বুধবার, ৩১ মে, ২০১৭ ০০:০০ টা

ইফতারে আভিজাত্য বেইলি রোডে

নিজস্ব প্রতিবেদক

ইফতারে আভিজাত্য বেইলি রোডে

বছরের ১১ মাস থাকে ফাস্টফুড আইটেম। কিন্তু রমজানের তৃতীয় দিনে দোকানটিতে দেখা গেল অন্যান্য দিনের তুলনায় ভিড় একটু বেশি। ভিতরে ঢুকতেই চোখে পড়ে অন্তত ১০০টি ইফতারি-সামগ্রী। সঙ্গে মূল্য তালিকাও টানানো আছে। খাবারগুলো দেখলেই মুখের রুচি আর চোখের আকর্ষণ বেড়ে যায়। একটা কিছু না কিনলে মনের মধ্যে বসত গড়বে অতৃপ্তির বিষাদ। এ চিত্র রাজধানীর বেইলি রোডের ‘ক্যাপিটাল ইফতার বাজার’-এ। বিকাল ৩টার পর এর আশপাশে ইফতারি কেনাকাটায় অভিজাত শ্রেণির নগরবাসীর ভিড় শুরু হয়। রাজধানীর বেইলি রোডটির বেশ খ্যাতি রয়েছে নাটক ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের জন্য। আবার এটি নাট্যকর্মীদের জন্য নাটকপাড়া বলেও পরিচিত। বছরের ১২ মাসের মধ্যে রমজানে ভিন্ন রূপ পায় এলাকাটি। ইফতারির বাজারে আভিজাত্যের ছোঁয়ায় এখানে রয়েছে বাড়তি আকর্ষণ। রমজান মাসজুড়ে বেইলি রোড পরিণত হয় ইফতারি বাজারে। এই অভিজাত ইফতারি বাজারের পরিধি এখন বেইলি রোড ছাড়িয়ে ছড়িয়ে পড়েছে আশপাশেও। রাজধানীর দূরদূরান্ত থেকে মানুষ ইফতারি-সামগ্রী কিনতে প্রতিদিনই আসেন এখানে। ছোলা-পিয়াজু থেকে শুরু করে মাংস-পরোটা সবই মেলে এখানে। কথা হলে মফিজুর রহমান নামে একজন জানান, দীর্ঘদিন ধরে পরিবার নিয়ে ইস্কাটন ও বেইলি রোড এলাকায় আছেন। এখানকার ইফতারি তার পরিবারের সদস্যদের খুবই প্রিয়। আর এখানকার বেশির ভাগ দোকানে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন পরিবেশে খাবার তৈরি ও বিক্রি হয়। মানও ভালো। পদ অনেক থাকায় ইফতারে বৈচিত্র্যও থাকে। বেইলি রোডের ক্রেতা ও বিক্রেতা উভয়ের মত, গত বছরের তুলনায় ইফতারির দাম কিছুটা বেড়েছে। সাধারণত এখানকার পরোটা, কিমা পরোটা ও টানা পরোটার চাহিদা বেশি। পরোটার সঙ্গে গরু বা মুরগির মাংস কিনছেন ক্রেতারা। আবার গরমের কারণে লাচ্ছি ও ফালুদার বিক্রিও কম নয়।

রোজার মাসে এখানে অস্থায়ী দোকানও গড়ে ওঠে। দোকানিরা জানালেন, দুপুরের পরই বিক্রি শুরু হয়ে যায়, চলে ইফতার শুরুর আগ মুহূর্ত পর্যন্ত। পাশাপাশি বড় বড় ইফতার পার্টির জন্য প্যাকেট ইফতারিও এসব দোকান থেকে সরবরাহ করা হয়। অনেক তরুণ-তরুণী এখানকার ফুটপাথে বসেও ইফতার করে থাকে। এখানকার ইফতারির মধ্যে আছে বিভিন্ন ধরনের চাপ, কাবাব ও মাংসের নানা ধরনের খাবার। মগজ ভুনা, খাসির হালিম, খাসির গ্রিল চাপ, গরুর চাপ, লুচি, কাচ্চি বিরিয়ানি (খাসি), ফিরনি, খাসির লেগ রোস্ট, বোরহানি, চিকেন রোস্ট (আস্ত), চিকেন ফ্রাই, চিকেন সমুচা, চিকেন ললি, জালি কাবাব, শিক কাবাব, ভেজিটেবল রোল, স্প্রিং রোল, কিমার চপ, পিয়াজু, বেগুনি, বেসন চাপ, ছোলা, বাসমতীর জর্দা, চাটনি, পনিরের সমুচা, নিমক পোড়া, বুন্দিয়া, হালিম, দইবড়া, সুতি কাবাব, রেশমি কাবাব ও কিমা পরোটা এখানে খুবই জনপ্রিয়। ফাস্টফুড আইটেমের মধ্যে বার্গার, হটডগ, স্যান্ডউইচ, সমুচা, চিজ বল, চিকেন সাসলিক, পেস্ট্রি, চিকেন ফ্রাই, পিত্জা ও আইসক্রিম। বেইলি রোডের ইফতারির অন্যতম আকর্ষণ হলো পিঠাঘর। এর পাটিসাপটা, তেলের পিঠা, চিতই পিঠা, পান পিঠা, পাক্কান পিঠা, ভেজানো পিঠাসহ ৪০ রকমের পিঠা মেলে। সুইস, স্কাইলার্ক, বারবিকিউ, নবাবি ভোজ, জলি-বি, হ্যালভেশিয়া, হকের মতো দোকানগুলোয়ও ক্রেতার ভিড় থাকে বেশি।

সর্বশেষ খবর