বুধবার, ৩১ মে, ২০১৭ ০০:০০ টা

সব কালচার সবার জন্য নয়

------- অধ্যাপক ড. নাসরীন ওয়াদুদ

সব কালচার সবার জন্য নয়

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মনোবিজ্ঞান বিভাগের চেয়ারপারসন অধ্যাপক ড. নাসরীন ওয়াদুদ বলেন, মানুষের সামাজিক অবক্ষয় ঠিক কোন জায়গায় পৌঁছেছে তা মুখে বলে বোঝানো যাবে না। অনেক ধরনের অবক্ষয় দেখেছি। কিন্তু তিন মাসের শিশুকে ধর্ষণ করেছে ২৭ বছরের যুবক, এটাকে ঠিক কোন ধরনের অবক্ষয় বলা যায় আমি জানি না। মানুষের মানবিকতা, সামাজিক দায়বদ্ধতায় ভাঙন ধরেছে। এই যুবকদের একটা বিশাল গোষ্ঠী পর্নোগ্রাফিতে আসক্ত। তারা স্বাভাবিক রুচিবোধ হারিয়ে নতুন এক কালচার তৈরির চেষ্টায় নেমেছে। তারা তাদের সঠিক সামাজিক অবস্থান জানে না। তিনি আরও বলেন, মানুষের হাতে এখন অনেক মাধ্যম চলে এসেছে। টিভির রিমোট ঘুরালেই অজস  চ্যানেল। আর মোবাইল হাতে থাকলে তো কথাই নেই। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের যথেচ্ছ ব্যবহার নতুন উদ্বেগ তৈরি করছে। যা যা ইচ্ছা সে তাই করছে। কিন্তু আমি কি চাইলেই সব কিছু পারি? আর ছেলেমেয়েদের এই যথেচ্ছ ব্যবহারকে উসকে দিচ্ছে মোবাইল ফোন কোম্পানিগুলো। রাত ১২টার পর থেকে দেওয়া হয় কম রেটের বিভিন্ন রকমের অফার। তাদের কাছে রাত মানে যেন আলাদা জগৎ। ফেসবুক কয়জনের পোস্ট থেকে শেখার মতো বিষয় থাকে। কয়জন শেখার মতো বিষয় ফেসবুকে লেখে তা খেয়াল করলেই দেখা যায়। সবাই তো সেলফি দেওয়া নিয়েই ব্যস্ত থাকে। আমরা আসলে ফেসবুক ব্যবহারের উপযুক্ত নই। সব দেশের জন্য সব কালচার প্রযোজ্য নয়। যে কারও মনে হলেই কারও পোস্টে একটা নোংরা কমেন্ট বা ছবি দিয়ে দিল। আদৌ এ ধরনের কমেন্ট করা যায় কি না, তা ভেবে দেখে না এই মানসিকতার মানুষগুলো। ৫৭ ধারা প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে ড. নাসরীন ওয়াদুদ বলেন, আমাদের ছন্নছাড়াভাবে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। যে যার ইচ্ছা মতো চলছে। প্রযুক্তি আইনের ৫৭ ধারা শুধু পলিটিক্যালি ব্যাপারগুলোতে চোখে পড়ে। সাধারণের ক্ষেত্রে এ ধারা ধোপে টেকে না। জনগণ কয়জন বিচার চেয়েছে আর কয়জন পেয়েছে তা চিন্তার ব্যাপার। নারীদের সম্মানের জায়গাকে এই নোংরা মানসিকতার মানুষেরা নামিয়ে নিয়েছে। ধর্ষণ, যৌন হয়রানির ফলে মানুষের মানবিক বিপর্যয় কোন পর্যায়ের হয় তা তাদের জানা নেই। সমাজের এই অবক্ষয় হয়েছে নিজের সংস্কৃতির বাইরে গিয়ে অন্য কিছুর চর্চা করতে গিয়ে। আর এর থেকে উদ্ধার পেতে পরিবার, সমাজ এবং রাষ্ট্র সবার সচেতন হতে হবে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর