বুধবার, ২৫ জানুয়ারি, ২০১৭ ০০:০০ টা

অস্ত্র ও ইয়াবা ব্যবসায় নেমেছে রোহিঙ্গারা

রোহিঙ্গা হালচাল ২

মুহাম্মদ সেলিম, চট্টগ্রাম

মিয়ানমার থেকে আসা অস্ত্র ও মাদক ব্যবসার সিংহভাগ নিয়ন্ত্রণ করছে রোহিঙ্গারা। এ ব্যবসার নিয়ন্ত্রণে রয়েছে অর্ধশতাধিক মিয়ানমার নাগরিক। অবৈধ পথে মিয়ানমার থেকে অস্ত্র ও ইয়াবা আনার পর তা ছড়িয়ে দিচ্ছে দেশের বিভিন্ন জায়গায়। চট্টগ্রাম মাদক নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের গোয়েন্দা শাখার সহকারী পরিচালক জিল্লুর রহমান বলেন, ‘মিয়ানমার থেকে আসা ইয়াবা ব্যবসার বড় একটি অংশ নিয়ন্ত্রণ করে রোহিঙ্গা নাগরিকরা। বিগত সময়ে মাদক পাচারে অনেক রোহিঙ্গাকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ইয়াবা ব্যবসা প্রতিরোধ করতে মাদক নিয়ন্ত্রণ অধিদফতর জোরালো কাজ করছে।’ চট্টগ্রাম জেলা পিবিআইর পরিদর্শক সন্তোষ চাকমা বলেন, ‘বিগত সময়ে অভিযানে একে সিরিজসহ বিভিন্ন অত্যাধুনিক অস্ত্র উদ্ধার করা হয়। অস্ত্রগুলো অবৈধ পথে মিয়ানমার থেকে কক্সবাজার ও বান্দরবানে আসে। পরবর্তী সময়ে তা চট্টগ্রামে আনা হয়। এসব অস্ত্র ব্যবসায় জড়িতদের বেশির ভাগই রোহিঙ্গা নাগরিক।’

অনুসন্ধানে জানা যায়, মিয়ানমার থেকে আসা অস্ত্র চোরাচালানের নিয়ন্ত্রণ করছে বাংলাদেশি ও মিয়ানমারের কমপক্ষে ১৬ নাগরিক। তারা  মিয়ানমারভিত্তিক বিভিন্ন জঙ্গি সংগঠনের নেতা। অস্ত্র চোরাচালানের মূল সমন্বয়ক হিসেবে আছেন মিয়ানমারের মংডুর বুজিগাঁও এলাকার আরএসও নেতা মাস্টার আইয়ুব। তার সহযোগী হিসেবে রয়েছেন রোহিঙ্গা নাগরিক মো. ইসমাইল, মো. হামিদ উল্লাহ, মো. জুবায়ের ও নুর খান। মিয়ানমার সীমান্ত থেকে টেকনাফে অস্ত্রের চালান আনার দায়িত্ব পালন করেন হাফেজ জালাল, হাফেজ নয়ন ও ওসমান। অস্ত্রগুলো বাংলাদেশে আনার পর রাখা হয় রোহিঙ্গা শরণার্থী শিবিরের আশপাশ এলাকায়। পরবর্তী সময়ে অস্ত্রগুলো দেশের বিভিন্ন এলাকায় পাচার করা হয়। বাংলাদেশ-মিয়ানমারের কমপক্ষে ৮০ পয়েন্ট দিয়ে বানের পানির মতো করেই ঢুকছে ইয়াবা। মিয়ানমার থেকে আসা ইয়াবার চালান দেশের বিভিন্ন জায়গায় পাচারে জড়িত এমন ৮০৪ জনের নাম পেয়েছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও মাদক নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর। এদের ৪০ জন মিয়ানমারের নাগরিক। তারা হলেন মিয়ানমারের সাবেক নাসাকা সেক্টর-১-এর আবদুল গফুর, খায়নখালীর রশীদ, নাসাকা সেক্টর-৭ এলাকার ইব্রাহিম, মংডু থানার শফি, হেতেলাপাড়ার সাদেক, আমতলা থানার আবদুল করিম, মৌলভী ছিদ্দিক আহমেদ, মহিবুল্লাহ, করিম, আবু আহম্মেদ, পোয়াখালীর কামাল, শফি, সাইদুল, শাহ আলম, বুজি জহির, ছোট বুজুগীর বিল এলাকার আবদুল মোতালেব, নয়াপাড়ার হামিদ হোসেন, ওই এলাকার সৈয়দুল আমিন, ইউসুফ, গজুবিল এলাকার কালা সোনা, আলম, মংডু থানার গোনাপাড়ার রশীদ, সংসমার জোবায়ের আহমেদ, গোনাপাড়ার হারুন, সুদাপাড়ার আলী মোহাব, ফয়েজিপাড়ার মো. সৈয়দ, নাপিতের ডেইলের নুরু, গোনাপাড়ার জোহার, মগপাড়ার অং সং, ফয়েজিপাড়ার সৈয়দ করিম, একই এলাকার জয়নাল ওরফে জইন্যা, জুলাপাড়ার আসাদুল্লাহ, একই এলাকার হেফজুর রহমান ও আরেফ আলী।

সর্বশেষ খবর