বৃহস্পতিবার, ২৭ এপ্রিল, ২০১৭ ০০:০০ টা

বসুন্ধরায় ফুড অ্যান্ড এগ্রো মেলা

নিজস্ব প্রতিবেদক


বসুন্ধরায় ফুড অ্যান্ড এগ্রো মেলা

বাংলাদেশে খাদ্যপণ্য এবং কৃষিজাত উপকরণের আন্তর্জাতিক প্রদর্শনী শুরু হয়েছে ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন সিটি বসুন্ধরা—আইসিসিবিতে। গতকাল রাজধানীর কুড়িলে আইসিসিবি প্রাঙ্গণে চার দিনব্যাপী মেলা শুরু হয়। প্রচলিত পদ্ধতির বাইরে আধুনিক প্রযুক্তির খাদ্যপণ্য উৎপাদনের এ মেলায় প্রদর্শিত হচ্ছে পরিবেশবান্ধব কারখানা স্থাপনের মেশিনারিজ। দেশের শিল্প খাতে ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদের ভূমিকা তুলে ধরতে এ মেলার আয়োজন করেছে সেমস্ গ্লোবাল। বাংলাদেশের খাদ্যশিল্প খাত সমৃদ্ধ করার লক্ষ্যে আয়োজিত এ প্রদর্শনীতে ক্রেতা, পরিবেশক ও উদ্যোক্তারা কৃষির আনুষঙ্গিক উপকরণ ও নতুন নতুন প্রযুক্তির সঙ্গে পরিচিত হতে পারবেন। উৎপাদক ও ভোক্তার সরাসরি সাক্ষাৎ ও আলাপচারিতায় প্রদর্শনীটি একটি ওয়ান স্টপ প্লাটফরম হিসেবে কাজ করবে; যা বাংলাদেশের খাদ্যশিল্পের বাজার সম্প্রসারণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে সক্ষম। দ্বিতীয় ফুড অ্যান্ড এগ্রো বাংলাদেশ ইন্টারন্যাশনাল এক্সপো ২০১৭, দ্বিতীয় এগ্রোক্যাম বাংলাদেশ এক্সপো ২০১৭ ও দ্বিতীয় ইন্টারন্যাশনাল পোলট্রি অ্যান্ড লাইভস্টোক বাংলাদেশ এক্সপো ২০১৭ শীর্ষক মেলা গতকাল উদ্বোধন করেন খাদ্যমন্ত্রী মো. কামরুল ইসলাম। এ ছাড়া আরও উপস্থিত ছিলেন পরিকল্পনা কমিশনের সদস্য ড. শামসুল আলম, আরডিএ ডিরেক্টর জেনারেল এম এ মতিন, আমেরিকান চেম্বার অব কমার্স ইন বাংলাদেশের ভাইস প্রেসিডেন্ট শওকত আলী সরকার প্রমুখ। মেলায় গিয়ে দেখা গেছে, স্পেন, ইউএসএ, পোল্যান্ড, থাইল্যান্ড, চীন, তুরস্ক, ভারত ও বাংলাদেশের খাদ্যপণ্য, কৃষিজাত উপকরণ উৎপাদন এবং প্রক্রিয়াজাতকরণ শিল্পের খ্যাতনামা প্রায় ১২০টি প্রতিষ্ঠান ১৬০টি স্টলের এই আন্তর্জাতিক প্রদর্শনীতে আংশগ্রহণ করছে। যেখানে থাকছে খাদ্যপণ্য, পানীয়, কৃষিজাত পণ্য, পোলট্রি পণ্য, বিভিন্ন ধরনের কৃষি উপকরণ, পণ্য প্রক্রিয়াজাতকরণ মেশিনারিজ, রাসায়নিক উপকরণসহ বিভিন্ন ধরনের প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি প্রদর্শন এবং বিপণনের বিশাল সমাহার। মেলায় অংশ নেওয়া দেশের অন্যতম ফাস্টফুড উৎপাদন প্রতিষ্ঠান বাবা রাফি স্টলে গিয়ে দেখা গেছে চমত্কার ডিজাইনে বিশাল পরিসরে স্টল সাজানো হয়েছে। স্টল কর্মী সজীবের সঙ্গে কথা বলে জানা গেল, খাদ্যপণ্য উৎপাদনের অন্যতম এই প্রতিষ্ঠানে গ্রাহকদের আগ্রহ অনেক। গতকাল শুরুর দিনেই গ্রাহকদের বসার স্থান দেওয়া যাচ্ছিল না। সবাই আগ্রহ নিয়ে আসছেন।

