বুধবার, ৫ জুলাই, ২০১৭ ০০:০০ টা

ছাত্রলীগের শিখর না বিএনপির মুরাদ

রাশেদ খান, মাগুরা

ছাত্রলীগের শিখর না বিএনপির মুরাদ

জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দেড় বছর বাকি থাকলেও মাগুরায় বইছে নির্বাচনী হাওয়া। এ এলাকায় (সংসদীয় আসন ৯১ ও ৯২) প্রধান দুই দল আওয়ামী লীগ ও বিএনপির সম্ভাব্য প্রার্থীরা ব্যানার, ফেস্টুন ও পোস্টারের মাধ্যমে সাধারণ মানুষকে ঈদশুভেচ্ছা জানিয়েছেন। পাশাপাশি দলীয় ও ব্যক্তিগত মতবিনিময়, কর্মিসভা, উঠান বৈঠক, পথসভাসহ নানা অনুষ্ঠানের আয়োজন করছেন। এ ছাড়া তারা বিভিন্ন ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানে সাহায্য-সহযোগিতা করছেন।

এখনই প্রতিটি দলের মধ্যে নির্বাচনী আমেজ শুরু হয়ে গেছে। তবে সবচেয়ে বেশি আলোচনা চলছে মাগুরা-১ আসন ঘিরে। এ আসনে আওয়ামী লীগের সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে আছেন সাবেক ছাত্রনেতা ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সহকারী একান্ত সচিব (এপিএস) সাইফুজ্জামান শিখর। আর বিএনপির সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে আলোচনায় রয়েছেন জিয়া পরিষদের প্রতিষ্ঠাতা কবির মুরাদ। মাগুরা জেলা আওয়ামী লীগে প্রকাশ্য কোনো গ্রুপিং-লবিং নেই। তবে নেতৃত্বের প্রতিযোগিতা আছে। ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে অধিকাংশ চেয়ারম্যান আওয়ামী লীগ থেকে নির্বাচিত হয়েছেন। মাগুরায় বিএনপি তৃণমূল পর্যন্ত দুটি গ্রুপে বিভক্ত। এক গ্রুপের নেতৃত্ব দিচ্ছেন সাবেক মন্ত্রী বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা নিতাই রায় চৌধুরী ও অন্যটিতে জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি ও সাবেক সংসদ সদস্য কাজী সালিমুল হক কামাল। তবে গ্রুপিং থাকলেও দলের কর্মী-সমর্থক অনেক। এবার রমজানে বিএনপির সবকটি ইফতার মাহফিলে দলীয় নেতা-কর্মীর উপচে পড়া ভিড় লক্ষ্য করা গেছে। সংসদের বিরোধী দল জাতীয় পার্টির তেমন কোনো কর্মকাণ্ড চোখে পড়ে না। ঘরোয়াভাবেই তাদের দলীয় কার্যক্রম পরিচালিত হয়। মাগুরা সদর ও শ্রীপুর নিয়ে মাগুরা-১ আসন। এ আসনে আওয়ামী লীগ দলীয় সংসদ সদস্য ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এ টি এম আবদুল ওয়াহ্হাব (অব.)। জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি ডা. প্রফেসর এম এস আকবরের মৃত্যুর পর উপনির্বাচনে তিনি সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। আগামীতেও মনোনয়ন চাইবেন বলে জানা গেছে। তবে এ আসনে সবচেয়ে বেশি আলোচিত কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাবেক ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার এপিএস সাইফুজ্জামান শিখর। নেতা-কর্মীর বড় অংশই চান তিনি আগামী নির্বাচনে এ আসনে দলীয় প্রতীক পান। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে দায়িত্ব পালন করলেও তিনি এলাকার মানুষের সুখে-দুঃখে পাশে থাকার চেষ্টা করেন। আগামী নির্বাচনে তিনি মনোনয়ন পেলে সব নেতা-কর্মীকে একত্র করে আসনটি ধরে রাখতে পারবেন বলেও স্থানীয় নেতা-কর্মীরা আশা করছেন। এ আসনে বিএনপি থেকে মনোনয়ন পেতে অনেকেই দৌড়াচ্ছেন। এর মধ্যে রয়েছেন ২০০৮ সালের নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতাকারী সাবেক পৌর মেয়র ইকবাল আখতার খান কাফুর, জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি ও জিয়া পরিষদের প্রতিষ্ঠাতা কবির মুরাদ, জেলা বিএনপির সাবেক সহসভাপতি বর্তমান প্রবাসী মনোয়ার হোসেন খান ও শ্রীপুর উপজেলা চেয়ারম্যান বদরুল আলম হিরো। জাতীয় পার্টি যদি এককভাবে নির্বাচনে যায়, সে ক্ষেত্রে জেলা জাতীয় পার্টির সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক রাষ্ট্রপতি হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের উপদেষ্টা হাসান সিরাজ সুজা একমাত্র প্রার্থী। মোহাম্মদপুর-শালিখা নিয়ে মাগুরা-২ আসন। এ আসনে বর্তমান সংসদ সদস্য যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী বীরেন শিকদার। আগামী নির্বাচনেও তিনিই মনোনয়ন পাবেন বলে নেতা-কর্মীরা মনে করেন। তবে মোহাম্মদপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবদুল মান্নান মনোনয়ন চাইবেন বলে জানিয়েছেন। এ আসনে বিএনপির দুই হেভিওয়েট প্রার্থী আছেন। একজন দলের ভাইস চেয়ারম্যান নিতাই রায় চৌধুরী। আরেকজন সাবেক সংসদ সদস্য কাজী সালিমুল হক কামাল। দুজনই এ আসন থেকে মনোনয়নপ্রত্যাশী। পাশাপাশি জাতীয় পার্টি থেকে একক প্রার্থী হিসেবে এখন পর্যন্ত মোহাম্মদপুর উপজেলা সাধারণ সম্পাদক এম খসরুজ্জামানের নাম শোনা যাচ্ছে।

সর্বশেষ খবর