বৃহস্পতিবার, ৪ মে, ২০১৭ ০০:০০ টা

জলহস্তী পরিবারে নতুন অতিথি

মোস্তফা কাজল

জলহস্তী পরিবারে নতুন অতিথি

জাতীয় চিড়িয়াখানার কোটি টাকা দামের বাসিন্দা আফ্রিকান জলহস্তী পরিবারে জন্ম নিয়েছে নতুন এক অতিথি। নাম রাখা হয়েছে মায়াপরি। গতকাল দুপুরে জন্ম নেয় তরতাজা একটি বাচ্চা। ঢাকার চিড়িয়াখানার বাসিন্দা ২৫ বছর বয়সী মা জলহস্তির জন্ম হয়েছিল কেনিয়াতে। ১৯৯২ সালের সেপ্টেম্বর মাসে কেনিয়া সরকার বাংলাদেশকে দান করেছিল এ জলহস্তিটি। এই প্রাণির গড় আয়ুষ্কাল ৩২ থেকে ৩৫ বছর। কিন্তু আবদ্ধ অবস্থায় খাঁচায় বা বেষ্টনীতে ২৮ থেকে ৩০ বছর বেঁচে থাকে। চিড়িয়াখানার কিউরেটর ডা. এস.এম নজরুল ইসলাম বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, আবদ্ধ অবস্থায় এ প্রাণী খুব একটা বাচ্চা জন্ম দেয় না। কিন্তু জাতীয় চিড়িয়াখানায় এমন ধরনের প্রাণি বাচ্চা জন্ম দেওয়া অনন্য ঘটনা। গতকাল বিকালে চিড়িয়াখানার জলহস্তির বেষ্টনিতে দেখা গেছে, বাচ্চা নিয়ে খুশিতে আটখানা কেনিয়ার এই দুর্লভ প্রাণিটি। দুপুর ১ টায় বৃহৎ প্রাণিশাখার (তৃণভোজী) এনিম্যাল কেয়ার টেকার সেখানে গিয়ে ঘাস ও দানাদার খাবার খেতে দেন। তখনি নজরে আসে বাচ্চা প্রসবের বিষয়টি। মুহূর্তের মধ্যে এ খবর চারদিকে ছড়িয়ে পড়ে। এরপর বিকালে খাবার পেয়ে হুমড়ি খেয়ে পড়ে বাচ্চাসহ জলহস্তিটি। বর্তমানে চিড়িয়াখানায় ১২টি জলহস্তি রয়েছে। এত বেশি জলহস্তি নিয়ে শংকিত চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষ। শিগগিরি প্রাণি বিনিময় কার্যক্রমের আওতায় বন বিভাগের সঙ্গে জলহস্তির বিনিময়ে সিংহ ও বাঘ আসবে বলে জানা গেছে। খাবার খেয়ে বেষ্টনীর ভিতর ও পুকুরে নেমে জলকেলি শুরু করে। এসব দেখে বেশ আনন্দ পায় চিড়িয়াখানায় আসা অগণিত দর্শক। বাচ্চা জন্ম দেওয়ার পর কমপক্ষে ৩০ দিন মা তার বাচ্চাকে সারাক্ষণ আগলে রাখে। এছাড়া বাচ্চাকে নিয়ে যেন জলহস্তি পরিবারের আনন্দের সীমা নেই। জানতে চাইলে জাতীয় চিড়িয়াখানার কিউরেটর ডা.এস এম নজরুল ইসলাম বাংলাদেশ প্রতিদিনকে  বলেন, এক সময় জলহস্তিটি বেষ্টনীর মধ্যে দৌড়-ঝাঁপ করত। পুকুরে নেমে থাকত। মানুষ দেখলে তেড়ে আসত। এখন সদ্যজাত বাচ্চা পেয়ে সারাক্ষণ ব্যস্ত। চারদিকে তার সতর্ক চাহনি। অপরিচিত কেউকে আসতে দেখলে আগলে রাখে বাচ্চাকে। তিনি আরও জানান, আফ্রিকার নদ ও হ্রদে পাওয়া যায় জলহস্তি। দেড় থেকে আড়াই টন ওজনের দেহ। স্থূল নরম এদের শরীর। লোমবিহীন শরীর এবং পা গুলো শরীরের তুলনায় বেশ ছোট। উচ্চতা দেড় মিটার থেকে চার মিটার পর্যন্ত  হয়। মুখে বড় বড় দুটি দাঁত দেখা যায়। ভালো সাতারু এবং বেশির ভাগ সময় পানিতে কাটায়। খাবারের সময় ডাঙ্গায় উঠে আসে। জলহস্তি তৃণভোজী প্রাণি। সবুজ ঘাস, শাকসবজি এদের প্রধান খাদ্য। আট মাস গর্ভধারণের পর একটি করে বাচ্চার জন্ম দেয়। শিশুরাই জলহস্তির সবচেয়ে বেশি ভক্ত। নতুন অতিথিকে দেখতে ভিড় হয় বেষ্টনীর সামনে। সব মিলিয়ে জলহস্তি মায়ার জন্মের খবরে প্রাণিপ্রেমীদের আগমন আরও বেশি হবে বলে মনে করছেন জাতীয় চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষ।

সর্বশেষ খবর