শুক্রবার, ১৬ জুন, ২০১৭ ০০:০০ টা

দেশবন্ধুর মোস্তফা না জাপার মোস্তাক

কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি

দেশবন্ধুর মোস্তফা না জাপার মোস্তাক

আগামী একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ঘিরে কুড়িগ্রামের চারটি নির্বাচনী এলাকায় (সংসদীয় আসন ২৫, ২৬, ২৭ ও ২৮)-এ মনোনয়ন প্রত্যাশীদের দৌড়ঝাঁপ শুরু হয়েছে। তৃণমূলের সমর্থন পেতে তারা এরই মধ্যে নানা তৎপরতা চালাচ্ছেন। ইফতার পার্টির আড়ালে সম্ভাব্য প্রার্থীরা নেতা-কর্মীর পাশাপাশি সাধারণ মানুষের কাছে নিজেদের তুলে ধরছেন। অনেকেই কেন্দ্রের সবুজ সংকেত পেতে সিনিয়র নেতাদের দ্বারস্থ হচ্ছেন। কোনো কোনো নেতা বছরঝুড়ে ঢাকায় থাকলেও রমজান উপলক্ষে মাঠ চষে বেড়াচ্ছেন। কেউ কেউ পোস্টার ও লিফলেটের মাধ্যমে শুভেচ্ছা বার্তাও পাঠাচ্ছেন। কুড়িগ্রামের সবগুলো আসনেই আওয়ামী লীগের সম্ভাব্য একাধিক প্রার্থী তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছেন। বিএনপি ও জাতীয় পার্টিরও দুটিতে একাধিক প্রার্থীর তৎপরতা লক্ষ্য করা গেছে।

কুড়িগ্রাম-১ আসনে আওয়ামী লীগের চারজন প্রার্থী তৎপরতা চালাচ্ছেন। সেখানে জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি ও দেশবন্ধু গ্রুপের চেয়ারম্যান গোলাম মোস্তফা ব্যাপক তৎপরতা চালাচ্ছেন। নানাভাবে স্থানীয় আওয়ামী লীগ ও সাধারণ মানুষের কাছে যাওয়ার চেষ্টা করছেন তিনি। এ ছাড়া ওই আসনে সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান আছলাম হোসেন সওদাগর, নাগেস্বরী উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মোজাম্মেল হক প্রধান ও মুক্তিযোদ্ধা সংসদের কেন্দ্রীয় নেতা ওসমান গনি তৎপরতা চালাচ্ছেন। ওই আসনে বিএনপির একক প্রার্থী হিসেবে সাবেক এমপি ও জেলা সাধারণ সম্পাদক সাইফুর রহমান রানার তৎপরতা রয়েছে। অবশ্য ২০-দলীয় জোটের শরিক দল বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর জেলা আমির আজিজুর রহমান স্বপনও স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারেন বলে জামায়াত-শিবির নেতা-কর্মীদের মধ্যে আলোচনা রয়েছে। জাতীয় পার্টি থেকে জেলার একাংশের আহ্বায়ক ও বতর্মান এমপি মো. মোস্তাফিজুর রহমান মোস্তাক নির্বাচন করবেন বলে কেন্দ্র থেকে সবুজ সংকেত দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া অন্য কোনো প্রার্থীর তেমন কোনো তৎপরতা সেখানে লক্ষ্য করা যায়নি। কুড়িগ্রাম-২ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে বর্তমান জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও সাবেক এমপি মো. জাফর আলী মনোনয়ন দৌড়ে এগিয়ে রয়েছেন। এ ছাড়া ওই আসনে আরও তিনজন নেতা নৌকা মার্কার মনোনয়ন প্রত্যাশা করছেন। এরা হলেন, জেলার সাবেক সভাপতি মেজর জেনারেল (অব.) আমসাআ আমিন, বর্তমান সভাপতি আমিনুল ইসলাম মণ্ডল ও জেলার যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও পিপি আব্রাহাম লিংকন। বিএনপি থেকে জেলার যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সোহেল হোসনাইন কায়কোবাদই নির্বাচন করতে পারেন। তবে জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক সাইফুর রহমান রানা ও সাবেক পৌর মেয়র আবু বকর সিদ্দিকও এ আসনে মনোনয়ন প্রত্যাশী বলে জানা গেছে। জাতীয় পার্টি থেকে বর্তমান বিরোধীদলীয় চিফ হুইপ তাজুল ইসলাম চৌধুরীই নির্বাচন করতে পারেন বলে নেতা-কর্মীদের মুখে আলোচনা রয়েছে। অন্যদিকে বাংলাদেশ বিমানের সাবেক পরিচালক মেজর (অব.) আবদুস সালামও জাতীয় পার্টির টিকিটের প্রত্যাশা করছেন বলে জানা গেছে। এ ছাড়া স্বতন্ত্রভাবে উপজেলার সাবেক চেয়ারম্যান পনির উদ্দিন আহমেদও তৎপরতা চালাচ্ছেন। কুড়িগ্রাম-৩ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে উলিপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মতি শিউলী ছাড়াও আরও চারজন প্রার্থী মনোনয়ন প্রত্যাশা করছেন। তারা হলেন, চিলমারী উপজেলা চেয়ারম্যান শওকত আলী সরকার বীরবিক্রম, বঙ্গবন্ধু পরিষদ উলিপুর শাখার সভাপতি অধ্যাপক এম এ মতিন, আওয়ামী লীগ নেতা সাজেদুল ইসলাম তালুকদার ও আওয়ামী লীগ নেতা ফুয়াদ হোসেন মুরাদ। বিএনপির একক প্রার্থী হিসেবে জেলা সভাপতি তাসভিরুল ইসলাম মনোনয়ন দৌড়ে এগিয়ে রয়েছেন। জাতীয় পার্টি থেকে বর্তমান এমপি মাঈদুল ইসলামের পাশাপাশি জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় সহ সাংগঠনিক সম্পাদক আবু তাহের মো. খাইরুল হক (এটি) ও সাবেক এমপি গোলাম হাবিব দুলাল মনোনয়ন প্রত্যাশা করছেন। কুড়িগ্রাম-৪ আসনে আওয়ামী লীগ থেকে রৌমারী উপজেলা সভাপতি মজিবুর রহমান বঙ্গবাসী ছাড়াও আরও চারজনের নাম শোনা যাচ্ছে। তারা হলেন, সাবেক এমপি মো. জাকির হোসেন, রাজিবপুর উপজেলা চেয়ারম্যান মো. শফিউল আলম, স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা অধ্যাপক মজিবুর রহমান ও গণজাগরণ মঞ্চের মুখপাত্র ডা. ইমরান এইচ সরকার। বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশী হিসেবে রৌমারী উপজেলা সভাপতি আজিজুল ইসলাম ও রাজিবপুর উপজেলা বিএনপির সভাপতি অধ্যাপক মোখলেসুর রহমানের নাম দলের ভিতরে-বাইরে আলোচনা রয়েছে। ওই আসনে জেপির বর্তমান এমপি রুহুল আমিনও দলীয় টিকিটে আগামী নির্বাচন করতে পারেন বলে জানা গেছে। স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মতিউর রহমানের নাম শোনা যাচ্ছে।

 

 ♦ আগামীকাল : গাইবান্ধার প্রার্থীদের তৎপরতা

সর্বশেষ খবর