শনিবার, ১ এপ্রিল, ২০১৭ ০০:০০ টা

শহীদুল্লাহ কায়সারের স্মৃতিতর্পণ করা হয়নি : অর্থমন্ত্রী

সাংস্কৃতিক প্রতিবেদক

শহীদুল্লাহ কায়সারের স্মৃতিতর্পণ করা হয়নি : অর্থমন্ত্রী

বাংলা একাডেমির কবি শামসুর রাহমান সেমিনার কক্ষে গতকাল বিকালে শমী কায়সার নির্মিত প্রামাণ্যচিত্র ‘শহীদুল্লাহ কায়সার : সংশপ্তক’-এর প্রিমিয়ার অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত, বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ। —বাংলাদেশ প্রতিদিন

অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত বলেছেন, আমি কখনো শহীদুল্লাহ কায়সারকে দেখিনি। ‘সংশপ্তক’ উপন্যাসের মাধ্যমেই শহীদুল্লাহ কায়সারের সঙ্গে আমার পরিচয়। উপন্যাসটি পড়তে গিয়ে আমার টলস্টয়ের ‘ওয়ার অ্যান্ড পিস’-এর সেই বিশাল ক্যানভাসের কথাই মনে পড়ে। পড়তে পড়তে আমার মনে হলো আমরা তো সত্যি তার তেমন খোঁজখবর করিনি, তার স্মৃতিতর্পণ ইত্যাদি করা হয়নি।

তার মেয়ে শমী কায়সার নির্মিত প্রামাণ্যচিত্র ‘শহীদুল্লাহ কায়সার : সংশপ্তক’-এর প্রিমিয়ার অনুষ্ঠানে এসে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব বলেন। গতকাল বিকালে বাংলা একাডেমির কবি শামসুর রাহমান সেমিনার কক্ষে অনুষ্ঠিত হয় এ আয়োজন।

শহীদুল্লাহ কায়সার পত্নী সাবেক সংসদ সদস্য অধ্যাপক পান্না কায়সারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও বক্তৃতা করেন বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ, একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির সভাপতি শাহরিয়ার কবীর, দৈনিক জনকণ্ঠের উপদেষ্টা সম্পাদক তোয়াব খান, দৈনিক সংবাদের ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক খন্দকার মনীরুজ্জামান, দৈনিক ইত্তেফাকের নির্বাহী সম্পাদক শাহীন রেজা নূর, মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের ট্রাস্টি সারোয়ার আলী। বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল বলেন, নীতির প্রশ্নে কখনো আপস করেননি শহীদুল্লাহ কায়সার। সম্ভ্রান্ত পরিবারের সন্তান হয়েও নিজের জীবন বিলিয়ে দিয়েছেন সাধারণ মানুষের কল্যাণের জন্য। শহীদুল্লাহ কায়সারের স্মৃতিকথা ‘রাজবন্দীর রোজনামচা’ প্রসঙ্গ টেনে তোফায়েল আহমেদ বলেন, তিনি বারবার গ্রেফতার হয়েছেন, জেল খেটেছেন। ঊনসত্তরের গণঅভ্যুত্থানে শহীদুল্লাহ কায়সারের ভূমিকাও কৃতজ্ঞচিত্তে স্মরণ করেন তিনি। তিনি বলেন, সে সময় দুজন মানুষ আমাকে নানাভাবে পরামর্শ দিয়ে সহায়তা করেছিলেন। একজন সাংবাদিক সিরাজ উদ্দিন হোসেন ও অন্যজন শহীদ ভাই। পাকিস্তানের পত্রিকা, টিভি আর রেডিওগুলো তো আমাদের খবর প্রচার করত না। কিন্তু সংবাদ ও ইত্তেফাক তখন বড় ভূমিকা পালন করেছিল। তার পেছনে দুজন মানুষের ছিল বড় অবদান। শহীদুল্লাহ কায়সারের মেয়ে শমী কায়সার বলেন, বাবাকে নিয়ে কাজ করতে গিয়ে মনে হলো এ এক বিশাল জগৎ। ছোট্ট ফ্রেমে কোথা থেকে শুরু করব, তার কিছুই বুঝে উঠতে পারছিলাম না। বাবাকে আমি নতুনভাবে আবিষ্কার করলাম। বাবাকে ঠিক যতটুকু উপস্থাপন করা দরকার, ঠিক ততটুকুই আমি প্রামাণ্যচিত্রে উপস্থাপন করেছি। তার রাজনৈতিক জীবন, জেলজীবন, সাহিত্য জীবনকে তরুণ প্রজন্মের উপযোগী করেই আমি উপস্থাপন করেছি।

ছায়ানটের বর্ষবরণের অর্ধশতবর্ষ পূর্তি : ১৯৬৭ সালে কবিগুরু রবীন্দ্রনাথের সব সৃষ্টিকে নিষিদ্ধ করে পাকিস্তানি স্বৈরশাসক। তাদের সেই রক্তচক্ষু উপেক্ষা করে রবিঠাকুরের গানে গানে রমনার বটমূলে প্রভাতী অনুষ্ঠান শুরু করে ছায়ানট। এ বছর সেই আয়োজনের ৫০ বছর। অর্ধশত বর্ষপূর্তির এই আয়োজন উদযাপনে ব্যাপক কার্যক্রম হাতে নিয়েছে ছায়ানট। গতকাল সন্ধ্যায় ছিল বর্ষবরণের ৫০ বছরপূর্তির কার্যক্রমের দ্বিতীয় আয়োজন।

‘আনন্দ, বাঙালির আত্মপরিচয়ের সন্ধান ও অসাম্প্রদায়িকতা’ প্রতিপাদ্যের ওপর ৫০ বছরপূর্তি উদযাপনের এ দ্বিতীয় আয়োজন সাজানো হয়—নববর্ষ উদযাপন অভিযাত্রার স্মারণিক প্রদর্শনী, নৃত্য, শুদ্ধসঙ্গীত, পাঠ্যাবৃত্তি ও গান দিয়ে। ছায়ানট ভবনে অনুষ্ঠিত এ আয়োজনের অন্যতম আকর্ষণ ছিল স্মারণিক প্রদর্শনী।

বিভিন্ন সময়ের আয়োজনের আলোকচিত্র ও বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত আলোকচিত্র দিয়ে সাজানো এই প্রদর্শনীর মধ্যে উঠে এলো ছায়ানটের পঞ্চাশ বছরের পথযাত্রা। ছায়ানটের শিক্ষকদের সম্মিলিত পরিবেশনার মধ্য দিয়ে গতকাল দ্বিতীয় আয়োজন শুরু হয়। এরপর ছায়ানট বিদ্যায়তনের বড়দের দল সম্মেলক কণ্ঠে পরিবেশন করে রবীন্দ্রসংগীত ‘এবার তোর মরা গাঙে’। এতে একক সংগীত পরিবেশন করেন বিক্রম দাশ, সুতপা রায়, শুক্লা পাল সেত, নবনীতা চক্রবর্তী প্রমুখ।

সর্বশেষ খবর