বৃহস্পতিবার, ২৯ জুন, ২০১৭ ০০:০০ টা

ঢাকা-পায়রা রেলপথের সম্ভাব্যতা যাচাই চলছে

নিজামুল হক বিপুল

ঢাকা-পায়রা রেলপথের সম্ভাব্যতা যাচাই চলছে

রাজধানী ঢাকা থেকে পায়রা বন্দর পর্যন্ত রেলপথ নির্মাণ প্রকল্পের সেকেন্ডারি তথ্য সংগ্রহের কাজ চলছে। ব্রিটিশ কোম্পানি ডিপি রেল দ্রুততার সঙ্গে এ তথ্য সংগ্রহের কাজ করছে। আগামী বছরের মাঝামাঝি নাগাদ এ প্রকল্প একটি কাঠামোতে দাঁড়াতে পারে। আর চলতি বর্ষা মৌসুম শেষ হলেই প্রকল্পের ফিজিবিলিটি স্টাডির কাজ শুরু হবে বলে বাংলাদেশ রেলওয়ে সূত্রে জানা গেছে।

সরকার ঢাকা থেকে পায়রা বন্দর পর্যন্ত ২৪০ কিলোমিটার দীর্ঘ রেলপথ নির্মাণের জন্য যুক্তরাজ্যের ডিপি রেলের সঙ্গে একটি সমঝোতা চুক্তি করেছিল গত বছর ২০ ডিসেম্বর। ওই চুক্তি অনুযায়ী ডিপি রেল নকশা প্রণয়ন, অর্থায়ন, লাইন নির্মাণ ও পরিচালনার দায়িত্ব পালন করবে। এ কাজে সহযোগিতা করবে চায়না রেলওয়ে কনস্ট্রাকশন করপোরেশন।

রেলওয়ে সূত্রে জানা গেছে, চুক্তি স্বাক্ষরের পর থেকেই ডিপি রেল মাঠপর্যায়ে কাজ শুরু করেছে। গত কয়েক মাসে প্রতিষ্ঠানটি বৃহৎ এই প্রকল্প বাস্তবায়নের লক্ষ্যে সেকেন্ডারি ডাটা বা তথ্য সংগ্রহের কাজ করে যাচ্ছে। তারা ইতিমধ্যে বাংলাদেশ রেলওয়ে, পানি উন্নয়ন বোর্ড, ভূমি জরিপ অধিদফতর, সড়ক ও জনপথ বিভাগ, বন্দর কর্তৃপক্ষ, নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়সহ বিভিন্ন মন্ত্রণালয়, দফতর, অধিদফতরসহ নানা প্রতিষ্ঠান থেকে তথ্য সংগ্রহের কাজ করছে। রেলওয়ের পক্ষ থেকেও তাদের বিভিন্ন তথ্য দিয়ে সহযোগিতা করা হচ্ছে। ইতিমধ্যে পায়রা বন্দরের ফিজিবিলিটি স্টাডির প্রতিবেদনও সংগ্রহ করেছে ডিপি রেল কর্তৃপক্ষ।

রেলওয়ে সূত্র জানায়, প্রাথমিক তথ্য সংগ্রহের কাজ শেষ হলেই ডিপি রেল কর্তৃপক্ষ ফিজিবিলিটি স্টাডির কাজ শুরু করবে। এ ক্ষেত্রে চলতি বর্ষা মৌসুম শেষ হলেই এ কাজ করবে প্রতিষ্ঠানটি। ২০১৮ সালের মাঝামাঝি সময়ের মধ্যে ফিজিবিলিটি স্টাডির কাজ শেষ হবে জানিয়ে বাংলাদেশ রেলওয়ের মহাপরিচালক আমজাদ হোসেন বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, তখন প্রকল্পটির একটি প্রাথমিক স্ট্রাকচার দাঁড়াবে। তিনি জানান, প্রকল্পের ফিজিবিলিটি স্টাডিসহ অন্যান্য কাজ করার জন্য ডিপি রেলকে দেড় বছর সময় দেওয়া হয়েছে। তিনি বলেন, ‘২০২৩ সালে পায়রা বন্দর অপারেশনে যাবে। আমরা আশা করছি এই সময়ের মধ্যেই ঢাকা-পায়রা রেলপথ নির্মাণের কাজও শেষ হবে।’

রেল সূত্র জানায়, সব ধরনের তথ্য সংগ্রহ এবং ফিজিবিলিটি স্টাডির কাজ শেষ হওয়ার পর ডিপি রেল যদি মনে করে প্রকল্পটি ভায়োবল হবে তাহলে পরবর্তী কার্যক্রম অর্থাৎ নকশা প্রণয়নসহ অন্যান্য কাজ শুরু হবে। প্রকল্পটি ফরেন ডাইরেক্ট ইনভেস্টমেন্টের আওতায় বাস্তবায়ন করা হবে। এই প্রকল্প বাস্তবায়নে প্রায় সাত বিলিয়ন মার্কিন ডলার ব্যয় হবে। রেলওয়ে সূত্রে জানা গেছে, এই প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য সব ধরনের চেষ্টা করা হচ্ছে। কারণ প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে প্রথমবারের মতো দেশের দক্ষিণাঞ্চলের জেলা বরিশাল রেল যোগাযোগের আওতায় আসবে। আর এ প্রকল্পের কাজ শেষ হলে এই রেলপথের মাধ্যমে বছরে প্রায় ২০ লাখ ইউনিট কনটেইনার পরিবহন সম্ভব হবে। একই সঙ্গে যোগাযোগের ক্ষেত্রেও নতুন এক দিগন্তের সূচনা হবে। পায়রা গভীর সমুদ্রবন্দরের সঙ্গে রেল সংযোগ হলে দেশের রাজস্ব খাতেও এটি বড় অবদান রাখবে।

এদিকে ডিপি রেলওয়ের সঙ্গে চুক্তি অনুযায়ী ডিপি রেল ইউকে নকশা প্রণয়ন, অর্থায়ন, লাইন নির্মাণ ও অপারেশনের দায়িত্ব পালন করবে। প্রকল্পটি প্রথম ৬০ বছর তাদের নিয়ন্ত্রণে থাকবে। ৬০ বছর পর এটি তারা বাংলাদেশ রেলওয়েকে বুঝিয়ে দেবে।

সর্বশেষ খবর