তিস্তার পানি বণ্টন নিয়ে ভারত-বাংলাদেশের মধ্যে যখন একটি অমীমাংসিত সমস্যা বিদ্ধমান তখন আরেকটি নদীকে ঘিরে তৈরি হয়েছে বিতর্ক। এবার বিতর্কের কেন্দ্রবিন্দু পশ্চিমবঙ্গের নদীয়া জেলার মধ্য দিয়ে প্রবাহিত ‘চুর্ণী’ নদী। বাংলাদেশের কুষ্টিয়া জেলায় পদ্মা নদী থেকে মাথাভাঙা নদীটি উৎপন্ন হয়ে নদীয়া জেলার মাজদিয়াতে এসে দুটি প্রবাহে ভাগ হয়। একটি শাখা ইছামতি নদী নামে দক্ষিণে প্রবাহিত হয়েছে, অন্যটি চুর্ণী নামে দক্ষিণ-পশ্চিমে প্রবাহিত হয়েছে। এই নদীটি পশ্চিমবঙ্গের নদীয়া জেলার মাজদিয়া, শিবনিবাস, হাঁসখালি, বীরনগর, আরংঘাটা, রানাঘাট, চাকদহ দিয়ে প্রায় ৬০ কিলোমিটার প্রবাহিত হয়ে হুগলি নদীতে মিশেছে।
সেই ‘চুর্ণী’ নদীকে এবার দূষিত করার অভিযোগ উঠেছে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে। এই মর্মে নদীয়া জেলার সামাজিক সংস্থা নদীয়া জেলা ১৮ আগস্ট পরিচালন সমিতি (এনডিএপিএস)-এর প্রতিনিধিরা ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে। গত বৃহস্পতিবার চুর্ণী নদীর পানি সংগ্রহ করে তা বোতলজাত করে পাঠানো হয়েছে প্রধানমন্ত্রীর সচিবালয়ে। সামাজিক সংস্থাটির তরফে অভিযোগ করা হয়েছে বাংলাদেশের মধ্যে অবস্থিত কারখানা থেকে অনবরত বর্জ্য পদার্থ নদীর পানিতে মিশে তা ভারতে ঢুকছে। এই কারখানাগুলো থেকে এই বর্জ্য পদার্থ আসা ঠেকাতে বাংলাদেশ যাতে পদক্ষেপ গ্রহণ করে সে ব্যাপারে জরুরি ভিত্তিতে আলোচনার জন্য আর্জি জানানো হয়েছে মোদিকে। সূত্রে খবর, ২০১৪ সালের ১৪ জুলাই ঢাকার ভারতীয় হাইকমিশনের তরফেও চুর্ণী নদীর দূষণের বিষয়টি বাংলাদেশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে জানানো হয়। ‘চুর্ণী’ নদী নিয়ে এমন একটা সময় হৈচৈ শুরু হলো, যখন বাংলাদেশের সঙ্গে তিস্তার পানি বণ্টন নিয়ে ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার ও পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকারের মধ্যে মতপার্থক্য চলছে। চুর্ণী নদীর পাড়ের বাসিন্দাদের অভিযোগ বাংলাদেশের চুয়াডাঙ্গা জেলার সীমান্তবর্তী শহর দর্শনায় অবস্থিত ৮০ বছরের পুরনো কেরু অ্যান্ড কোম্পানির তিনটি ইউনিট আছে। এর মধ্যে একটি চিনি কল, ডিস্টিলারি ও ফার্মাসিউটিক্যাল কারখানা। বছরের পর বছর ধরে এই কারখানা থেকেই বের হওয়া বর্জ্য পদার্থ পড়ছে মহানন্দা নদীতে। পরে সেটাই এসে মিসছে চুর্ণীতে।