সোমবার, ৩০ জানুয়ারি, ২০১৭ ০০:০০ টা

রাজশাহীতে বিএনপি রক্ষা কমিটি গঠন

কাজী শাহেদ, রাজশাহী

নতুন নেতৃত্ব ঘোষণার পর থেকেই নতুন জটিলতায় পড়েছে রাজশাহী বিএনপি। কমিটি প্রত্যাখ্যান করে বিক্ষুব্ধ নেতা-কর্মীরা গঠন করেছেন বিএনপি রক্ষা কমিটি। এ নিয়ে দলটির ভিতরে যেমন চলছে অস্বস্তি, তেমনি সাবেক নেতারাও হতাশ। আর এ নিয়ে রাজশাহী বিএনপির রাজনীতিতে এখন আলোচনায় জেলা বিএনপির  নতুন সভাপতি তোফাজ্জল হোসেন তপু। নারী কেলেঙ্কারি সংক্রান্ত তপুর অতীত ঘটনা নিয়ে নগরীজুড়ে পোস্টারিং করা হয়েছে। তবে নতুন দায়িত্ব পাওয়া নেতারা বলছেন, শিগগিরই এ সমস্যা কেটে যাবে। প্রায় সাত বছর পর গত ২৭ ডিসেম্বর রাজশাহী জেলা ও মহানগর বিএনপির নতুন কমিটি ঘোষণা করে কেন্দ্র। নতুন কমিটিতে জেলায় তোফাজ্জল হোসেন তপুকে সভাপতি ও মতিউর রহমান মন্টুকে সাধারণ সম্পাদক এবং নগরে মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুলকে সভাপতি ও শফিকুল হক মিলনকে সাধারণ সম্পাদক করা হয়। এ কমিটি ঘোষণার পর থেকে দলীয় কার্যালয়ে তালা ঝুলিয়ে তা বাতিলের দাবি জানিয়ে আসছেন বিএনপির সিনিয়র নেতা মিজানুর রহমান মিনুর সমর্থকরা। ইতিমধ্যে তারা কয়েক দফা সংবাদ সম্মেলন করেছেন। আগের কমিটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মনিরুজ্জামান শরীফ জানান, মিজানুর রহমান মিনুকে ছাড়া তারা নতুন কমিটি মানেন না। বর্তমান কমিটি বাতিল করে মিনুর নেতৃত্বে কমিটি করতে হবে। বোয়ালিয়া থানা বিএনপি সভাপতি সাইদুর রহমান পিন্টু জানান, বর্তমান কমিটি বিতর্কিত এবং অযোগ্য নেতারা ঠাঁই পেয়েছেন। ফলে এ কমিটি বাতিল করে কাউন্সিলের মাধ্যমে নতুন কমিটি করতে হবে। অন্যথায় তারা বিএনপি রক্ষা কমিটির ব্যানারে কেন্দ্রীয় কর্মসূচি পালন করবেন। নতুন কমিটি গঠনের পর দলীয় কার্যালয়ে যে তালা ঝুলানো হয়েছিল তা এখনো খোলা হয়নি। ফলে সেখানে যান না বর্তমান কমিটির নেতারা। আর কমিটি নিয়ে বিএনপি নেতাদের এমন আচরণে হতাশ দলটির সাবেক ও প্রবীণ নেতারা। দলটির সাবেক সভাপতি অ্যাডভোকেট আবদুল হাই জানান, বিএনপি নেতাদের এমন আচরণ মনে রক্ত ক্ষরণের সৃষ্টি করে। তিনি এ নিয়ে হতাশ। দলটির সাবেক সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট এনামুল হক জানান, দলীয় কার্যালয়ে তালা ঝুলিয়ে দেওয়ার এমন ঘটনা তাকে হতাশ করে। বর্তমান সংকট থেকে উত্তরণে দলের ভিতরে গণতন্ত্রের চর্চা ও কাউন্সিলের মাধ্যমে নেতৃত্ব বদলের পরামর্শ প্রবীণ এই নেতাদের। এদিকে হঠাৎ করে তোফাজ্জল হোসেন তপুর ছবি দিয়ে নগরীজুড়ে পোস্টারিং করা হয়েছে। তাতে তপুর অতীতের নারী কেলেঙ্কারির ঘটনা তুলে ধরা হয়েছে। জেলা বিএনপির সভাপতি তোফাজ্জল হোসেন তপু জানান, কারা এমনটি করেছে তিনি বুঝতে পারছেন। কিন্তু কাউকে দেখতে না পাওয়ায় কিছু করতে পারছেন না। তবে মামলার প্রস্তুতি নিচ্ছেন বলেও জানান তিনি। আর জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট মতিউর রহমান মন্টুর দাবি, দ্রুতই কেটে যাবে এ সমস্যা। যারা বিএনপি রক্ষা কমিটির নামে আন্দোলন করছেন, তাদের সঙ্গে গুটিকয়েক নেতা ছাড়া কেউ নেই। আর নগর বিএনপির সভাপতি মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুল মনে করেন, বর্তমান কমিটির নেতৃত্বে বিএনপি আরও শক্তিশালী হবে। যারা আন্দোলন করছেন, তাদের সঙ্গে কথা হচ্ছে। দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গ করলে এ নিয়ে কেন্দ্রকে জানানো হবে।

সর্বশেষ খবর