শিরোনাম
রবিবার, ৯ জুলাই, ২০১৭ ০০:০০ টা

সাতক্ষীরায় জামায়াতই ফ্যাক্টর

সাতক্ষীরা প্রতিনিধি

সাতক্ষীরায় জামায়াতই ফ্যাক্টর

আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে ঘিরে প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছে সাতক্ষীরার সম্ভাব্য প্রার্থীরা। জামায়াতে ইসলামী বাদে আওয়ামী লীগ, বিএনপি, জাতীয় পার্টি, জাসদ, ওয়ার্কার্স পার্টিসহ অন্য দলগুলো প্রকাশ্যেই তৎপরতা চালাচ্ছে। তবে এ জেলায় জামায়াতের শক্তিশালী রাজনৈতিক অবস্থান আছে। মিত্র দল বিএনপির সঙ্গে আসন ভাগাভাগি না হলে স্বতন্ত্র নির্বাচন করতে পারেন জামায়াত নেতারা। সাতক্ষীরার চারটি আসনের জয়-পরাজয়েই জামায়াতের প্রভাব থাকবে।

২০০১ সালের নির্বাচনে জেলার তিনটি আসনে জামায়াত প্রার্থীরা বিজয়ী হন। অবশ্য ২০০৮ সালের ২৯ ডিসেম্বরের নির্বাচনে জামায়াত কোনো আসনে জিততে পারেনি। ৫ জানুয়ারির নির্বাচনবিরোধী আন্দোলনে জামায়াত সাতক্ষীরার চারটি আসনে ব্যাপক তাণ্ডব চালায়। আওয়ামী লীগ ও বিএনপির নেতা-কর্মী সাংগঠনিক কর্মকাণ্ড চালানোর পাশাপাশি দলীয় কোন্দল মেটাতে ব্যস্ত। চারটি আসনে (সংসদীয় ১০৫, ১০৬, ১০৭ ও ১০৮) এ এখনই ব্যানার, পোস্টার, প্যানাসহ নানা ধরনের শুভেচ্ছাবার্তা সংবলিত প্রচারণা লক্ষ্য করা গেছে।

সাতক্ষীরা-১ আসনে (তালা ও কলারোয়া) : লড়াই হবে সেয়ানে সেয়ানে। সেখানে ওয়ার্কার্স পার্টির বর্তমান এমপি মোস্তফা লুত্ফুল্লাহ আবারও ১৪ দলীয় জোট থেকে মনোনয়ন চাইবেন। মহাজোট হলে এই আসনে মনোনয়ন পেতে পারেন জাতীয় পার্টি থেকে সাবেক তথ্য প্রতিমন্ত্রী সৈয়দ দিদার বখ্ত। এখানে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে মাঠে কাজ করছেন জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি ও সাবেক এমপি প্রকৌশলী শেখ মুজিবুর রহমান, জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ফিরোজ আহমেদ, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক ফিরোজ কামাল শুভ্র, কৃষিবিষয়ক সম্পাদক ও বঙ্গবন্ধু সৈনিক লীগের কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি সরদার মুজিব, তালা উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ নুরুল ইসলাম, কলারোয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ফিরোজ আহমেদ স্বপনও মনোনয়ন প্রত্যাশা করছেন।

এ আসনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির প্রকাশনা সম্পাদক হাবিবুল ইসলাম হাবিব নির্বাচন করবেন। এ আসনে জামায়াতের কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য অধ্যাপক ইজ্জত উল্লাহ নির্বাচন করতে পারেন। এ ছাড়া তালা উপজেলা জাতীয় পার্টির সভাপতি ও সাবেক চেয়ারম্যান এস এম নজরুল ইসলাম, জাসদের কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি শেখ ওবায়েদুস সুলতান বাবলুও দলীয় সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন। 

(সাতক্ষীরা-২ সদর) একটি পৌরসভা ও ১৪টি ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত এ আসন থেকে আওয়ামী লীগের সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে আলোচনায় রয়েছেন মীর মোস্তাক আহমেদ রবি, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জেলা পরিষদের নবনির্বাচিত চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক শেখ সাইদউদ্দিন, সাংগঠনিক সম্পাদক ও সদর উপজেলা চেয়ারম্যান আসাদুজ্জামান বাবু, সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এস এম শওকত হোসেন, সাবেক সচিব সাফি আহমেদ ও ভোরের পাতা পত্রিকার সম্পাদক এরতেজা হাসান জজ। এ ছাড়া বিএনপি থেকে মনোনয়ন চাইবেন জেলা সভাপতি রহমত উল্লাহ পলাশ, বিএনপির সাধারণ সম্পাদক শেখ তারিকুল হাসান, জেলা বিএনপির সহ-সভাপতি এম এ জলিল, কামরুল ইসলাম ফারুক। এ ছাড়া জাতীয় পার্টি থেকে মনোনয়নের জন্য চেষ্টা করছেন কেন্দ্রীয় নেতা সাবেক এমপি আবদুল জব্বার ও জেলা জাপার সভাপতি শেখ আজহার হোসেন। বাম দল ন্যাপের জেলা সম্পাদক কাজী সাঈদও নির্বাচন করার আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। এ আসনে নির্বাচন করতে পারেন জেলা জামায়াতের আমির মাওলানা আবদুল খালেক।  

(সাতক্ষীরা-৩ আসন) : দেবহাটা ও আশাশুনি উপজেলা এবং কালীগঞ্জ উপজেলার একাংশ নিয়ে গঠিত এ আসন আওয়ামী লীগের সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে আলোচনায় রয়েছেন সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী অধ্যাপক আ ফ ম রুহুল হক এমপি। তবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক অধ্যাপক ইউসুফ আবদুল্লাহও নৌকা প্রতীকে নির্বাচনের জন্য তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছেন। এ ছাড়া জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সাবেক জেলা পরিষদ প্রশাসক সাবেক এমপি মুনসুর আহমেদ, আশাশুনি উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও উপজেলা চেয়ারম্যান এবিএম মোস্তাকিম নির্বাচন করতে আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। বিএনপি থেকে মাঠে রয়েছেন দলের নির্বাহী কমিটির সদস্য ডা. শহিদুল আলম। এ ছাড়া জাতীয় পার্টির হয়ে কাজ করছেন দলের কেন্দ্রীয় নেতা সাবেক এমপি স ম সালাউদ্দিন। এ আসনে জামায়াত নেতা হাফেজ রবিউল আলম নির্বাচন করতে পারেন।

(সাতক্ষীরা-৪ আসন) :  সুন্দরবন ঘেঁষা শ্যামনগর উপজেলা ও কালীগঞ্জ উপজেলার একাংশ নিয়ে গঠিত এ আসন থেকে শ্যামনগর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান এস এম জগলুল হায়দার দলীয় মনোনয়ন প্রত্যাশী। এ ছাড়াও সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান জেলা আওয়ামী লীগের শিক্ষাবিষয়ক সম্পাদক শফিউল আজম লেলিন ও শ্যামনগর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আতাউল হক দোলনও তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছেন। বিএনপি থেকে সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনী মাঠে রয়েছেন সাবেক পিপি অ্যাডভোকেট ইফতেখার আলী ও উপজেলা বিএনপির সভাপতি আবদুল ওয়াহেদ মাস্টার।

এ ছাড়া জাতীয় পার্টির মনোনয়ন পাওয়ার প্রত্যাশা করছেন, দলটির কেন্দ্রীয় নেতা ছাত্তার মড়ল ও বহিষ্কৃত নেতা এইচ এম গোলাম রেজা। জামায়াত থেকে প্রার্থী হতে পারেন গাজী নজরুল ইসলাম।

 

আগামীকাল : বরগুনার সম্ভাব্য প্রার্থীদের তৎপরতা

সর্বশেষ খবর