বৃহস্পতিবার, ২২ জুন, ২০১৭ ০০:০০ টা

রাঙামাটিতে যান চলাচল শুরু, কাটেনি শঙ্কা

রাঙামাটি প্রতিনিধি

চট্টগ্রাম-রাঙামাটি সড়কে অবশেষে যান চলাচল শুরু হয়েছে। তবে জনমনে শঙ্কা কাটেনি। এখনো বৃষ্টি হচ্ছে। ফলে একদিকে আবার পাহাড়ধসের আতঙ্ক, অন্যদিকে বাড়ছে কাপ্তাই হ্রদের পানিও। রাঙামাটির নিম্নাঞ্চল এরই মধ্যে পাহাড়ি ঢলে প্লাবিত হয়েছে। পানিবন্দী হয়ে পড়েছে কয়েক হাজার পরিবার।

এদিকে পাহাড় ধসে ঘর হারা মানুষ এখনো খুঁজে পায়নি স্থায়ী ঠিকানা। আশ্রয় কেন্দ্রে দিনরাত কাটছে তাদের। কতদিন সেখানে থাকতে হবে—সেই প্রশ্নেরও উত্তর মিলছে না। পাহাড়ধসের ৮ দিন পর গতকাল রাঙামাটি-চট্টগ্রাম সড়ক যোগাযোগ চালু হয়েছে। সেনাবাহিনী  রাতদিন কাজ করে সাপছড়ি শালবন এলাকায় ৩০ কিলোমিটার সড়ক সংস্কার করেছে। আপাতত হালকা ও মাঝারি যান চলাচল করতে পারবে। কয়েকদিন ধরে পাহাড়ে বন্দী হয়ে পড়া মানুষ সড়ক চালু হওয়ায় উচ্ছ্বাসে ফেটে পড়েন। এ ব্যাপারে ১৯ ইসিবির অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মোহাম্মদ মাসফিকুল আলম ভূঞা বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, ‘তুমুল বর্ষণে পাহাড়ধসে অনেকগুলো জায়গা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল। এর মধ্যে চট্টগ্রাম-রাঙামাটি সড়কে ৩৫টি জায়গায় মারাত্মক ক্ষতি হয়। সবচেয়ে ভয়াবহ ছিল সাপছড়ি শালবাগান এলাকা। সড়কের ১৫০ ফুটের মতো নিচে ধসে পড়ে। সেখানে সড়কের কোনো চিহ্নই ছিল না। আমরা এখানে ১৮ জুন কাজ শুরু করি। টানা তিন দিন কাজ করে সড়ক যান চলাচলের উপযোগী করেছি।’

দুপুর ২টার দিকে রাঙামাটির সাপছড়ি-চট্টগ্রাম সড়কে যান চলাচল উদ্বোধন করেন সেনাবাহিনীর চট্টগ্রাম এরিয়া কমান্ডার ২৪ পদাতিক ডিভিশনের জিওসি মেজর জেনারেল মো. জাহাঙ্গীর কবির তালুকদার। এ সময় সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগ সচিব এম এ এন সিদ্দিক, চট্টগ্রাম বিভাগের জিওসি মেজর জেনারেল জাহাঙ্গীর কবির তালুকদার, সড়ক ও জনপথ বিভাগের প্রধান প্রকৌশলী ইবনে আল হাসান, চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনার মো. রুহুল আমিন, অতিরিক্ত প্রকৌশলী আলতাফ হোসেন খান, রাঙামাটি রিজিয়নের ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. গোলাম ফারুক, জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মানজারুল মান্নান, পুলিশ সুপার সাঈদ তারিকুল হাসান, রাঙামাটি জোন কমান্ডার মো. রেদওয়ান, রাঙামাটি রিজিয়নের জেনারেল স্টাফ অফিসার (জিটু) সৈয়দ তানবিল সালেহ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

মেজর জেনারেল মো. জাহাঙ্গীর কবির তালুকদার বলেন, ‘রাঙামাটি-চট্টগ্রাম সড়কে যান চলাচল খুলে দিয়ে আমরা অসাধ্য সাধন করেছি। তিন দিন আগের আর এখনকার চিত্র সম্পূর্ণ ভিন্ন। সেনাবাহিনী এ সড়ক সংস্কারে রাত দিন এক করে কাজ করেছে। আপাতত ছোট গাড়িগুলো চলবে।’ সচিব এম এ এন সিদ্দিক বলেন, ‘সেনাবাহিনী এবং সড়ক ও জনপদ বিভাগ সমন্বয় করে কাজ করছে। রাঙামাটির বিধ্বস্ত সব সড়ক অচিরেই ঠিক হবে।’

জেলা কন্ট্রোল রুমের সর্বশেষ তথ্যানুযায়ী, রাঙামাটিতে পাহাড়ধসে ১১৮ জন নিহত ও দুজন নিখোঁজ রয়েছেন।

সর্বশেষ খবর