বুধবার, ৫ জুলাই, ২০১৭ ০০:০০ টা
যাত্রীকল্যাণ সমিতির তথ্য

ঈদযাত্রায় ১৩ দিনে নিহত ৩১১ জন

নিজস্ব প্রতিবেদক

এবার ঈদুল ফিতরের আগে-পরে ১৩ দিনে সড়ক-মহাসড়কে সারা দেশে ২০৫টি দুর্ঘটনা সংঘটিত হয়েছে। এতে ২৭৪ জন নিহত ও ৮৪৮ জন আহত হয়েছেন। নৌপথে এক দুর্ঘটনায় তিনজন নিহত ও ১৪ জন আহত হয়েছেন। একই সময়ে বিভিন্ন স্থানে রেলে কাটা পড়ে ৩৪ জন নিহত হয়েছেন। সড়ক, রেল ও নৌপথে সারা দেশে মোট ২৪০টি দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছেন ৩১১ জন। গতকাল রাজধানীর সেগুনবাগিচায় বাংলাদেশ ক্রাইম রিপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন মিলনায়তনে আয়োজিত ‘ঈদযাত্রায় দুর্ঘটনা প্রতিবেদন-২০১৭’ শীর্ষক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য তুলে ধরে বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতি। সংগঠনটির সড়ক দুর্ঘটনা মনিটরিং সেল এই প্রতিবেদন তৈরি করে। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত প্রতিবেদন তুলে ধরেন সংগঠনের মহাসচিব মো. মোজাম্মেল হক চৌধুরী। প্রতিবেদনে বলা হয়, ঈদযাত্রা খানিকটা স্বস্তিদায়ক হলেও সড়ক দুর্ঘটনা বেড়েছে, বেড়েছে প্রাণহানি ও ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণও। ঈদযাত্রা শুরুর দিন ১৯ জুন থেকে ঈদ শেষে বাড়ি থেকে কর্মস্থলে ফেরা ১ জুলাই পর্যন্ত ১৩ দিনে ২০৫টি সড়ক দুর্ঘটনায় ২৭৪ জন নিহত ও ৮৪৮ জন আহত হয়েছেন। একই সময়ে নৌপথে একটি দুর্ঘটনায় তিনজন নিহত ও ১৪ জন আহত হয়েছেন। রেল পথে ট্রেনে কাটা পড়ে পূর্বাঞ্চলে ২৫ জন ও পশ্চিমাঞ্চলে ৯ জনসহ মোট ৩৪ জন নিহত হন। দুর্ঘটনায় পতিত এসব যানবাহনের ৩৮ ভাগ বাস, ৩৪ ভাগ ট্রাক ও পিকআপ, ২৪ ভাগ নছিমন-করিমন, ভটভটি-ইজিবাইক, অটোরিকশা ও মোটরসাইকেল, ৪ ভাগ অন্যান্য যানবাহন। পথচারীদের অসতর্কতায় ৩৬ শতাংশ, মুখোমুখি সংঘর্ষে ৩৮ শতাংশ, ওভারটেকিং করতে গিয়ে ১৩ শতাংশসহ অন্যান্য কারণে ১৩ শতাংশ দুর্ঘটনা সংগঠিত হয়েছে। অতিরিক্ত গতিতে যানবাহন চালানো, অদক্ষ চালক দ্বারা যানবাহন চালানো, ফিটনেসবিহীন যানবাহন ও পণ্যবাহী যানবাহনে যাত্রীবহন, মহাসড়কে অটোরিকশা-ব্যাটারি চালিত রিকশা- নসিমন-করিমন চলাচল, ফুটপাথ দখল, কিছু স্থানে ফুটপাথ না থাকা, বিপজ্জনক ওভারটেকিং, বিরতিহীনভাবে যানবাহন চালানো ছাড়াও ভাঙাচোরা রাস্তাঘাট এসব দুর্ঘটনার জন্য দায়ী।  দুর্ঘটনা কমাতে কয়েকটি সুপারিশও করেছে যাত্রী কল্যাণ সমিতি। সুপারিশে বলা হয়, সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ে সড়ক দুর্ঘটনা গবেষণা ইউনিট গঠন, যানবাহনের গতি নিয়ন্ত্রণে যথাযথ উদ্যোগ, যানবাহন ফিটনেস পদ্ধতি ডিজিটাল করা, রোড সেফটি অডিট করা, অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের নৈরাজ্য বন্ধ, প্রশিক্ষিত চালক গড়ে তোলা, ধীরগতি ও দ্রুত গতির যানের জন্য আলাদা লেনের ব্যবস্থা, মহাসড়কে নছিমন-করিমন, ব্যাটারি চালিত রিকশা, অটোরিকশা বন্ধে সরকারের গৃহীত সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন, ভাঙাচোরা রাস্তাঘাট মেরামত করা। মহাসড়কে ফিটনেসবিহীন লক্কড়-ঝক্কড় ঝুঁকিপূর্ণ যানবাহন চলাচল বন্ধে উদ্যোগ নেওয়া হলে দুর্ঘটনা কমে আসবে। এ সময় নিরাপদ সড়ক চাই’র যুগ্ম মহাসচিব লায়ন গণি মিয়া বাবুল, বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সহ-সম্পাদক ব্যারিস্টার মো. শফিকুল ইসলাম, বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো. হানিফ খোকন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

সর্বশেষ খবর