আরেক প্রতিষ্ঠান কেপিসি ইন্ডাস্ট্রিজ তাদের উৎপাদিত পরিবেশবান্ধব কাগজের কাপ নিয়ে অংশ নিয়েছে। এই প্রতিষ্ঠানটি সম্পূর্ণ দেশি প্রযুক্তি দিয়ে কাগজের ভিন্নধর্মী পণ্য উৎপাদন করছে। চা-কফি, আইসক্রিমসহ বিভিন্ন খাদ্যপণ্যের প্যাকেট উৎপাদন করে। প্রতিষ্ঠানটির কর্ণধার কাজী সাজেদুর রহমান জানালেন, বিশ্বব্যাপী এই পণ্যের চাহিদা বাড়ছে। বাংলাদেশের সরকার গুরুত্ব দিয়ে এই শিল্পকে সুবিধা দিলে রপ্তানি শিল্পের অন্যতম হওয়া সম্ভব। প্রদর্শনী উপলক্ষে সেমস্ গ্লোবাল ও বিসেফ ফাউন্ডেশন বাংলাদেশের খাদ্য নিরাপত্তা বিষয়ে সেমিনার ফুডকন বাংলাদেশ ২০১৭ আয়োজন করছে। ‘টাইম টু অ্যাক্ট : সেইফ ফুড ইন বাংলাদেশ’ শিরোনামে আয়োজিত সেমিনার আইসিসিবির সেমিনার হলে অনুষ্ঠিত হয়। প্রদর্শনীগুলো প্রতিদিন সকাল সাড়ে ১০টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত সবার জন্য উন্মুক্ত থাকবে।

‘হাওরের বন্যায় খাদ্য মজুদে প্রভাব পড়বে না’ : খাদ্যমন্ত্রী অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম বলেছেন, ‘হাওরাঞ্চলে ৬ লাখ মেট্রিক টন ধান নষ্ট হলেও তাতে সরকারের মজুদে কোনো প্রভাব পড়বে না। আমাদের যে পরিমাণ খাদ্য মজুদ আছে তাতে হাওর এলাকার ফসলহানির ক্ষতি পূরণ করা যাবে।’ গতকাল মেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।

তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশে বছরে সাড়ে ৩ কোটি মেট্রিক টন খাদ্য উৎপন্ন হয়। হাওরাঞ্চলে ফসল নষ্ট হয়েছে ৬ লাখ মেট্রিক টন। বছরে খাদ্য চাহিদা রয়েছে ২ কোটি ৯০ লাখ মেট্রিক টনের কাছাকাছি। হাওরাঞ্চলের বন্যাদুর্গতদের জন্য ইতিমধ্যেই ওএমএস চালুসহ সরকার বিভিন্ন ধরনের সহযোগিতা প্রদান করে যাচ্ছে। বর্তমানে সরকারের খাদ্য মজুদও যথেষ্ট সন্তোষজনক। শেখ হাসিনা দেশের ১৬ কোটি মানুষের খাদ্য নিরাপত্তা দিতে সক্ষম হয়েছেন। দেশ আজ খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন করেছে। একসময় দেশে খাদ্য ঘাটতি ছিল। বর্তমানে আমরা তা কাটিয়ে উঠতে সক্ষম হয়েছি।’

সর্বশেষ খবর