শিরোনাম
সোমবার, ১৫ মে, ২০১৭ ০০:০০ টা
কেমন বাজেট চাই

চট্টগ্রামে জলাবদ্ধতা রোধে জাতীয় বাজেটে আলাদা বরাদ্দ চাই

রিয়াজ হায়দার, চট্টগ্রাম

চট্টগ্রামে জলাবদ্ধতা রোধে জাতীয় বাজেটে আলাদা বরাদ্দ চাই

মাহবুবুল আলম সভাপতি, চিটাগাং চেম্বার

চিটাগাং চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (সিসিসিআই) সভাপতি মাহবুবুল আলম বলেছেন, জাতীয় বাজেটে চট্টগ্রামের জলাবদ্ধতা রোধে আলাদা বরাদ্দ প্রয়োজন। চট্টগ্রাম বন্দরের অগ্রযাত্রায় আরও উদ্যোগ দরকার। বে-টার্মিনাল ও পতেঙ্গা কন্টেইনার টার্মিনাল নির্মাণসহ সামগ্রিক বন্দরকেন্দ্রিক অবকাঠামো উন্নয়নে সমন্বিত পদক্ষেপ দরকার। জাতীয় বাজেটে তারই আলোকে চট্টগ্রামের জন্য বিশেষ বরাদ্দ দেওয়া গুরুত্বপূর্ণ। সিসিসিআই সভাপতি ২০১৭-২০১৮ অর্থ বছরের জাতীয় রাজস্ব বাজেট প্রণয়নে বিবেচনার লক্ষ্যে মূল্য সংযোজন কর (ভ্যাট) ও শুল্ক কর সম্পর্কিত প্রস্তাব তুলে ধরে চট্টগ্রাম বন্দরের দক্ষতা বৃদ্ধির জন্য নতুন প্রস্তাব দিয়েছেন। আমদানিকারকদের আন্তর্জাতিক ব্যবসায় বাল্ক ভেসেলের বিলম্ব চার্জ মওকুফের অনুমতি চান চিটাগাং চেম্বার সভাপতি। বন্দরে ডেলিভারি যাতে তাড়াতাড়ি নিতে পারা যায়, সে জন্য ইকুইপমেন্টের ব্যবস্থা বাড়াতে হবে— জানিয়ে মাহবুবুল আলম আরও বলেন, পরিপূর্ণ টার্নওভার কর নীতিমালা পোষণ করা প্রয়োজন। দর্শনা, ভোমরা ও নারায়ণগঞ্জ বন্দরকে সম্পূর্ণ কাস্টমস-এ পরিণত করা দরকার, যাতে করে শিল্পের কাঁচামাল সঠিক সময়ে আনা যায় এবং বেনাপোল কাস্টমসের ওপর অতিরিক্ত চাপ ও নির্ভরশীলতা কমানো যায়। মাহবুবুল আলম ইতিমধ্যে বাজেট প্রণয়নে বিবেচনার লক্ষ্যে চিটাগাং চেম্বারের ৮৫ দফা ও মূল্য সংযোজন কর (ভ্যাট) সম্পর্কিত ৮ দফা প্রস্তাবের কথা উল্লেখ করেন। বলেন, মূল্য সংযোজন করের হার ১২% নির্ধারণ করার প্রস্তাব করছি।  সিসিসিআই সভাপতি বলেন, শিপ রিসাইক্লিং শিল্প ও দেশীয় শিল্পকে রক্ষায় ন্যায্য বিবেচনায় শুল্ক আরোপ করা হোক।

দেশীয় কাঁচামাল ভিত্তিক শিল্পকে আমদানিকৃত কাঁচামাল ভিত্তিক একই রকম শিল্পের চেয়ে অধিকতর সুবিধা এবং রহপবহঃরাব প্রদান করা উচিত। এতে করে দেশীয় কাঁচামাল ভিত্তিক শিল্পায়ন তথা রপ্তানি গতিশীলতা লাভ করবে।

ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদের জন্য নতুন আইন প্রয়োগ ও বাস্তবায়ন ও প্যাকেজ ভ্যাটের বিভ্রান্তি দূর করার আহ্বান জানিয়ে মাহবুবুল আলম বলেন, দ্বৈত কর পরিহারের লক্ষ্যে পণ্যের বেইজ প্রাইসের সহিত কাস্টমস ডিউটি যোগ না করে পণ্যমূল্য ভিত্তি নির্ধারণ করলে দেশীয় শিল্প আর্থিক ক্ষতি থেকে রেহাই পাবে। মূল্য সংযোজনের হার ২০%-এর পরিবর্তে ১৫% ধরে এর করের হার ৩% এর পরিবর্তে ২% করা হলে ক্ষুদ্র উদ্যোক্তারা অর্থনীতিতে আরও বেশি অবদান রাখতে পারবে।

তিনি বলেন, ক্যাপিটাল মেশিনারিজের সঙ্গে একই সুবিধায় আমদানিযোগ্য যন্ত্রাংশের পরিমাণ ১০% থেকে বাড়িয়ে ১৫% করার জন্য চেম্বার প্রস্তাব করছে।

মাহবুবুল আলম বলেন, কোন ঋণপত্রের আওতায় পোশাক রপ্তানিতে ব্যর্থ হওয়ার তথ্য ব্যাংক থেকে পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে আমদানিকৃত মালামালের ওপর প্রযোজ্য শুল্ক করাদির নোটিস জারি এবং জবাব সন্তোষজনক না হলে দাবিনামা জারির মাধ্যমে দাবিকৃত টাকা আদায়ের জন্য প্রস্তাব করা হচ্ছে।

থার্ড পার্টি এক্সপোর্ট উৎসাহিত করতে এফওবি মূল্যের ওপর ২০% অথবা সাধারণভাবে প্রাক্কলিত প্রত্যর্পণযোগ্য শুল্কের ৭০% নগদ সহায়তা প্রদান, ১০০% রপ্তানিমুখী শিল্প হিসেবে পোশাক শিল্পের আমদানিকৃত কাঁচামাল বিশেষ করে কাপড় কোনো কারণে অগ্রহণযোগ্য বিবেচিত হলে প্রয়োজনীয় শর্ত ও আনুষ্ঠানিকতা পূরণ সাপেক্ষে এর পুনঃ রপ্তানি প্রক্রিয়া সহজীকরণ ও দ্রুত করা, তৈরি পোশাক খাতের পশ্চাৎ সংযোগ শিল্প হিসেবে পলিব্যাগ ও হ্যাঙ্গার উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানের আমদানিকৃত কাঁচামাল খালাস করতে ১০% ব্যাংক গ্যারান্টি দেওয়া, সম্পূর্ণ তৈরি পণ্যের আমদানিতে ৪% উন্নয়ন সারচার্জ বহাল রাখার কথাও বলেন সিসিসিআই সভাপতি।

মাহবুবুল আলম বলেন, রেফ্রিজারেটর অ্যাসাম্বলিং ইন্ডাস্ট্রির ক্ষেত্রে আমদানিকৃত উপকরণের ওপর শুল্ক যুক্তিসংগতভাবে হ্রাস করে এ শিল্পের অস্তিত্ব রক্ষা এবং ভবিষ্যতে সংযোজন থেকে উৎপাদনকারীতে উন্নীত হতে সহায়তা করা প্রয়োজন।

মাহবুবুল আলম আরও বলেন, রি-ফ্যাক্টরি ইটের মতো রি-ফ্যাক্টরি পণ্যের একই সুবিধা পাওয়া, ৩৮.১৬ হেডিং-এর রি-ফ্যাক্টরি পণ্যের শুল্ক কাঠামো ১% হওয়া, এনার্জি সোর্সিংয়ে সহায়তা করে ইস্পাত শিল্পকে আত্মনির্ভরশীল করা উচিত।

রপ্তানি-কাম-আমদানি প্রক্রিয়া সহজ হলে আমদানিকারকদের সহায়তার জন্য এনবিআর কর্তৃক ‘ওয়ান স্টপ সার্ভিস’ ব্যবস্থা চালু করার প্রস্তাব রাখছি যাতে করে সব ধরনের অনুমতি তিন দিনের ভিতরে পাওয়া যায়।

সর্বশেষ খবর