দিনাজপুরের বিরলে বিষ্ণুপুর ঢিপি (বুড়ির থান) প্রত্নস্থানে আদিকালের নির্মিত সপ্তরথ হিন্দু মন্দির খুঁজে পেয়েছেন প্রত্নতত্ত্ব নিদর্শন খননকারী জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের একটি দল। মন্দিরটির আনুমানিক বয়স প্রায় এক হাজার বছর বলে তারা ধারণা করছেন। জানা গেছে, স্থানীয় জনসাধারণ মাটির ঢিপি সংলগ্ন ওই স্থানে বুড়িমাতা ঠাকুরাণী মন্দির নির্মাণ করে নিয়মিত পূজা অর্চনা পরিচালনা করে আসছিলেন। এ ব্যাপারে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের অধ্যাপক ড. স্বাধীন সেন জানান, পূর্ব পশ্চিমে ৮০ মিটার ও উত্তর-দক্ষিণে ৫০ মিটার প্রশস্ত এলাকায় খননের কাজ চলছে। ঢিবিটি পশ্চিম ও দক্ষিণ পশ্চিমে লিচু বাগানের মধ্যে বিস্তৃত। আবিষ্কৃত মন্দিরটি ঢিবির আকারের তুলনায় বেশ ছোট। এটি দুটি অংশে বিভক্ত। পশ্চিম দিকের অংশটি অভিক্ষেপ বিশিষ্ট শক্ত কাঠামোর (৬.২৫ মিটার দৈর্ঘ্য ও ৬.২৫ মিটার প্রস্থ), মাঝখানে গর্ভগৃহ (২ মিটার দৈর্ঘ্য ও ২ মিটার প্রস্থ)। পূর্বদিকে সংযুক্ত রয়েছে ৮ মিটার বর্গাকার একটি কক্ষ। এই কক্ষটিতে ছিল মন্দিরের মণ্ডপ। তিনি জানান, এ অবস্থায় প্রথমে তিন মাস খনন কাজের সময় নির্ধারণ করা হলেও এখন আরও তিন থেকে চার মাস সময় প্রয়োজন হতে পারে পুরো খনন কাজ শেষ করতে। তবে বরেন্দ্র অঞ্চলের ইতিহাসে এ প্রত্নতত্ত্বটির ভূমিকা কী— খনন কাজ শেষ হলে বলা যেতে পারে। পুরো মন্দিরটির আকার ও বৈশিষ্ট্য বুঝতে আরও সময় লাগবে বলে জানান ড. স্বাধীন সেন। তিনি জানান, এই মন্দিরটি আগেকার আরেকটি স্থাপনার ধ্বংসাবশেষের ওপরে নির্মিত। ওই স্থাপনার অংশবিশেষ উন্মোচিত হওয়ায় তার প্রকৃতি ও পরিবর্তন এখনো স্পষ্টভাবে বোঝা সম্ভব নয়। ওই স্থাপনাগুলোর স্বরূপ উন্মোচন করতে সময় প্রয়োজন। উল্লেখ্য, গত ২ মে থেকে বিরলে বিষ্ণুপুর ঢিপি (বুড়ির থান) প্রত্নস্থানে প্রত্নতাত্ত্বিক খনন কাজ আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হয়। এখানে জাবির ১৪ জন শিক্ষার্থী, মহাস্থানগড় থেকে আসা ১৫ জন বিশেষজ্ঞ শ্রমিক ও কাহারোল থেকে আসা ২৫ জন শ্রমিক খননে অংশ নিচ্ছেন। সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের প্রত্নতত্ত্ব অধিদফতরের অনুমোদনক্রমে ঢাকা জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের দল এ খনন কাজ করছেন।