়ানো হবে। অন্যদিকে রাঙামাটি জেলাজুড়ে রয়েছে অসংখ্য দর্শনীয় ও উপভোগ্য স্থান। গড়ে উঠেছে অনেক দৃষ্টিনন্দন পর্যটন স্পট। ভ্রমণপিপাসু ও প্রকৃতিপ্রেমী মানুষ প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে মুগ্ধ হলেও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের অব্যবস্থাপনায় ম্লান করে দিয়েছে সব অর্জন।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর