বুধবার, ৫ জুলাই, ২০১৭ ০০:০০ টা
কৃষি সংবাদ

শৈলকুপায় নাজের আলীর কৃষিবিপ্লব

শেখ রুহুল আমিন, ঝিনাইদহ

শৈলকুপায় নাজের আলীর কৃষিবিপ্লব

কৃষিতে বিপ্লব ঘটিয়েছেন ঝিনাইদহ শৈলকুপার আদর্শ কৃষক ও সাবেক পৌর কমিশনার নাজের আলী। তিনি সমাজ ও জাতির জন্য যে অবদান রেখেছেন- তা খেটে খাওয়া মানুষের অনুকরণীয় দৃষ্টান্ত বলে ওয়াকেবহাল অনেকে মনে করছেন। তার চাষ পদ্ধতি দেখতে এখন নানা এলাকার মানুষ প্রতিনিয়ত ভিড় করছেন।  জানা গেছে, ২০০৫ সালে মাঠপাড়া গ্রামের সাবেক পৌর কমিশনার নাজের আলী একটি গাভী ও বাছুর কিনে কৃষিতে যাত্রা শুরু করেন। তারপর সেই একটি গাভী থেকে এখন তিনি ২২টি গাভীর মালিক হয়েছেন। এর মধ্যে রয়েছে ১৩টি ষাঁড়। এই ষাঁড়গুলো কোরবানির ঈদে বিক্রি করবেন তিনি। প্রতিটি গরুর দাম ১ লাখ টাকার উপরে হবে। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গরুর কাঁচা ঘাসের চাহিদা মেটাতে নাজের আলী চাষ করেছেন নেপিয়ার জাতের ঘাস। উন্নত প্রযুক্তি ব্যবহার করে মেশিনের সাহায্যে ঘাস কাটেন। তার খামারে কাজের জন্য ১২ জন শ্রমিক নিয়োগ রয়েছে। ৪টি গাভী থেকে প্রতিদিন প্রায় ৪০ লিটার দুধ পাচ্ছেন। যার বাজার মূল্য ১ হাজার ৬০০ টাকা। এছাড়া তিনি গাভীর মল দিয়ে বাড়িতে বায়োগ্যাস প্লান্ট তৈরি করেছেন। এই প্লান্ট থেকে বিদ্যুতের চাহিদার পাশাপাশি রান্নার কাজসহ পুকুরে মাছের খাদ্য চাহিদা মেটাচ্ছেন। শুধু গাভী পালন নয়, বাড়ির পাশে দুই একর জমিতে পুকুর কাটা হয়েছে।

তিনি ওই পুকুরে বাণিজ্যিকভিত্তিতে মাছ চাষ করছেন। পুকুরের চার পাশে ৫ বিঘা জমিতে রুপালি, ন্যাংড়া, হিমসাগর, কাঁঠালসহ বিভিন্ন বনজ ও ফলজ গাছের চাষ করছেন। এসব থেকে তিনি বছরে মোটা অংকের টাকা রোজগার করছেন। এছাড়া তিনি তার ৬ বিঘা জমিতে উন্নত প্রযুক্তি ব্যবহার করে ধান, পাটসহ বিভিন্ন মৌসুমি ফসল চাষ করছেন। জমির ধান থেকে চাল বাছাই করে বাণিজ্যিক ভিত্তিতে বাসা-বাড়িতে সরবরাহ করছেন। এভাবে তিনি কয়েক বছরের মধ্যে এলাকায় আদর্শ চাষি হিসেবে সবার নজর কেড়েছেন। এই আদর্শ কৃষক নাজের আলী বলেন, পিতার আশা ছিল আমাকে দিয়ে জনসেবা করানো। এরই ধারাবাহিকতায় শৈলকুপায় পরপর তিনবার ইউপি চেয়ারম্যান ও দুইবার পৌর কমিশনার নির্বাচিত হয়েছি। কিন্তু এতেও আমি সন্তুষ্ট হতে পারছিলাম না। আশা ছিল কীভাবে মানুষের সেবা ও কর্মসংস্থান সৃষ্টি করা যায়। এরপরই একটি গাভী ক্রয়ের মধ্যদিয়ে কৃষিতে যাত্রা শুরু করি। তিনি জানান, এই রকম খামার করে সহজেই স্বাবলম্বী হওয়া সম্ভব। শৈলকুপা উপজেলার প্রাণিসম্পদ অফিসার ডা. মো. গোলাম মোস্তফা বলেন, আমরা নিয়মিত সাবেক কমিশনার নাজের আলীর খামারের গরু ও ষাঁড়ের খোঁজখবর নিচ্ছি। তার গরু পালন পদ্ধতি যুব সমাজকে উদ্বুদ্ধ করবে। আমরা আশা করছি যুবকরা ঘরে বসে না থেকে তার খামার পরিদর্শন করে নিজেরাই সহজে গরু পালন করে স্বাবলম্বী হওয়ার চেষ্টা করুক।

সর্বশেষ খবর