মঙ্গলবার, ২৫ এপ্রিল, ২০১৭ ০০:০০ টা

আসছে নির্বাচনী দেড় লাখ কোটি টাকার এডিপি

মানিক মুনতাসির

আসছে নির্বাচনী দেড় লাখ কোটি টাকার এডিপি

আসছে নির্বাচনমুখী দেড় লাখ কোটি টাকার বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি (এডিপি)। সরকারের পরিকল্পনা ২০১৮ সালের শেষদিকে কিংবা ২০১৯ সালের শুরুতে জাতীয় সংসদের আগামী নির্বাচন অনুষ্ঠানের। সেই হিসাবে নির্বাচনের আগে এটাই হবে বর্তমান সরকারের শেষ পূর্ণাঙ্গ বাজেট। ফলে সরকারের নেওয়া সব ধরনের উন্নয়ন প্রকল্প এগিয়ে নিতে এই বাজেটে বরাদ্দ রাখতে চায় সরকার। বিশেষ করে পদ্মা সেতু, পদ্মা সেতুতে রেলসংযোগ প্রকল্প, রূপপুর পারমাণবিক প্রকল্প, মহাকাশে বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট উেক্ষপণ প্রকল্প, মাতারবাড়ী কয়লাভিত্তিক বিদ্যুকেন্দ্রসহ বৃহৎ প্রকল্পগুলোও দৃশ্যমান অগ্রগতি আনতে চায় সরকার। বিশাল আকারের এই এডিপির ৩৩ হাজার কোটি টাকাই বরাদ্দ থাকবে ফার্স্ট ট্র্যাকভুক্ত ১০টি বৃহৎ প্রকল্পের জন্য। শুধু তাই নয়, পদ্মা সেতু এবং পদ্মা সেতুতে রেলসংযোগ প্রকল্প ২০১৮ সালের মধ্যে সমাপ্ত করার পরিকল্পনা নিয়েই এগুচ্ছে মহাজোট সরকার। ফলে আগামী ২০১৭-১৮ অর্থবছরের বাজেটকে নির্বাচনী উন্নয়ন বাজেট হিসেবে দেখছেন বিশ্লেষকরা।

অর্থবিভাগ সূত্র জানায়, নতুন অর্থবছরের জন্য ৩৮ দশমিক ৫১ শতাংশ আকার বাড়িয়ে উচ্চাভিলাষী নির্বাচনী ও বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি (এডিপি) করা হচ্ছে। যার আকার হচ্ছে ১ লাখ ৫৩ হাজার ৩৩১ কোটি টাকা। যা চলতি ২০১৬-১৭ অর্থবছরের মূল এডিপির চেয়ে ৪২ হাজার ৬৩১ কোটি টাকা বেশি। আর নতুন এডিপিতে অগ্রাধিকার পাচ্ছে পদ্মা সেতু, পরিবহণ ও বিদ্যুৎ খাত। তবে শেষ মুহূর্তে এডিপির এই আকার সামান্য কম-বেশি হতে পারে। উল্লেখ্য, চলতি ২০১৬-১৭ অর্থবছরের বাজেটের মূল এডিপি ধরা হয় ১ লাখ ১০ হাজার ৭০০ কোটি টাকা। আর মোট উন্নয়ন বাজেট ধরা হয় ১ লাখ ১৭ হাজার ২৭ কোটি টাকা। যা গত নয় মাসে বাস্তবায়ন হয়েছে ৪৫ শতাংশ।  বিশাল আকারের নতুন এই এডিপি বাস্তবায়নে সরকারি অর্থায়ন (জিওবি) প্রস্তাব করা হচ্ছে ৯৬ হাজার ৩৩১ কোটি টাকা। বাকি অর্থ প্রকল্প সহায়তা থেকে পাওয়া যাবে বলে আশা করছেন অর্থমন্ত্রী। অবশ্য বাজেট ঘোষণার সময় বিশাল আকারের এডিপি ধরা হলেও বছরের শেষদিকে এসে তা কাটছাঁট করা হয় প্রতি বছরই। অর্থবিভাগ সূত্র জানায়, আসছে এডিপির জন্য নতুন প্রকল্প গ্রহণের চেয়ে চলমান প্রকল্প সমাপ্ত করার ওপর জোর দিতে বলা হয়েছে। এজন্য নতুন প্রকল্প নেওয়ার ক্ষেত্রে সেই প্রকল্পের সম্ভাব্যতা এবং প্রয়োজনীয়তা বার বার যাচাই করার নির্দেশনা দিয়েছেন স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এজন্য নতুন এডিপিতে পুরনো প্রকল্পের প্রয়োজনীয় অর্থের বরাদ্দ ঠিক রেখে নতুন প্রকল্পের জন্য বরাদ্দ বাংলাদেশের সুষম উন্নয়ন ও উচ্চতর প্রবৃদ্ধি অর্জন, আয় বৃদ্ধি, দারিদ্র্য নিরসন ও কর্মসংস্থানের সুযোগ বৃদ্ধির মাধ্যমে অর্থ বরাদ্দ দেবে অর্থবিভাগ। বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন এবং প্রধানমন্ত্রী ও অর্থমন্ত্রীর পরিকল্পনা অনুযায়ী আঞ্চলিক দারিদ্র্য ও আয়বৈষম্য দূরীকরণ, খাদ্যে স্বনির্ভরতা অর্জন ও পুষ্টিমান উন্নয়ন, সামাজিক নিরাপত্তা নিশ্চিতের জন্য টেকসই উন্নয়ন লক্ষমাত্রা (এসডিজি) অর্জনের পথে এগিয়ে যাচ্ছে বর্তমান সরকার। এজন্য অর্থবছরের বাজেটেও নির্দেশনা দেবেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত।

সর্বশেষ খবর