ঋণের ২০০ টাকা ফেরত না দেওয়ায় হত্যা করা হয় বন্ধু লিটনকে। লিটন সিলেট জেলার বিশ্বনাথ থানার ধরারাই গ্রামের রজব আলীর ছেলে। আর হত্যার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে গ্রেফতার হওয়া মো. ইসমাইল আদালতে দেওয়া জবানবন্দিতে এমন তথ্য জানিয়েছেন। একই সঙ্গে এ খুনের দায়ও স্বীকার করেছেন। রবিবার ইসমাইলের ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি নেয় চট্টগ্রামের অতিরিক্ত মুখ্য মহানগর হাকিম মোহাম্মদ সাহাদাত হোসেন ভুইয়ার আদালত। এরপর অভিযুক্ত ইসমাইলকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেওয়া হয়। ইসমাইল সুনামগঞ্জ জেলার বিশ্বম্ভরপুর থানার কাপনার ইসলাম উদ্দিনের ছেলে। তারা চট্টগ্রামের পতেঙ্গায় বাসা ভাড়া নিয়ে থাকতেন।

আদালত সূত্র জানায়, জবানবন্দিতে ইসমাইল উল্লেখ করেন গাঁজা সেবনের সূত্র ধরে লিটনের সঙ্গে তার পরিচয়। কয়েকদিন আগে গাঁজা সেবনের জন্য ইসমাইলের কাছ থেকে ২০০ টাকা ঋণ নেন লিটন। পাওনা টাকা ফেরত চাইলে মা-বাবার নাম ধরে গালিগালাজ করতেন লিটন। এ কারণে লিটনকে হত্যার পরিকল্পনা করে ইসমাইল। এরই অংশ হিসেবে হত্যার চার দিন আগে ৮০ টাকায় কাটগড় বাজার থেকে একটি ছুরি কেনেন ইসমাইল। ঘটনার দিন ২১ জুন রাত সাড়ে ৮টার দিকে লিটনকে নিয়ে ঢাকাইয়া ওরফে ঢাকুনির বাসার ছাদে নিয়ে যায়। এরপর দুজন মিলে নেশা করেন। লিটন বেশি নেশাগ্রস্ত হওয়ার সুযোগে তার গলায় ছুরি চালায় ইসমাইল। এরপর বস্তায় ভরে লাশটি কংক্রিটের নিচে লুকিয়ে রাখেন। পতেঙ্গা থানার এসআই মো. মনিরুল ইসলাম বলেন, হত্যায় ব্যবহৃত ছুরিটি একটি পুকুরে ফেলে দেন ইসমাইল। লিটনের মোবাইলটিও একজনের কাছে ২ হাজার ২০০ টাকায় বিক্রি করে দেওয়া হয়। ইসমাইলের স্বীকারোক্তি অনুযায়ী ছুরি ও লিটনের মোবাইলটিও উদ্ধার করা হয়েছে। জবানবন্দি দেওয়ার পর ইসমাইলকে কারাগারে পাঠিয়েছে আদালত। পুলিশ জানায়, ২১ জুন ইফতারের পর বাসা থেকে বের হয়ে নিখোঁঁজ হন মো. লিটন (৩৫)। ২৬ জুন দুপুরে পতেঙ্গা থানাধীন মাইজপাড়ায় ঢাকাইয়া ওরফে ঢাকুনির ২য় তলা ভবনের ছাদে কংক্রিটের নিচে লুকানো অবস্থায় লিটনের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। এ ঘটনায় লিটনের স্ত্রী লাকী বেগম মামলা করলে পুলিশ তদন্তে নামে। এরই ধারাবাহিকতায় ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে ২৭ জুন ইসমাইলকে পতেঙ্গা থানাধীন কয়লারহাট বাজার থেকে গ্রেফতার করা হয়। ঘটনায় জড়িত মো. ইসমাইল সুনামগঞ্জ জেলার বিশ্বম্ভরপুর থানার কাপনা এলাকার ইসলাম উদ্দিনের ছেলে। নিহত মো. লিটন (৩৫) সিলেট জেলার বিশ্বনাথ থানার ধরারাই গ্রামের রজব আলীর ছেলে। পতেঙ্গা এলাকায় তারা বাসা ভাড়া নিয়ে থাকতেন।