মঙ্গলবার, ১০ জানুয়ারি, ২০১৭ ০০:০০ টা

প্যান্ট চুরিসহ আরও ৪ মামলায় সাংবাদিক নাজমুলের ২৬ দিন রিমান্ড চায় পুলিশ

আদালত প্রতিবেদক

ঢাকার আশুলিয়া থানায় গত বছরের করা প্যান্ট চুরির মামলায় সন্দেহ করে সাংবাদিক নাজমুলকে পাঁচ দিন রিমান্ডে নেওয়ার আবেদন করেছে পুলিশ। এ ছাড়া আশুলিয়া থানার পুরনো আরও তিন মামলায় সন্দেহ করে ২১ দিন রিমান্ডে নেওয়ার আবেদন করা হয়েছে আদালতে। এই চার মামলার রিমান্ড শুনানির জন্য আগামী ১১ ও ১৬ জানুয়ারি দিন ধার্য করেছে আদালত। আশুলিয়া পুলিশের প্রতিহিংসা ও নিষ্ঠুরতার শিকার নাজমুল হুদাকে এর আগে দুই দফা রিমান্ডে নিয়ে অমানুষিক নির্যাতন চালানো হয়েছে বলে অভিযোগ রয়েছে। প্যান্ট চুরির মামলায় রিমান্ড শুনানির জন্য গতকাল তাকে কারাগার থেকে আদালতে হাজির করা হয়। কিন্তু সাংবাদিক নাজমুল গুরুতর অসুস্থ থাকার কারণে ঢাকার জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম ফাইরুজ তাসনীম আগামী ১৬ জানুয়ারি সুস্থতা সাপেক্ষে রিমান্ড শুনানির জন্য নতুন এ দিন ধার্য করেন। এর আগে আশুলিয়া থানা পুলিশ সন্দেহ করে গত বছরের পুরাতন এ মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে রিমান্ডে নেওয়ার আবেদন করে। যদিও আশুলিয়া থানার ২৫(১২)১৬ নম্বর মামলার বাদী মো. ইব্রাহীম আহম্মেদ এজাহারে সাংবাদিক নাজমুলের বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ করেননি। তবুও আশুলিয়া থানা পুলিশের সন্দেহ, সাংবাদিক নাজমুল এই মামলার ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকতে পারেন। তাই মামলার সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে রিমান্ডে নিয়ে ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদ করা প্রয়োজন। এ ছাড়া আশুলিয়া থানার পুরাতন আরও পৃথক তিন মামলায় সন্দিগ্ধ আসামি হিসেবে সাংবাদিক নাজমুল হুদাকে ২১ দিন রিমান্ডে নেওয়ার আবেদন করেছে পুলিশ। ওই রিমান্ড আবেদনের শুনানির জন্য আগামী ১১ জানুয়ারি দিন ধার্য করেছে আদালত। এর মধ্যে গত বছরের দায়ের করা বিশেষ ক্ষমতা আইনের দুটি পুরাতন মামলায় আশুলিয়া থানার পরিদর্শক মো. জাহিদুল ইসলাম সাত দিন করে মোট ১৪ দিন রিমান্ডে নেওয়ার আবেদন করেন আদালতের কাছে। এ ছাড়া গত বছরের দায়ের করা পেনাল কোডের একটি পুরাতন মামলায় আশুলিয়া থানার পরিদর্শক মো. সহিদুল ইসলাম ৭ দিন রিমান্ডে নেওয়ার আবেদন করেন। পরে ঢাকার মুখ্য বিচারিক হাকিম আদালত এই তিন মামলায় সন্দিগ্ধ আসামি হিসেবে গ্রেফতার দেখানোর আদেশ দিয়ে মোট ২১ দিনের রিমান্ড শুনানির জন্য আগামী ১১ জানুয়ারি দিন ধার্য করেন। তিন মামলার বাদীরা কেউই এজাহারে সাংবাদিক নাজমুল হুদার বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ করেননি। এর আগে পুলিশ বাদী হয়ে আশুলিয়া থানায় তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি আইনে একটি মামলা করে। ওই মামলায় দুই দফা রিমান্ড শেষে বাংলাদেশ প্রতিদিনের সাভার প্রতিনিধি নাজমুল হুদা বর্তমানে কারাগারে আছেন। মামলার শুনানিতে আইনজীবীরা আদালতকে বলেছিলেন, এই মামলার অভিযোগের বিন্দুমাত্র সত্যতা নেই। বাংলাদেশ প্রতিদিন যে সংবাদ প্রকাশ ও প্রচার করেছে, সেই সংবাদের কারণে শ্রমিক আন্দোলনে উসকানি বা সরকারবিরোধী উসকানি দেওয়া হয়নি। যা ঘটনা শুধু সেটুকুই প্রচার করা হয়েছে। সাংবাদিকতার নীতিমালা অনুযায়ী ওই সংবাদে পুলিশ, বিজিএমইএ নেতাসহ নানা তরফের বক্তব্য যুক্ত রয়েছে। আসলে পূর্বের শত্রুতার কারণে অসাধু ব্যক্তিদের ব্যক্তিস্বার্থ হাসিলের জন্য শ্রমিক উসকানির অছিলা দিয়ে ক্ষমতার অপব্যবহার করছে। জার্মান বার্তা সংস্থা ডয়েচে ভেলের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের সাংবাদিক নাজমুল হুদার বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলায় পুলিশ তথ্য বিকৃতি করেছে। এ ধরনের মামলার মাধ্যমে পুলিশ সাংবাদিকদের চাপের মুখে রাখতে চায়। নাজমুলের বিরুদ্ধে যে অভিযোগ করা হয়েছে তা মিথ্যা এবং হয়রানিমূলক। আইন ও সালিশ কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত নির্বাহী পরিচালক নূর খান বলেন, আমরা দেখেছি সাংবাদিক নাজমুল কোনো মিথ্যা বা উদ্দেশ্যমূলক তথ্য পরিবেশন করেননি। বরং পুলিশই এজাহারে তথ্য বিকৃতি ঘটিয়েছে। রিপোর্টার্স ইউদাউট বর্ডার হয়রানিমূলক মিথ্যা মামলায় গ্রেফতার করা সাংবাদিক নাজমুলের অবিলম্বে মুক্তি দাবি করেছে।

সর্বশেষ খবর