বুধবার, ২৫ জানুয়ারি, ২০১৭ ০০:০০ টা

এফবিসিসিআইতে হাইব্রিড প্রার্থী চান না ব্যবসায়ীরা

নিজস্ব প্রতিবেদক

ব্যবসায়ী-শিল্পপতিদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআইর আসন্ন নির্বাচনে কোনো হাইব্রিড প্রার্থী চান না সারা দেশের ব্যবসায়ীরা। তাদের দাবি, সভাপতিসহ সব পরিচালক পদে সরাসরি নির্বাচন দিতে হবে। এ জন্য সংস্কার করতে হবে বাণিজ্য সংগঠন আইন। আগামী ৮ ফেব্রুয়ারি সম্ভাব্য তফসিল ঘোষণাকে কেন্দ্র করে সভাপতি পদের দুই প্রার্থী জসিম উদ্দিন ও সফিউল ইসলাম মহিউদ্দিন এখন মুখোমুখি।

গতকাল রাজধানীর ইস্কাটনের লেডিস ক্লাবে এফবিসিসিআই রিফর্মস বাস্তবায়ন কমিটি আয়োজিত আলোচনা সভায় অংশ নেওয়া ব্যবসায়ী নেতারা এ দাবি করেন। এফবিসিসিআই পরিচালক ও সাবেক সহসভাপতি হেলাল উদ্দিনের সভাপতিত্বে এবং পরিচালক আবু নাসেরের পরিচালনায় আলোচনা সভায় সংগঠনটির সাবেক সহসভাপতিরা বক্তব্য দেন। গতকাল সকালে শুরু হওয়া এ আলোচনা চলে বিকাল সাড়ে ৩টা পর্যন্ত। আলোচনা সভায় এফবিসিসিআইর সাবেক প্রথম সহসভাপতি জসিম উদ্দিন বলেন, সবাই চান এফবিসিসিআইতে সরাসরি নির্বাচন হোক। এ জন্য আইন সংস্কার করতেই হবে। কামাল উদ্দিন আহমেদ বলেন, মনোনীত পরিচালক প্রথা বাতিলে করে সরাসরি নির্বাচন করতে ২০০২ সালে জারি করা এসআরওটি সরকার বাতিল করলেই যথেষ্ট। মোস্তফা আজাদ চৌধুরী বাবু বলেন, অতীতে বিভিন্ন সময়ে সংস্কার প্রক্রিয়া অনেক দূর এগোলেও রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত না হওয়ায় তা বাস্তবায়ন হয়নি। এফবিসিসিআইর প্রথম সহসভাপতি সফিউল ইসলাম মহিউদ্দিন বলেন, অতীতে মনোনীত পরিচালক প্রথার অপব্যবহার হয়েছে। সরাসরি ভোটে নির্বাচন না হলে তা বয়কট করতে ব্যবসায়ী নেতাদের দাবি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, নির্বাচন বয়কট ও বর্জনে কী হয়, তা আপনারা জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দেখেছেন। আবুল আলম চৌধুরী বলেন, এবার সভাপতি পদে জসিম উদ্দিন ও সফিউল ইসলাম মহিউদ্দিন এ দুজন প্রার্থী আছেন, তারা বসে ঠিক করলেই সংকটের সমাধান সম্ভব। বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজ-বিসিআই পরিচালক নিজাম উদ্দিন বলেন, এফবিসিসিআইতে আর হাইব্রিড প্রার্থী চাই না। সাধারণ ব্যবসায়ীদের মাঝ থেকে উঠে আসা নেতা চাই। মানিকগঞ্জ চেম্বারের মোসাদ্দেক তবারুকুল টিটু বলেন, নির্বাচনের সময় হুমকি-ধমকি আসে। তখন ভয়ে ফোন বন্ধ রেখে ঢাকার বাইরে অবস্থান করি। বাংলাদেশ উইমেন চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজ-বিডব্লিউসিসিআই সভাপতি সেলিমা আহমাদ ব্যবসায়ীদের এই আলোচনা সভায় বহিরাগতদের উপস্থিতি প্রসঙ্গে বলেন, বাহির থেকে এখানে লোক আনা হয়েছে, হাততালি দিতে নাকি অন্য কোনো উদ্দেশ্যে। ২০০৩ সাল থেকে যত সভাপতি, প্রথম সহসভাপতি ও সহসভাপতি দায়িত্ব পালন করেছেন, তারা সবাই সরাসরি নির্বাচন দিতে ব্যর্থ হয়েছেন। এফবিসিসিআই পরিচালকদের মধ্যে শোয়েব চৌধুরী বলেন, সিন্ডিকেটমুক্ত এফবিসিসিআই চাই। শেখ ফজলে ফাহিম আয়োজকদের উদ্দেশে বলেন, সরাসরি ভোটের কোনো বিকল্প নেই। তবে পরিচালনা পর্ষদের বাইরে এসে সবাই সস্তা দাবি তুলে সংস্কার চান। এখানে ব্যানারে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছবি টানিয়েছেন। আপনারা কার অনুমতি নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর ছবি ব্যানারে ছেপেছেন। এই নাম ব্যবহার করবেন না। ঢাকা চেম্বারের সাবেক সহসভাপতি সেকিল চৌধুরী বলেন, এফবিসিসিআইতে স্বচ্ছতা চাই। সরাসরি নির্বাচন চাই। রি-রোলিং মিলস অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মিজানুর রহমান বাবু বলেন, আমরা প্রধানমন্ত্রীর অপেক্ষায় রইলাম। তিনি সরাসরি নির্বাচনের ঘোষণা দেবেন। নাটোর চেম্বারের সাবেক সভাপতি আবদুল মান্নান বলেন, সংস্কার না হলে নির্বাচন বয়কট করুন। পুরান ঢাকার ব্যবসায়ী নেতাদের মধ্যে হাজী হাফেজ হারুন বলেন, নির্বাচন ঘিরে প্রধানমন্ত্রীর নাম ভাঙানো হচ্ছে। যতদূর জানি, প্রধানমন্ত্রী কাউকে সিগন্যাল দেননি। হাজী আবু বকর বলেন, সরাসরি নির্বাচনের জন্য প্রয়োজনে পরিচালকরা বোর্ড থেকে পদত্যাগ করুন। আরও বক্তব্য দেন এফবিসিসিআইর সাবেক প্রথম সহসভাপতি মোহাম্মদ আলী, আবুল কাশেম আহমেদ, মনোয়ারা হাকিম আলী, সাবেক সহসভাপতি কাজী শফিকুল ইসলাম, এফবিসিসিআই পরিচালক আবু মোতালেব, ব্যবসায়ী নেতা ও শরীয়তপুর জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান খোকা শিকদার, ইনডেন্টিং অ্যাসোসিয়েশনের প্রতিনিধি সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন, সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির সভাপতি খন্দকার এনায়েত উল্লাহ, এসএমই ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি আলী জামান প্রমুখ।

সর্বশেষ খবর