বৃহস্পতিবার, ৬ জুলাই, ২০১৭ ০০:০০ টা

শোয়ার ঘরে ২৭ গোখরা সাপ

নিজস্ব প্রতিবেদক, রাজশাহী

শোয়ার ঘরে ২৭ গোখরা সাপ

ছোট্ট একটা চাকরি করেন মাজদার। সারা দিন কাজ শেষে সন্ধ্যায় ফেরেন বাড়িতে। খাওয়া-দাওয়া শেষে স্ত্রী ঘুমিয়ে পড়েন এক ঘরে। আরেক ঘরের বিছানাতেই বসে টিভি দেখছিলেন মাজদার আর তার সাত বছর বয়সী ছেলে সিয়াম। কিন্তু হঠাৎই চোখ আটকে গেল তার। দেখেন, ঘরের মধ্যে সাপ। খানিকটা ভয় পেয়েও গিয়েছিলেন। বুদ্ধি হারানোর অবস্থা মাজদারের। তবে ভাগ্যিস ঘরের কোনে রাখা ছিল একটা লাঠি। লাঠি ও টর্চলাইট হাতে নিয়ে মারতে গেলে সাপটি লুকিয়ে যায় ঘরের আলমারির পেছনে। অনেক কষ্টে সেটিকে মারলেন। কিছুক্ষণ পর দেখা গেল আরও তিনটি সাপ। সেগুলোকেও মারলেন। কিন্তু একি! একে একে বেরিয়ে আসতে থাকল আরও সাপ! ঘরের মাটি ও দেয়াল খুঁড়ে শুরু হলো সাপ নিধনের দুঃসাহসিক অভিযান। এতে যোগ দিলেন গ্রামবাসীও। তাদের হাতে একে একে মারা পড়ল ২৭টি বিষাক্ত গোখরা সাপ। রাজশাহী মহানগরীর বুধপাড়ায় মঙ্গলবার রাতে এ ঘটনা ঘটে। ঘটনা জানাজানি হলে সকাল থেকে আশপাশের লোকজন ভিড় জমাচ্ছেন সাপগুলো দেখতে।

বাড়ির মালিক মাজদার আলী জানান, রাত ১১টার দিকে তিনি ঘরে বসে টিভি দেখছিলেন। এ সময় ঘরের মধ্যে একটি সাপ দেখতে পান। কিন্তু মারতে গেলে সেটি আলমারির আড়ালে লুকিয়ে যায়। পরে আলমারি সরিয়ে দেখতে পান আরও তিনটি সাপ। এরপরই মাজদার তার ভাইদের ডাকাডাকি শুরু করেন। এরপর তিনটি সাপ মারা হয়। পরে ওই ঘরের গর্ত খুঁড়ে মোট ২৭টি সাপ মারেন। তিনি জানান, বাড়িটি মাটির তৈরি এবং অনেক পুরনো। তাই হয়তো সাপ বাসা বেঁধেছে। গরমের কারণে সাপগুলো বেরিয়ে আসতে পারে। বাড়িতে আরও সাপ আছে বলে তার ধারণা।

এখন আতঙ্কে রয়েছে তার পরিবার। মাজদার আলী জানান, সাপের দখলে চলে গেছে পৈতৃক বাড়িটি। এ কারণে বাড়ির সবাই আতঙ্কিত। তাই তার বউ ও বাচ্চা এখন আর বাড়িতে থাকতে চাইছে না। ভয়ে ওই ঘরেও কেউ ঢুকছেন না। কারণ যে সাপগুলো মারা পড়েছে, সবই বাচ্চা। দৈর্ঘ্য আড়াই ফুট। মাজদারের ধারণা, বাড়িতে এখনো আরও সাপ আছে। বিশেষ করে সাপের বাচ্চাগুলোর বাপ-মা তো আছেই। তাই সাপুড়িয়ার খোঁজ করছেন তিনি। সাইদুর রহমান নামে এক ব্যক্তি জানালেন, মাজদারের ঘরে অসংখ্য ইঁদুরের গর্ত রয়েছে। আর সেই গর্তগুলোতে বাসা বেঁধেছিল সাপ। রাত ১১টা থেকে ভোর ৪টা পর্যন্ত ঘরের মধ্যে বিভিন্ন গর্ত শাবল দিয়ে খুঁড়ে সাপগুলো মারা হয়েছে।

এই রকম আরও টপিক

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর