রবিবার, ৩০ এপ্রিল, ২০১৭ ০০:০০ টা
দিনাজপুরে বয়লার বিস্ফোরণ

আরও একজনের মৃত্যু আন্দোলন চলবে

নিজস্ব প্রতিবেদক, রংপুর ও দিনাজপুর প্রতিনিধি

দিনাজপুরে যমুনা অটো রাইস মিলে বয়লার বিস্ফোরণে মৃতের সংখ্যা বেড়ে ১৬ জনে দাঁড়িয়েছে। রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি বিভাগের প্রধান মারুফুল ইসলাম জানান, চিকিৎসাধীন অবস্থায় গতকাল সকাল ৭টায় বীরেন্দ্র চন্দ্র (৫০) মারা যান। এ হাসপাতালে এখনো চিকিৎসাধীন তিন শ্রমিকের অবস্থা আশঙ্কাজনক। তাদের নিবিড় পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রে রেখে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। আর সুস্থ হওয়ায় একজনকে ২৩ এপ্রিল রাতে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। অন্যদিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন সুমন মিয়ার (৩৫) অবস্থা এখনো আশঙ্কাজনক বলে জানিয়েছেন দিনাজপুরের এম আবদুর রহিম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক সারওয়ার জাহান। ঢাকা পাঠানোর আগে সুমনকে এ হাসপাতালেই চিকিৎসা দেওয়া হয়। এদিকে বয়লার বিস্ফোরণে নিহত ও আহত শ্রমিকদের ক্ষতিপূরণ, মালিককে গ্রেফতার এবং বিচারসহ ৯ দফা দাবিতে গতকাল সম্মিলিতভাবে সংবাদ সম্মেলন করেছেন দিনাজপুরের বাম সংগঠনগুলোর নেতৃবৃন্দ। দিনাজপুর প্রেস ক্লাব ভবনে সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন জেলা সিপিবির সভাপতি অ্যাডভোকেট মেহেরুল ইসলাম। তিনি অভিযোগ করে বলেন, গত শুক্রবার গোপালগঞ্জ হাটে চাতাল ও চালকল শ্রমিক সংগ্রাম কমিটি বয়লার বিস্ফোরণে নিহত-আহত শ্রমিকদের ক্ষতিপূরণ, মালিককে গ্রেফতার ও বিচার দাবিতে ডাকা সভায় যমুনা অটো রাইস মিলের মালিক সুবল ঘোষের লেলিয়ে দেওয়া ৮-১০ জনের একটি সংঘবদ্ধ সন্ত্রাসী দল হামলা ও ভাঙচুর করে। তিনি বলেন, যতই এসব করা হোক না কেন দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলবে। এ সময় বক্তব্য দেন জেলা জাসদের সভাপতি অ্যাডভোকেট লিয়াকত আলী, জাতীয় শ্রমিক জোটের সাধারণ সম্পাদক সহিদুল ইসলাম শহীদুল্লাহ, বাসদ (মার্কসবাদী) দিনাজপুরের সদস্য এ এস এম মনিরুজ্জামান, বাংলাদেশ যুব ইউনিয়ন কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য খন্দকার আশরাফুজ্জামান, ইউনাইটেড কমিউনিস্ট লীগ দিনাজপুরের সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার আলী সরকার, বাসদ নেতা সারওয়ারুল ইসলাম ক্লিপ্টন, জাসদের দফতর সম্পাদক অ্যাডভোকেট ইন্দ্রজিৎ রায় অনীক, বাসদ (মাহবুব) নেতা হারুন উর রশিদ, বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন দিনাজপুর জেলা সাধারণ সম্পাদক জামিরুল ইসলাম, শ্রমিক সামিউল, জিকরুল হক, জলেশ্বর রায় প্রমুখ। নেতৃবৃন্দ বলেন, গোপালগঞ্জে চালকল শ্রমিকদের মধ্যে মালিকপক্ষ যে ভীতি তৈরি করেছে, তা দূর করে শ্রমিকদের চাকরি, জীবন ও সম্পদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে প্রশাসনকে তৎপর হতে হবে। উল্লেখ্য, দিনাজপুর সদর উপজেলার রানীগঞ্জ মোড়ে যমুনা অটো রাইস মিলে ১৯ এপ্রিল বয়লার বিস্ফোরণে ২১ শ্রমিক দগ্ধ হন। গতকাল সকাল পর্যন্ত রংপুর, ঢাকা ও দিনাজপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ১৬ জনের মৃত্যু হলো।

সর্বশেষ খবর